পানিতে ডুবে মৃতু্য যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে

প্রকাশ | ০৭ মার্চ ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
প্রতিনিয়তই পানিতে ডুবে মৃতু্যর ঘটনা সামনে আসে। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, এমন ঘটনা যদি ঘটতেই থাকে তবে তা আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে যে, দেশে গত ১৪ মাসে শিশুসহ মোট ৮৮৫ জন পানিতে ডুবে মারা গেছে। তার মধ্যে ৭৩৫ জনই শিশু- যা মোট মৃতু্যর ৮৩ শতাংশ। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, গেস্নাবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় গণমাধ্যম উন্নয়ন ও যোগাযোগবিষয়ক প্রতিষ্ঠান 'সমষ্টি' গণমাধ্যমে প্রকাশিত ঘটনা থেকে পানিতে ডুবে মৃতু্যর এ তথ্য সংগ্রহ করেছে। বৃহস্পতিবার 'সমষ্টি' তাদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যম ও স্থানীয় পর্যায়ের অনলাইন নিউজ পোর্টালে-২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত ৫০৯টি ঘটনার (পানিতে ডুবে মৃতু্য) তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। সাধারণত পানিতে ডুবে মৃতু্যর সবগুলো ঘটনা গণমাধ্যমে ওঠে আসে না। এখানে বিশ্লেষণের ভিত্তিতে প্রাপ্ত প্রবণতাগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে। তথ্য মতে, গত ১৪ মাসে পানিতে ডুবে সবচেয়ে বেশি মৃতু্য হয়েছে ঢাকা বিভাগে, ১৯৩ জন। এছাড়া চট্টগ্রামে ১৭২, রংপুরে ১৪১, রাজশাহীতে ১১০, ময়মনসিংহে ১০০, বরিশালে ৬৬ ও খুলনা বিভাগে ৬১ জন মারা যায়। এ সময়ে সবচেয়ে কম মৃতু্য ছিল সিলেট বিভাগে ৪২ জন। আমরা বলতে চাই, যখন পানিতে ডুবে মৃতু্যর এমন তথ্য সামনে আসছে, তখন তা অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং বেদনার। সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেওয়া সমীচীন যে, বিভিন্ন সময়ে পানিতে শিশুদের ডুবে মৃতু্যর ঘটনা পত্রপত্রিকায় এসেছে। সঙ্গত কারণেই এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। এটাও উলেস্নখ করা দরকার, পানিতে ডুবে মৃতের ৮৩ শতাংশই শিশু জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তাদের মধ্যে চার বছর বা কম বয়সি ৩১০ জন, ৫ থেকে ৯ বছর বয়সি ২৮৪ জন, ৯-১৪ বছরের ১১০ জন এবং ১৫-১৮ বছরের ৩১ জন। ১৫০ জনের বয়স ১৮ বছরের বেশি। এটা লক্ষণীয়, শিশুদের পানিতে ডুবে মৃতু্যর নানা কারণই বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় এসেছে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। আমরা মনে করি, সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ব্যাপক প্রচার প্রচারণাও আবশ্যক। শিশুর অন্যতম ঘাতক এই পানিতে ডুবে মৃতু্য রোধে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রথমেই এগিয়ে আসতে হবে পরিবারকে। শিশুরা জলাধারের কাছে যেন যেতে না পারে সেই খেয়াল রাখা এবং সতর্কতার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া এটাও বলা দরকার, গ্রামীণ নারীরা বিভিন্ন সময় গৃহস্থালি নানা কাজে ব্যস্ত থাকে। তাদের শিশুরা এই সময়ের মধ্যেই চলে যায় বাড়ির পাশে পুকুর বা ডোবার ধারে। তখনও ঘটে দুর্ঘটনা। সংশ্লিষ্টদের এটাও মনে রাখতে হবে, সাঁতার না জানার কারণেও অনেক শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। প্রাপ্তবয়স্কদেরও পানিতে ডুবে মৃতু্যর ঘটনা ঘটছে। সঙ্গত কারণেই সাঁতার শেখার বিষয়টিকেও প্রাধান্য দেওয়া জরুরি। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এর আগে পত্রপত্রিকায় এমন বিষয়ও উঠে এসেছিল যে, এক থেকে চার বছর বয়সি শিশুদের ৭৫ শতাংশ বাড়ির ২০ মিটারের মধ্যে পানিতে ডুবে মারা যায়। আর এর বড় কারণ হচ্ছে, পরিবারের অসচেতনতা। ফলে এই বিষয়টি যেমন খেয়াল রাখতে হবে, তেমনিভাবে প্রাপ্তবয়স্কদেরও পানিতে ডুবে মৃতু্যর ঘটনা ঘটেছে- যা এড়ানো যাবে না। সমষ্টির বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক গত ১৪ মাসে ৮৮৫ ব্যক্তি পানিতে ডুবে মারা গেছে, তার মধ্যে ৭৩৫ জনই শিশু- ফলে শিশুর সুরক্ষায় যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। পানিতে ডুবে মৃতু্যর মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অভিভাবক তথা সবারই দায়িত্ব আছে সেটি মনে রাখার কোনো বিকল্প নেই।