শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ শুরু

সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক
নতুনধারা
  ১০ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বিশ্ব ভয়ানক এবং বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মুখোমুখি। আর এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি শক্তিধর দেশগুলোকেও বিপর্যস্ত করে তুলেছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। একই সঙ্গে দেশেও করোনার সংক্রমণ ও করোনায় মৃতু্যও থেমে নেই। দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এমন অবস্থায় করোনা মোকাবিলায় সার্বিক পদক্ষেপ বজায় রাখার পাশাপাশি টিকার বিষয়টিও আমলে নিতে হবে।

সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রতিদিন সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃতু্যর রেকর্ডের মধ্যেই টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে। তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার সকালে দেশজুড়ে এই কার্যক্রম শুরু হয়। একই সঙ্গে চলবে নিবন্ধিতদের প্রথম ডোজের টিকা দেওয়ার কাজ। বলা দরকার, প্রথম দিন ৫৫ বিচারপতিসহ ৮১ হাজার ৩২৩ জন দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ৬০ হাজার ৫২৮ এবং নারী ২০ হাজার ৭৯৫ জন। এছাড়া বৃহস্পতিবার সারাদেশে আরও ১৪ হাজার ৮০৪ জনসহ ৫৫ লাখ ৮৩ হাজার ৫০৭ জন প্রথম ডোজ নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৬৯ লাখ ৯২ হাজার ৭৯০ জন।

আমরা বলতে চাই, করোনার ভয়াবহতা বিবেচনায় নিয়ে টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে সামগ্রিক পদক্ষেপ জারি রাখতে হবে এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ডোজ নেওয়া প্রায় সবার মোবাইল ফোনে ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার তারিখ ও কেন্দ্র জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও কোনো কারণে কেউ যদি প্রথম ডোজ নেওয়ার পরও দ্বিতীয় ডোজের সময় ও কেন্দ্রের তথ্য না পেলে সেক্ষেত্রে প্রথম ডোজ নেওয়ার ঠিক দুমাস পর আগের কেন্দ্রে গিয়ে টিকা কার্ড দেখিয়ে দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবেন।

উলেস্নখ্য, খবরের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা ও উপহার মিলে দেশে এ পর্যন্ত ১ কোটি ২ লাখ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা এসেছে। এর মধ্যে বুধবার পর্যন্ত সারাদেশে ৫৫ লাখ ৬৮ হাজার ৭০৩ জন প্রথম ডোজ নিয়েছেন। সমসংখ্যক মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ দিতে হবে। কিন্তু বর্তমানে সরকারের হাতে মজুত আছে মাত্র ৪৬ লাখ ৩১ হাজার ২৯৭ ডোজ। ঘাটতি ৯ লাখ ৩৭ হাজার ৪০৬ ডোজ। এর মধ্যেই আবার ভারত সরকার রপ্তানি স্থগিত করায় টিকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া এমন সময় টিকার দ্বিতীয় ডোজ শুরু হলো যখন প্রতিদিন সংক্রমণ ও মৃতু্যর রেকর্ড হচ্ছে। দ্বিতীয় ডোজ শুরুর প্রথম দিন বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৭৪ জনের মৃতু্য হয়েছে। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন এবং টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখবেন এমনটি কাম্য।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ভয়ানক হয়ে উঠেছে যা আমলে নিয়ে টিকাদান কর্মসূচির পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। জনসচেতনতা বাড়াতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি ও প্রচারণা চালাতে হবে। এছাড়া মনে রাখা দরকার, করোনাভাইরাসের কারণে নানামুখী সংকট সৃষ্টি হয়েছে। করোনা সংক্রমণ এড়াতে শতভাগ মাস্কের ব্যবহারও নিশ্চিত করতে হবে। সার্বিকভাবে পরিস্থিতি আমলে নিয়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। টিকার বিষয়টি আমলে নেওয়ার পাশাপাশি- স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, অকারণে ঘোরাফেরা না করা, মাস্ক পরা, প্রয়োজনীয় সচেতনতাসহ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি প্রত্যাশিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে