শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জন কেরির সফর অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ

বাইডেন ক্ষমতায় যাওয়ার পর প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশে ফের জলবায়ু চুক্তিতে যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর এই ইসু্যতে মহামারির মধ্যে সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে বাইডেন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্র সবুজ জলবায়ু তহবিলে আরও ২০ লাখ ডলার দেবে বলে জানান কেরি।
মাছুম বিলস্নাহ
  ১৩ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

বারাক ওবামার শাসনামলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি কয়েক ঘণ্টার সফরে গত ৯ এপ্রিল ঢাকায় এসেছিলেন। তার সফর খুব সংক্ষিপ্ত কিন্তু বেশ কয়েকটি কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, এ সফরের মাধ্যমে মার্কিন নতুন প্রশাসনের সফঙ্গ আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও বেগবান হবে। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও ক্ষমতাধর দেশটির সম্পর্ক আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। তবে, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে রাজনীতির মতো স্থায়ী শত্রম্ন-মিত্র না থাকার একটি কথা প্রচলিত আছে। আর আমাদের পররাষ্ট্রনীতি যেহেতু সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রম্নতা নয়' থিওরির ওপর প্রতিষ্ঠিত, তাই বিশ্বের সবদিক থেকে ক্ষমতাধর দেশটির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও উন্নত হওয়া প্রয়োজন। আমরা জানি বিশ্ববাসী, নিজ দেশের জনগণ ও ইউরোপীয় মিত্রদের বিস্মিত করে দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প জলবায়ু সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি থেকে আমেরিকাকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। জলবায়ু তহবিলে চাঁদা দেওয়া ও জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখেন নিজ দেশকে। যখন সারা বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে এই গ্রহের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ঠিক সেই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশের এই ভূমিকা কেবল বিস্ময়কর নয়, ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। বিশ্ববাসী অনেক কিছুই আশা করে আমেরিকার কাছে। আমেরিকারও ধনী হওয়ার ও কৌশলগত কারণে এসব অনেক দায়িত্ব নিজের মাথায় নিতে হয়। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে মাত্র উন্নয়নশীল দেশের পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর শক্তিশালী ভূমিকা বিশ্বের অনেকেরই দৃষ্টি কেড়েছে। আগামী জলবায়ু সম্মেলনে যে কয়জন নির্বাচিত সরকারপ্রধান ভাষণ দেবেন তার মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী একজন। এটি বাংলাদেশের জন্য অবশ্যই গৌরবের। দ্বিতীয়ত, জলবায়ু পরিবর্তন ইসু্যতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে একটি মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারে ভূষিত হবেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বসভায় সম্মানের আর একটি আসন পেতে যাচ্ছে। এক সময় যে দেশ বাংলাদেশকে 'তলাবিহীন ঝুড়ি' আখ্যা দিয়েছিল আজ সেই দেশের প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত নিজে এসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে দাওয়াত দিয়েছেন। এটি দেশের জন্য অত্যন্ত সম্মানের, গৌরবের। আমরা এভাবেই এগিয়ে যাব।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর জো বাইডেন গত ২৭ জানুয়ারি ঘোষণা দিয়েছিলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে তিনি একটি শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করবেন। তার ঘোষণা অনুযায়ী সেই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২২ ও ২৩ এপ্রিল। এটি হবে ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলন। এখানে বাংলাদেশ ছাড়াও রাশিয়া, চীন, জাপান, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, ভারতসহ ৪০টি দেশের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম ও ভালনারেবল টুয়েন্টি গ্রম্নপ অব ফাইন্যান্সের মিনিস্টার্সের চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং জলবায়ুর ঝুঁকির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো ও সহনশীলতা অর্জনের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের অবদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অবদানের জন্য এই স্বীকৃতি। আগামী ২২-২৩ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের 'লিডার্স সামিট অন ক্লাইমেট'-এর প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জন কেরির ৯ এপ্রিলে ঢাকা সফর। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী জো বাইডেনকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান। আমন্ত্রণ গ্রহণ করায় বাইডেনের বিশেষ দূত জন কেরিও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, যেসব দেশ কার্বন নিঃসরণকারী দেশ নয় এবং নিঃসরণে যাদের অবদান নগণ্য তারাও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য জ্বালানি প্রয়োজন আর তাই ভারত, ভুটান ও নেপালের সঙ্গে আঞ্চলিক ভিত্তিতে দ্বিপক্ষীয় বা ত্রিপক্ষীয় উপায়ে জলবিদু্যৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য আলোচনা চলছে। গস্নাসগোতে আগামী কোপ-২৬ এ যোগ দেবে বাংলাদেশ। জলবায়ু সংক্রান্ত প্রস্তাবিত ১০০ বিলিয়ন ডলার তহবিলের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জন কেরি এবং বাংলাদেশের মধ্যে। বাংলাদেশ মনে করে, এ তহবিলের ৫০ শতাংশ পরিবর্তিত পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া এবং ৫০ শতাংশ দুর্ভোগ লাঘবে ব্যয় করতে হবে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ফলে বাংলাদেশের পাহাড় ও বনজ সম্পদ নষ্ট হয়েছে যে জন্য বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন। জলবায়ু সংকট রোধে প্রশমন ও অভিযোজনকে সহায়তা দিতে এবং সমৃদ্ধিকে সমর্থন জোগাতে যে বিনিয়োগ দরকার, তা সংগ্রহের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বেসরকারি খাতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত হতে যাচ্ছে যা জলবায়ু পরিবর্তন কূটনীতিতে নতুন গতির সঞ্চার করবে। জন কেরি জলবায়ু ইসু্যতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সবুজ জলবায়ু তহবিলে এক মিলিয়ন ডলার ছাড়াও দুই মিলিয়ন ডলার দেবে। বাংলাদেশ চাইলে কোভিড-১৯ এর টিকাও দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন নতুন প্রশাসন বাংলাদেশকে যে মূল্যায়ন করছে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক অন্য আর একটি উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাচ্ছে এ তারই প্রমাণ। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জন কেরি বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ উদারতার পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু এজন্য বাংলাদেশকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে জন কেরি বলেন, রোহিঙ্গাদের দেখাশোনার দায়িত্ব শুধু বাংলাদেশের একার নয়। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য তিনি নিজেও নেপিদোতে গিয়েছিলেন, জেনারেলদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। কিন্তু রোহিঙ্গা ইসু্য নিয়ে মিয়ানমার ভিন্ন পথে হাঁটছে।

