জাল এনআইডি

অপরাধীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি জরুরি

প্রকাশ | ০৬ মার্চ ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরিতে বড় ধরনের জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে এনআইডি তৈরিতে বড় ধরনের জালিয়াতির তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। জাল এনআইডি তৈরি করে ব্যাংক থেকে ঋণ উত্তোলন, ঋণের জন্য আবেদন এমন ৩০টির বেশি এনআইডির ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করেছে ডিবি পুলিশ। এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এর ফলে দেশে দুর্নীতি আরও বেড়ে যাবে। ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ব্যাংকঋণ নিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সম্প্রতি পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল বিভাগ। ভুয়া এনআইডি, ট্রেড লাইসেন্স ও টিআইএন সনদ ব্যবহার করে ঢাকা ব্যাংক থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর খিলগাঁও এবং ১৩ ডিসেম্বর পল্টন থানায় দুটি মামলা হয়। এরপর ২৮ ফেব্রম্নয়ারি বিপস্নব নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বিপস্নব ঘটনায় জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্যমতে বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রতিবেদনে প্রকাশ, প্রতারক চক্রটি আগেই কৌশলে ফ্ল্যাটের প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে তার এনআইডি এবং ফ্ল্যাটের কাগজপত্রের ফটোকপি নিয়ে নেয়। পরে ফ্ল্যাটটির জন্য ঋণ নেওয়া হবে ব্যাংক কর্মকর্তারা সেটি পরিদর্শনে যাওয়ার আগে থেকেই সেখানে বিক্রির সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়। ফ্ল্যাট মালিকের দেওয়া কাগজপত্রে কিছু পরিবর্তন করে ব্যাংকে জমা দেওয়া হয় এবং ব্যাংক কর্মকর্তারা ফ্ল্যাটে গিয়ে এবং এনআইডি সার্ভারে ঢুকেও সবকিছু সঠিক দেখতে পান। চক্রটি এক-দুই মাসের জন্য একটি অফিস ভাড়া করে এবং ব্যাংক কর্মকর্তারা ওই অফিসও পরিদর্শন করেন। ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন করার দিন ব্যাংকের লোক উপস্থিত থাকে এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এনআইডি, ট্রেড লাইসেন্স ও টিআইএনের তথ্য সঠিক পাওয়ায় ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন হওয়ার এক-দুই দিন পর পে-অর্ডারের মাধ্যমে লোনের টাকা দেয়। অবাক ব্যাপার এই যে, চক্রটি যখন লোনের কিস্তি পরিশোধ না করে তখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের দেওয়া এনআইডি কার্ডের তথ্য সার্ভারে অনুসন্ধান করলে তৈরি করা ভুয়া এনআইডি কার্ডের কোনো তথ্য দেখতে পায় না। কারণ ওই এনআইডির নাম-ঠিকানা ঠিক রেখে শুধু ছবি ও এনআইডি নম্বরের একটি ডিজিট বদলে দেওয়া হয়। এই প্রতারক চক্র অন্তত ১১টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণের নামে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। ডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা প্রাথমিকভাবে ১১টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ আত্মসাতের খবর পেয়েছে। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহায়তায় ফ্ল্যাট মালিকের দেওয়া এনআইডি নকল করে ভুয়া তৈরি করা হয়। এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নির্বাচন কমিশন এই পর্যন্ত ৪৪ জনকে বহিষ্কার করেছে। আমরা মনে করি কেবল বহিষ্কার করলেই হবে না, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এনআইডি জালিয়াতিতে জড়িত যে-ই হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।