বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নিত্যপণ্যের উচ্চ মূল্য

সহনীয় রাখতে উদ্যোগ নিন
নতুনধারা
  ১৮ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

গত বুধবার রোজা, নববর্ষ ও একই সঙ্গে কঠোর লকডাউনের শুরুতে বাজারের যে উত্তাপ শুরু হয়েছে, তা এখনো কমেনি- এমনটি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেছে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, বিভিন্ন ধরনের অজুহাত সামনে রেখে বাজার অস্থির হওয়ার বিষয়টি যেমন নতুন নয়; তেমনি কারসাজিসহ নানা কারণেই নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয় বারবারই আলোচনায় আসে। অথচ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে নিম্নআয়ের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে। তথ্য মতে, অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়া বেগুন, টমেটো, লেবু, শসাসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়তিতেই আটকে রয়েছে। ৭০ থেকে ৮০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো সবজি। আর ফলের দামও এখনো কমেনি।

বুধবার রোজার প্রথম দিনেই অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে শসার। একদিনে দ্বিগুণ দাম বেড়ে শসার কেজি প্রায় ১০০ টাকা হয়ে গেছে। এর সঙ্গে প্রতি হালি লেবু ৮০ টাকা, পাকা টমেটো ৫০ টাকা ও বেগুনের দামও ১০০ টাকায় পৌঁছায়। বৃহস্পতিবারও একই দামে এসব পণ্য বিক্রি হতে দেখা গেছে। আলু ও পেঁপে ছাড়া অন্যান্য প্রায় সব সবজি ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানা যায়। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রোজায় চাহিদা বেশি থাকে। মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। তবে সরবরাহ সেই তুলনায় কম। ফলে পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে। অন্যদিকে বাজার মনিটরিংয়ের কথা বললেও আদতে সেটা করা হচ্ছে না- এমন অভিযোগ করছেন ক্রেতা। এ ছাড়া সরকার কিছু পণ্যের দাম বেঁধে দিলেও সেই দামে কোথাও পণ্য পাওয়া যাচ্ছে না বলেও জানা গেছে। সঙ্গত কারণেই এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, নির্ধারিত আয়ের মানুষ চরম বিপদে রয়েছেন। এর আগে এমনটিও খবরে উঠে এসেছিল, করোনাকালে এক সপ্তাহের লকডাউনের মধ্যে সবজি, মাছ-মাংসের বাজার, মুদি দোকান- সবখানেই বেড়েছিল ক্রেতার আনাগোনা। কিন্তু ক্রেতার এই চাপের সুযোগ নিয়ে সরবরাহ সংকট দেখিয়ে কিছু পণ্যের দাম বাড়িয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা।

আমরা বলতে চাই, এমনিতেই করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের জীবনযাপন বিপর্যস্ত, নানা ধরনের সংকট ও অনিশ্চয়তার প্রভাব পড়ছে সামগ্রিকভাবে জনজীবনের ওপর। এমন অবস্থায় পবিত্র রমজান মাসে যখন বাজারের এই পরিস্থিতি, তখন তা কতটা উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে সেটি আমলে নেওয়া জরুরি। আমরা মনে করি, সার্বিক চিত্র আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় তৎপরতা বজায় রাখতে হবে। সৃষ্ট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে দ্রম্নত নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ করে কৃত্রিম সংকটসহ যে কোনো কারণেই হোক, কেউ যেন ইচ্ছেমতো দাম বাড়াতে না পারে, সেই লক্ষ্যে মনিটরিং জরুরি। এক পক্ষ আরেক পক্ষের উপর দায় চাপানো কিংবা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ বা চাহিদা বেশি বলে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে এমনটি কাম্য নয়। সংশ্লিষ্টদের বিবেচনায় নেওয়া দরকার, একদিকে করোনাকালে মানুষের পরিস্থিতি দিশাহারা প্রায়। আবার নিত্যপণ্যের দাম যদি বাড়ে তবে তা কতটা ভীতিপ্রদ বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, যদি নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তবে দিশাহারা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, এমনটি স্বাভাবিক। এর আগে এমন বিষয়ও উঠে এসেছে, নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে একটি পণ্য কিনলে আরেকটি কেনার বাজেট থাকছে না অনেকের। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, যত দ্রম্নত সম্ভব বাজার মনিটরিংয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া; একই সঙ্গে নিত্যপণ্যের বাজার সহনীয় রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে