লিঙ্গবৈষম্য প্রতিরোধ

অগ্রগতির ধারা অব্যাহত থাকুক

প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
লিঙ্গবৈষম্য প্রতিরোধ করতে না পারলে তা একটি দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি অজের্নর জন্য প্রতিবন্ধক। আর যখন এমনটি জানা যাচ্ছে যে, লিঙ্গবৈষম্য প্রতিরোধে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছেÑ তখন তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক বলেই প্রতীয়মান হয়। প্রসঙ্গত, লিঙ্গবৈষম্য দূর করায় কোন দেশ কতটা এগিয়ে আর কারা কত পিছিয়ে, তা প্রতি বছরই জানিয়ে আসছে ওয়াল্ডর্ ইকোনমিক ফোরাম। আর সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, সংস্থাটির সবের্শষ ইনডেক্সে এশিয়ার সেরা ১০টি দেশের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে একেবারে ওপরের দিকে রয়েছে বাংলাদেশ। তথ্য মতে, গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি উন্নতি করে বিশ্বের সব দেশের মধ্যে এবার ৪৭তম স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। আর এক বছরে লিঙ্গবৈষম্য শতকরা ৭২ ভাগ কমিয়ে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। আমরা মনে করি, এই বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক। সঙ্গত কারণেই অগ্রগতির এই ধারা অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্টরা সবার্ত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখবে এমনটি কাম্য। লক্ষণীয় যে, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ফিলিপাইনই বিশ্বের সব দেশের তালিকায় সেরা দশে স্থান পেয়েছে। স্বাভাবিকভাবে এশিয়ার সেরা দশের সবোর্চ্চ স্থানটিও তাদের। সাবির্কভাবে বাংলাদেশ যেখানে শতকরা ৭২ ভাগ লিঙ্গবৈষম্য দূর করেছে, সেখানে ফিলিপাইন করেছে শতকরা ৭৯ ভাগ। শিক্ষাক্ষেত্রে নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ব্যবধান শূন্যে নামিয়ে এনেছে তারা। আমরা মনে করি, লিঙ্গবৈষম্য প্রতিরোধের চিত্রকে সামনে রেখে আরও বেশি কাযর্কর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে বাংলাদেশকে। এমনটিও সামনে এসেছে যে, বাংলাদেশের কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত উন্নতি না হলেও আইনসভায়, চাকরিক্ষেত্রের উচ্চপদ এবং ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূণর্ দায়িত্বে এই এক বছরে বাংলাদেশ চোখে পড়ার মতো উন্নতি সাধন করেছে বলে মনে করে ওয়াল্ডর্ ইকোনমিক ফোরাম। আমরা বলতে চাই, যেসব ক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত উন্নতি হয়নি সেগুলোর প্রতি বিশেষ নজর দেয়া জরুরি। আমরা মনে করি, লিঙ্গবৈষম্য প্রতিরোধের ক্ষেত্রে অগ্রগতির বিষয়টি আমলে নিতে হবে একইসঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার, এই ধারাকে আরও গতিশীল করতে কাযর্কর উদ্যোগ জারি রাখা। এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়, বাংলাদেশে লিঙ্গবৈষম্য কমছে, যার ফলে দেশও এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের গুরুত্বপূণর্ খাতসহ প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও বিরোধী দলীয় নেত্রীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রেই শীষর্ পদে নারীরা যেমন অধিষ্ঠিত, তেমনিভাবে উৎপাদন থেকে শুরু করে নানারকম টেকনিক্যাল বিষয়েও লিঙ্গবৈষম্য কমছে, যা অত্যন্ত ইতিবাচক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে। সংশ্লিষ্টদের মনে রাখা দরকার, ওয়াল্ডর্ ইকোনমিক ফোরাম বিভিন্ন দেশের অথর্নীতি, শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা ও রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধা পরিস্থিতির ওপর বিবেচনা করে তালিকা করে থাকে। ফলে এই বিষয়গুলোর প্রতি মনোযোগী হওয়া দরকার একইসঙ্গে কোনো ক্ষেত্রে সংকট থাকলে তা নিরসনে সবার্ত্মক প্রচেষ্টাও অব্যাহত রাখাসহ কাযর্কর পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে লিঙ্গবৈষম্য আরও কমিয়ে আনা সম্ভব বলেই মনে করি। ভুলে যাওয়া যাবে না যে, যত বেশি লিঙ্গবৈষম্য প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে, ততই তা দেশকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিতে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, নানা ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আর এর জন্য লিঙ্গসমতা কমে আসার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূণর্। আমরা মনে করি, অথৈর্নতিক সুযোগ-সুবিধাসহ সাবির্কভাবে যখন লিঙ্গবৈষম্যের ৭২ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে, তখন এটি আমলে নিয়ে আরও কমিয়ে আনতে করণীয় নিধার্রণ এবং তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের সবার্ত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। মনে রাখা দরকার, দেশের সাবির্ক পরিস্থিতিকে অগ্রগতিকে ধারায় এগিয়ে নিতে হলে লিঙ্গবৈষম্য দূর করার কোনো বিকল্প নেই। ফলে অথর্নীতি, শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা ও রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধাসহ সামগ্রিক বিষয়গুলোকে যথাযথ পযের্বক্ষণ করতে হবে এবং পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কাযর্কর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। লিঙ্গবৈষম্য প্রতিরোধে বাংলাদেশের অগ্রগতির বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্টরা এ ধারাকে আরও বেশি গতিশীল করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করবেনÑ এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।