জন কেরি বলেন, বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতে বাইডেন প্রশাসন এরইমধ্যে জলবায়ুবিষয়ক প্যারিস চুক্তিতে ফিরেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে। সে জন্য জলবায়ু বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। এ বিষয়ে সবাইকে কার্যকরভাবে কাজ করতে হবে। জলবায়ু সংকট রোধে অর্থায়ন সংগ্রহে যুক্তরাষ্ট্র সবার সঙ্গে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন তিনি। কোনো দেশ এককভাবে সুরক্ষিত থাকতে পারে না। কোভিড-১৯ মহামারি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ইসু্য আমাদের এ শিক্ষা দিয়েছে। দেশগুলোকে পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল হতে হবে। এসব বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বন্যা, বরফ গলা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির মতো ঘটনা ঘটছে আমাদর এই গ্রহে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অভিবাসনও ঘটছে। এসব মোকাবিলায় সবাইকে পদক্ষেপ নিতে হবে। ভূ-পৃষ্ঠের উষ্ণতা বৃদ্ধি মোকাবিলা করতে ২০৩৫ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে। দূষণের শিকার দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান প্যারিস চুক্তিতে রয়েছে। এ ব্যাপারে ধনী দেশগুলো তাদের অঙ্গীকার পূরণ করছে না। কেরি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকার পূরণে বদ্ধপরিকর। বিশেষ করে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন অবশ্যই করতে হবে। প্যারিস জলবায় চুক্তি থেকে ট্রাম্পের সরে আসার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সমস্যাকে কার্যত অস্বীকার করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রেই সর্বাগ্রে স্স্নোগান দিয়েই ট্রাম্প ক্ষমতায় এসেছিলেন এবং এর বাস্তবায়ন ঘটাতে গিয়ে বিশ্বশান্তি ও বিশ্বের প্রাণবৈচিত্র্যসহ ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছিলেন।

বাইডেন ক্ষমতায় যাওয়ার পর প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশে ফের জলবায়ু চুক্তিতে যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর এই ইসু্যতে মহামারির মধ্যে সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে বাইডেন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্র সবুজ জলবায়ু তহবিলে আরও ২০ লাখ ডলার দেবে বলে জানান কেরি।

ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম ও ভালনারেবল টুয়েন্টি গ্রম্নপ অব ফাইন্যান্সের মিনিস্টার্সের চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং জলবায়ুর ঝুঁকির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো ও সহনশীলতা অর্জনের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। জলবায়ু সংকট রোধে প্রশমন ও অভিযোজনকে সহায়তা দিতে এবং সমৃদ্ধির সমর্থন যোগাতে যে বিনিয়োগ দরকার, তা সংগ্রহের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বেসরকারি খাতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র নিবিড়ভাবে কাজ করবে বলে কেরি জানান। মার্কিন নতুন প্রশাসনের এই ভূমিকাকে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশ বিশেষ করে জলবায়ুর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো অভিনন্দিত করবে।

বিশ্বের উষ্ণায়ন বর্তমান গতিতে অব্যাহত থাকলে আগামী এক দশকের মধ্যে এর প্রভাব বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলে দেখা দেবে এবং তিন দশকের মধ্যে সব উপকূলীয় জেলার নিম্নাঞ্চল সম্পূর্ণ তলিয়ে যাবে। হাতিয়া, ভোলা, সন্দ্বীপ, কুতুবদিয়ার মতো দ্বীপ ও চরাঞ্চলও ডুবে যাবে। নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে মধ্যাঞ্চল ও নদী অববাহিকায় বিস্তীর্ণ পস্নাবনভূমি ডুবে যাবে বলে পরিবেশবিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তখন খাদ্যাভাবে লাখ লাখ মানুষ মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে। দীর্ঘস্থায়ী পস্নাবনের ফলে চাষবাস ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বাংলাদেশ দুর্দশাগ্রস্ত দেশে পরিণত হতে পারে। বাংলাদেশ বিষয়গুলোতে সচেতন এবং ইতিমধ্যে কিছু কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে প্রয়োজন মেগা প্রকল্পের আর সেজন্য দরকার আন্তর্জাতিক সাহায্য ও নিবিড় সহযোগিতা। জন কেরির সংক্ষিপ্ত সফরের মাধ্যমে সেই অধ্যায়েরই সূচনা হতে যাচ্ছে বলে আমাদের বিশ্বাস।

মাছুম বিলস্নাহ : প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে