শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত

স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে
নতুনধারা
  ২৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

করোনার কারণে প্রায় এক বছর ধরে দেশে শিক্ষা সঙ্কট চলছে। গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটির ঘোষণা আছে। সরকার গত ২৯ মার্চ থেকে মাধ্যমিকের এবং ৭ এপ্রিল থেকে প্রাথমিকের রেকর্ড করা ক্লাস সংসদ টেলিভিশনে প্রচার করছে। কিন্তু প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা মনে করেন, মন্দের ভালো হিসেবে এ পদ্ধতি চালু হলেও এটি কার্যকর ফল দিচ্ছে, তা বলা যাবে না। এ পদ্ধতিতে কেবল ক্লাস অনুসরণ করা যায়, শিক্ষার্থীরা সরাসরি অংশ নিতে পারে না। এ কারণে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই আস্তে আস্তে এ প্রক্রিয়া থেকে সরে গেছে।

করোনার কারণে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে আগামী ৪ ফেব্রম্নয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। একই সঙ্গে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। এ গাইডলাইন অনুসারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিকল্পনা করা হয়েছে প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, যদি ফেব্রম্নয়ারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হয়, তাহলে প্রাথমিকভাবে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির নিয়মিত ক্লাস হবে। অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে এক দিন করে ক্লাসে আসবে। তারা পুরো সপ্তাহের পড়া নিয়ে যাবে। পরের সপ্তাহে আবার এক দিন আসবে। রোববার জাতীয় সংসদে আইন প্রণয়নের আলোচনায় সাংসদদের বক্তব্যের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এ তথ্য জানান। এ ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।

এক সমীক্ষায় প্রকাশ, দেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষা কর্মকর্তারা স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী দ্রম্নত ক্লাসে ফিরতে চায়। অর্থাৎ তারা স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে। আর ৭৬ শতাংশ অভিভাবক ও ৭৩ শতাংশ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাও স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে। তবে ৫৮ শতাংশ শিক্ষক ও ৫২ শতাংশ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সতর্কতার সঙ্গে স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে বলেছেন।

আর কতদিন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে। পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সক্ষমতা বিবেচনা করে বিদ্যালয় খুলতে হবে। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, যাতে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে না পড়ে।

শিশুদের মৃতু্যর মুখে ঠেলে দেওয়া যায় না বলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হলেও শিশুরা আজ আর ঘরে নেই। যেসব মা-বাবার কর্মস্থলে থাকতে হয়, তাদের ছেলেমেয়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। তারা তো আর ঘরে থাকছে না, খেলার মাঠে ঠিকই জটলা করছে, থাকছে না মুখে মাস্ক। প্রথম প্রথম মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেশি পরিলক্ষিত হলেও দিনদিন সবার মধ্যে উদাসীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এখন তো অনেকের ঘরে হ্যান্ড-স্যানিটাইজার বা করোনানাশক কিছুই নেই, নেই অতি জরুরি মাস্কও।

আশার কথা, আমাদের দেশে করোনার প্রকোপ অনেকটা কম। সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে আমাদের দেশে করোনা মহামারি আকার ধারণ করতে পারেনি। মাদরাসা খুলে দেওয়ার পর যেহেতু শিক্ষার্থীরা এখনো নিরাপদে আছে, স্কুল-কলেজও খুলে দেওয়া হোক। বন্ধ করে নয়, সার্বিক সচেতনতাই পারে দেশ থেকে করোনাকে বিতাড়িত করতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে