৬৩০টি কারখানা বন্ধ সচল করার উদ্যোগ নিন

প্রকাশ | ২১ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রভাবে অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিশ্বের অনেক নামিদামি প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরি হারাচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ। এরই পথ ধরে করোনাভাইরাসের থাবা পড়েছে দেশের শিল্পাঞ্চলেও। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, দেশের শিল্প অধু্যষিত ছয় এলাকা- আশুলিয়া, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও খুলনায় মোট ৭ হাজার ৯৮২টি কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে কেবল পোশাক খাতের কারখানা আছে ২ হাজার ৩৮৬টি; আর এ খাতেরই ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ বস্ত্র শিল্পের কারখানা আছে ৩১৫টি। এছাড়া বেপজার আওতায়ও আছে বস্ত্র ও পোশাক খাতের কারখানা। উলেস্নখ্য, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বেপজার আওতাভুক্ত বস্ত্র ও পোশাক কারখানার বাইরে চামড়াজাত পণ্য, আসবাব, সেলফোন সংযোজন, ওষুধসহ সব খাত মিলিয়ে অন্যান্য কারখানা আছে ৪ হাজার ৮১৬টি। এসব কারখানায় উৎপাদিত পণ্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হয় বিদেশে। তবে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবা লাগে অর্থনীতির সব সেক্টরে। বাদ যায়নি শিল্প কারখানাও। গত বছরের মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৭ হাজার ৯৮২টি কারখানার মধ্যে করোনা পরিস্থিতিতে মোট ৬৩০টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও এসব কারখানার মধ্যে বড় কারখানার সংখ্যা হাতে গোনা। করোনাকালে এই তথ্য নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে আরো কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। ৪০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান ছিল পোশাক খাতে। করোনাকালে ৬৩০টি কারখানা বন্ধ হওয়ায় কয়েক লাখ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে কাজ হারাতে পারে আরো ১০ লাখ শ্রমিক। এটা দেশের তৈরি পোশাক খাতের জন্য অশনিসংকেত। তবে শিল্প উদ্যোক্তারা বলছেন, বন্ধ কারখানাগুলোকে চালু করতে সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে। উলেস্নখ্য, গত বছর থেকে তৈরি পোশাক কারখানায় লে-অফ ও শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হয়। দেখা দেয় শ্রম অসন্তোষ। পোশাক খাতের সমস্যা নিরসনে সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় শ্রমিক ছাঁটাই ও লে-অফ না করার অঙ্গীকার করে মালিকপক্ষ। কিন্তু সে অঙ্গীকার কাজে আসেনি। বর্তমানে করোনার উচ্চ সংক্রমণের মধ্যেও কারখানা খোলা রাখা হয়েছে। শ্রমিকরা জীবন বাজি রেখে কারখানায় কাজ করছে। তাদের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। বিশেষ করে ঈদের আগে বেতন বোনাস দিতে হবে। দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, মালিকপক্ষ শ্রমিক স্বার্থের বিষয়টি বিবেচনায় আনেন না। মুনাফার জন্য যা যা করার তাই করেন তারা। নতুন করে যদি পোশাক খাতে শ্রমিকরা চাকরি হারায়, তবে এর চেয়ে দুঃখ ও হতাশাজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না, বর্তমান সরকার করোনার শুরুতেই বিশাল অঙ্কের প্রণোদনা দিয়েছে এ খাতে। এ ছাড়াও দাতা প্রতিষ্ঠান ও ক্রেতারা যাতে পাশে থাকেন সে উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। তারপরও ছাঁটাইয়ের শিকার হবে কেন শ্রমিকরা, আর কারখানাই বা কেন বন্ধ হবে। আমরা মনে করি, সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগই কেবল পারে বন্ধ কারখানাগুলো সচল করতে। এটা সম্ভব না হলে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।