বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী

যথাযথ উদ্যোগ নিন
নতুনধারা
  ১০ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

বিভিন্ন ধরনের অজুহাত সামনে রেখে বাজার অস্থির হওয়ার বিষয়টি যেমন নতুন নয়, তেমনি কারসাজিসহ নানা কারণেই নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি বারবারই আলোচনায় আসে। অথচ এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে নিম্নআয়ের মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়ে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, করোনাকালে এক সপ্তাহের লকডাউনের মধ্যে সবজি, মাছ-মাংসের বাজার, মুদি দোকান- সবখানেই বেড়েছে ক্রেতার আনাগোনা। কিন্তু ক্রেতার এই চাপের সুযোগ নিয়ে সরবরাহ সংকট দেখিয়ে কিছু পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তথ্য মতে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে চাল, ডাল, তেল, আলু, পেঁয়াজ ও মুড়িসহ ছয় নিত্যপণ্যের দাম খুচরা বাজারে বেড়েছে। একই অবস্থা সবজির বাজারেও। তবে বিপরীতে কয়েকটি পণ্যের দাম কমেছে। এর অন্যতম মুরগি। প্রায় দুই মাস ধরে চলা মুরগির বাজারের অস্বস্তি কিছুটা স্বস্তিতে ফিরেছে।

আমরা বলতে চাই, এমনিতেই করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের জীবন-যাপন বিপর্যস্ত, নানা ধরনের সংকট ও অনিশ্চয়তার প্রভাব পড়ছে সামগ্রিকভাবে জনজীবনের ওপর। এমন অবস্থায় ক্রেতার ভিড় বেশি- এমন সুযোগ নিয়ে সরবরাহ সংকট দেখিয়ে পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা- এটি হলে তা কতটা উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে সেটি আমলে নেওয়া জরুরি। জানা গেছে, প্রায় সব দোকানেই ক্রেতার ভিড়। কেনাকাটা স্বাভাবিক। দোকানগুলোতেও নেই পণ্যের ঘাটতি। কিন্তু ক্রেতাদের অভিযোগ, অনেক পণ্যের দাম বেশি রাখা হচ্ছে। আমরা মনে করি, সার্বিক চিত্র আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় তৎপরতা বজায় রাখতে হবে। সৃষ্ট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে দ্রম্নত নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ করে কৃত্রিম সংকটসহ যে কোনো কারণেই কেউ যেন ইচ্ছেমতো দাম বাড়াতে না পারে সেই লক্ষ্যে মনিটরিং জরুরি। এক পক্ষ আরেক পক্ষের উপর দায় চাপানোর পাল্টাপাল্টি অভিযোগের খেলায় দাম বাড়বে এটাও কাম্য নয়। সংশ্লিষ্টদের বিবেচনায় নেওয়া দরকার, একদিকে করোনাকালে নানা কারণেই মানুষের পরিস্থিতি দিশাহারা প্রায়। আবার নিত্যপণ্যের দাম যদি বাড়ে তবে তা কতটা ভীতিপ্রদ বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে।

উলেস্নখ্য, কয়েক দিন আগেও ভালো মানের কাটারিভোগের কেজিপ্রতি যে চাল ৬৮-৬৯ টাকা পড়ত। এখন কেজিপ্রতি দাম পড়ছে ৭২ টাকা। নাজিরশাইল চাল যেটা প্রতি কেজি ৬৪ টাকায় বিক্রি করা হতো এখন ৬৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসেবে রাজধানীর বাজারগুলোতে যে চাল ৪৫-৪৭ টাকা ছিল, গত বৃহস্পতিবার তা বিক্রি হয়েছে ৪৬-৫২ টাকায়। মাঝারি মানের চালের দাম বেড়েছে দুই থেকে চার টাকা। কঠোর বিধি-নিষেধের খবরে কয়েক দিন বাড়ি ফেরা মানুষের চাপে পণ্যের গাড়ি আসতে পারেনি। ফলে দাম বেড়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন সবজি বিক্রেতা। এক সপ্তাহ আগেও আলুর সর্বোচ্চ দাম ছিল ২০ টাকা, এখন ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে এখন ৪০-৪৫ টাকায় উঠেছে। অথচ এখন চলছে আলু ও পেঁয়াজের মৌসুম। গত সপ্তাহের এ সময় ১১৯-১২৫ টাকায় বিক্রি হওয়া খোলা সয়াবিন তেলের লিটার এখন ১২১-১২৫ টাকা। রোজা সামনে রেখে অন্যতম চাহিদার পণ্য মুড়ির দাম কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেড়ে এখন প্রতি কেজির দাম ৭০-৭৫ টাকা বলেও জানা গেছে।

এ ক্ষেত্রে আমলে নেওয়া দরকার, সপ্তাহব্যাপী চলমান লকডাউনের চতুর্থ দিনেও স্বাভাবিক ছিল রাজধানীর পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা, এমনকি চাহিদা অনুপাতে মজুত ও জোগান রয়েছে কাঁচা বাজারেও এমনটি জানা গেছে। ফলে দাম বৃদ্ধির বিষয়টি আমলে নেওয়া জরুরি

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, যদি নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে না থাকে তবে দিশাহারা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে এমনটি স্বাভাবিক। এর আগে এমন বিষয়ও উঠে এসেছে, নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে একটি পণ্য কিনলে আরেকটি কেনার বাজেট থাকছে না অনেকের। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, যত দ্রম্নত সম্ভব বাজার মনিটরিংয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া; একই সঙ্গে নিত্যপণ্যের বাজার সহনীয় রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে