দেশের করোনা পরিস্থিতি

কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে

প্রকাশ | ০৫ মার্চ ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে পুরো বিশ্বই বিপর্যস্ত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ১১ কোটি ছাড়িয়ে গেছে, অন্যদিকে মৃতু্য হয়েছে ২৫ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষের। এমন ভয়ানক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও সংক্রমণে মৃতু্য থেমে নেই। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তুলনায় বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানা যায়। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে করোনা মহামারিকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হওয়ার বিষয়টিও তিনি উলেস্নখ করেছেন। প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও সংক্রমণে মৃতু্যর কারণে কতটা ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিভিন্ন খাত বিপর্যস্ত হয়েছে। মানুষের জীবনযাপন বিঘ্নিত হয়েছে। টিকাদান কর্মসূচি চলছে বিশ্বজুড়ে, তবু করোনার সংক্রমণ ও মৃতু্য থেমে নেই। বরং এরই মধ্যে দ্রম্নত সংক্রমণে সক্ষম করোনাভাইরাসের ধরনগুলোর কারণে যুক্তরাষ্ট্রে 'করোনা সংক্রমণের চতুর্থ ঢেউয়েরও' আশঙ্কা করেছেন দেশটির শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। যুক্তরাষ্ট্রে গত সপ্তাহে দৈনিক গড়ে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয় এবং প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার করে মানুষের মৃতু্য হয়েছে। এটাও বলা দরকার, প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে বিশ্বে দ্বিতীয়, আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ছাড়িয়ে গেছে এবং মৃতু্য হয়েছে দেড় লাখের বেশি মানুষের। অন্যদিকে পাকিস্তানে ৫ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে যেখানে মৃতু্য ১৩ হাজার। আর বাংলাদেশে ৫ লাখ ৪৭ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, মৃতু্য হয়েছে ৮ হাজার মানুষের। এ ক্ষেত্রে আমরা বলতে চাই, দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে- এই বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ জারি রাখতে হবে। কেননা যে কোনো ধরনের অসচেতনতা বা অনিয়মের কারণে সংক্রমণ ও মৃতু্যর সংখ্যা বাড়তে পারে। ফলে সর্বাত্মক উদ্যোগ জারি রাখা ও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিশ্চিত করা জরুরি। আমরা এটাও উলেস্নখ করতে চাই, টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি আলোচনায় এসেছে। দেশে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে- এমন বিষয়ও জানা গেছে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিকভাবে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এই বিষয়টি যেমন ইতিবাচক, তেমনি করোনা মোকাবিলায় সর্বাত্মক উদ্যোগ অব্যাহত রাখাও অপরিহার্য। মনে রাখা দরকার, করোনাভাইরাস শনাক্ত ও মৃতু্য থেমে নেই। ফলে করোনাভাইরাসের সামগ্রিক চিত্র আমলে নিতে হবে। উলেস্নখ্য, দেশে গত ৭ ফেব্রম্নয়ারি থেকে করোনার গণটিকাদান শুরু হয়েছে। আমরা মনে করি, টিকাদান কর্মসূচি এগিয়ে চলেছে এটা অত্যন্ত ইতিবাচক, ফলে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, বিষয়টি আমলে নিয়ে টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। এর পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যবিধি যেন সবাই মেনে চলে সেই প্রচারণা চালাতে হবে। এর আগে এমন বিষয়ও উঠে এসেছে, জনগণের মধ্যে থেকে করোনা-ভীতি উধাও হয়ে গেছে। তাই মাস্ক পরায় অনীহা লক্ষ্য করা গেছে। ফলে মাস্ক ব্যবহারের বিষয়টি আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। কেননা এটা ভুলে যাওয়া যাবে না করোনার সংক্রমণ ও একের পর এক মৃতু্য পুরো বিশ্বকেই বিপর্যস্ত করেছে। ফলে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, সামগ্রিক চিত্র আমলে নিয়ে করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুতি কতটা এবং মানুষের সচেতনতার চিত্র আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই। ভুলে যাওয়া যাবে না, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, অকারণে ঘোরাফেরা না করাসহ প্রয়োজনীয় সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, করোনা পরিস্থিতি আমলে নিয়ে তা মোকাবিলায় সব ধরনের উদ্যোগ জারি রাখা বাঞ্ছনীয়। করোনা প্রতিরোধে টিকাদান যেমন গুরুত্বপূর্ণ। তেমনি পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা বা করোনা প্রতিরোধে সচেতনতার বিষয় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশে টিকা চলে এসেছে এবং দ্রম্নতগতিতে টিকাদান কর্মসূচি এগিয়ে চলেছে- এই ইতিবাচক বিষয় আমলে নিয়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।