শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টিকাদানে প্রস্তুত দেশ

যথাযথ উদ্যোগ নিন
নতুনধারা
  ২৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

টিকাদানে প্রস্তুত বাংলাদেশ- এমন খবর পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে উঠে এসেছে। তথ্য মতে, জাতীয়ভাবে কোভিড-১৯ টিকা বিতরণ শুরুর আগে রাজধানীর ৫টি হাসপাতালে বাছাইকৃত কিছু মানুষের শরীরে প্রাথমিকভাবে টিকা প্রয়োগ করা হবে। এছাড়া দেশব্যাপী টিকা বিতরণের পরিকল্পনা নিয়ে তৈরি করা খসড়া অনুযায়ী টিকা সংরক্ষণ ও প্রয়োগে ইতিমধ্যে প্রায় ৮০ ভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি প্রাথমিক আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফেব্রম্নয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয়ভাবে করোনা টিকাদান শুরু হবে বলে জানা যাচ্ছে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, করোনাভাইরাস শক্তিধর দেশগুলোকেও বিপর্যস্ত করে তুলেছে। দেশেও করোনার সংক্রমণ ও করোনায় মৃতু্য থেমে নেই। এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের টিকার বিষয়টি আশার সঞ্চার করেছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টিকা প্রদানও শুরু হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশেও টিকা চলে এসেছে। আর এখন যখন টিকাদান প্রক্রিয়া দেশ প্রস্তুত- এমন খবর জানা যাচ্ছে, তখন আমরা বলতে চাই, টিকাদান কর্মসূচি যেন যথাযথভাবে সফল হয় সেই লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখতে হবে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে এই বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের সামগ্রিক তৎপরতা জারি রাখতে হবে। বিশেষ করে টিকা নিয়ে জনমনে যেন কোনো প্রকার ভীতি কাজ না করে, সেটিকে সামনে রেখে উদ্যোগী হতে হবে। উলেস্নখ্য, ভারতে টিকা দেওয়ার কর্মসূচি শুরু হওয়ার টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় অনেকের অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর এসেছে। এছাড়া যেসব দেশে টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে সেসব দেশ থেকেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কিছু খবর উঠে এসেছে। ফলে টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বাংলাদেশেও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে- এমন বিষয় যখন আলোচনায় আসছে, তখন আমরা মনে করি, টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসহ টিকাসংক্রান্ত যে কোনো ভীতি জনমনে সৃষ্টি হলে তা দূর করতেও উদ্যোগী হওয়া জরুরি।

যদিও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভারতের দেওয়া অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন বিশ্বের সবচেয়ে সহনশীল ও কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এই ভ্যাকসিন ভারত ও ইউকেতে পরীক্ষা শেষেই দেশে এসেছে। এছাড়া অন্যান্য ভ্যাকসিনের তুলনায় আমাদের দেশের আবহাওয়ায় এ ভ্যাকসিন সবচেয়ে বেশি মানানসই বলে জানা যায়। তবে যে কোনো ভ্যাকসিন প্রয়োগে সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতেই পারে। এছাড়া বর্তমানে সরকার দেশব্যাপী ৯ ধরনের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করছে। সেখানেও ছোটখাটো কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে তবে, ভ্যাকসিন প্রয়োগে কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তার জন্য স্বাস্থ্য খাতের টিম প্রস্তুতি আছে বলেও জানা গেছে। বিশেষ করে ভ্যাকসিন পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে টেলিমেডিসিন সেবার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ে করোনার মতো জীবনঘাতী ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা না নেওয়ার কোনো কারণ নেই- এমন বিষয় যখন আলোচনায় এসেছে, তখন আমরা মনে করি টিকাসংক্রান্ত সার্বিক বিষয়গুলো প্রচার-প্রচারণাসহ যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের মধ্যদিয়ে জনমনে ভয়-ভীতি থাকলে তা দূর করতে হবে।

উলেস্নখ্য, টিকা প্রদানের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ভারত সরকারের উপহার হিসেবে গত বুধবার আসা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ৪ হাজার ডোজ টিকা ছাড়াও বেক্সিমকো ফার্মার মাধ্যমে কয়েক ধাপে ৩ কোটি ডোজ টিকা আসবে। এসব টিকা ছয়টি ধাপে জেলাপর্যায়ে পৌঁছে দেবে বেক্সিমকো। এছাড়া জেলা থেকে উপজেলা পর্যায়ে টিকা যাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায়। প্রসঙ্গত বলা দরকার, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী বলেছেন, কিট দিয়ে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর আগ্রহী ব্যক্তিদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। ভ্যাকসিন প্রয়োগে সরকার কাউকে বল প্রয়োগ করবে না বলেও জানা গেছে।

সর্বোপরি বলতে চাই, করোনার টিকা নিয়ে নানা রকম গবেষণা চলে আসছিল, বিজ্ঞানীরা টিকা উদ্ভাবনের চেষ্টা করছিল অনেকদিন ধরে। এরপর বিভিন্ন দেশই টিকা তৈরির দাবি করে এবং করোনার ক্ষেত্রে কার্যকর কতটা সে বিষয়ে তথ্য আসে গণমাধ্যমে। এটা ঠিক, করোনা প্রতিরোধে টিকার বিষয়টি যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি টিকা প্রয়োগের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি। টিকা প্রদান এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ করোনা প্রতিরোধে সর্বাত্মক পদক্ষেপ জারি থাকুক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে