শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে পেছাল দেশ

যথাযথ উদ্যোগ নিন
নতুনধারা
  ২২ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে দেশ পেছালে বিষয়টি উদ্বেগজনক। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশ গত বছরের তুলনায় আরও এক ধাপ পিছিয়েছে। মঙ্গলবার রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)-২০২১ সালের এই সূচক প্রকাশ করে। সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫২তম। সূচকে সবার শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে। আমলে নেওয়া দরকার, ২০২০ সালের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৫১তম। আর ২০১৯ সালের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৫০তম। অর্থাৎ, গতবারের সূচকেও বাংলাদেশের এক ধাপ অবনতি হয়েছিল। আমরা মনে করি, সামগ্রিক এ চিত্র আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।

তথ্য মতে, এবারের সূচকে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবার নিচে। সূচকে বাংলাদেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান (১৪৫), ভারত (১৪২), মিয়ানমার (১৪০), শ্রীলঙ্কা (১২৭), আফগানিস্তান (১২২), নেপাল (১০৬), মালদ্বীপ (৭৯), ভুটান (৬৫)। প্রসঙ্গত বলা দরকার, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণমাধ্যম কতটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে, তার ভিত্তিতে ২০০২ সাল থেকে আরএসএফ এই সূচক প্রকাশ করে আসছে। ২০১৩ সাল থেকে এই সূচকে বাংলাদেশ থাকছে। আমরা বলতে চাই, বিভিন্ন সময়েই এমন বিষয় সামনে এসেছে যে, দেশের গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করে, কিন্তু এটা দেখা যাচ্ছে যে, সূচকে দেশ পিছিয়েছে। ফলে সংশ্লিস্নষ্টদের বিষয়টি আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে।

এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিভিন্ন সময়েই এমন বিষয় পত্রপত্রিকায় উঠে এসেছে- পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বছরের পর বছর ধরে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা। এমনকি দেশে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা অহরহ ঘটলেও নির্যাতনের বিচার হয় না এমন অভিযোগও বিদ্যমান। ভয়ভীতি, হুমকি-ধামকি, মামলা-মোকদ্দমা, মারাত্মক শারীরিক নির্যাতনে জখম থেকে শুরু করে নানান ধরনের শিকার সাংবাদিকরা এমনটিও জানা যায়। ফলে এই বিষয়গুলো আমলে নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের নির্যাতনের বিষয়গুলোকে বিবেচনায় নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।

এবারের সূচকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আরএসএফ বলেছে, ২০২০ সালে করোনাকালীন সংকটে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশ ও বেসামরিক সহিংসতা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। মহামারি ও সমাজে প্রভাব নিয়ে প্রতিবেদনের জন্য সাংবাদিক, বস্নগার, কার্টুনিস্টরা গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন বলেও উলেস্নখ করে সংস্থাটি। আমরা বলতে চাই, সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেওয়া দরকার, দেশে বিভিন্ন সময়েই সাংবাদিকদের নির্যাতনসহ নানা ধরনের খবর পত্রপত্রিকায় আসে- যা উৎকণ্ঠাজনক। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি সাংবাদিকদের নির্যাতন, খুনসহ নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শিকার হতে হয়, তবে তা কতটা ভয়ানক সেটা আমলে নেওয়া জরুরি। এছাড়া উলেস্নখ্য যে, এর আগে, দ্য গার্ডিয়ান অনলাইনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করে অপপ্রচারের একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক বিষয়গুলো আমলে নিতে হবে এবং বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যসূচকে অগ্রগতি নিশ্চিত করতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আরএসএফ এবারে যে বাংলাদেশের প্রসঙ্গে বলেছে, ২০২০ সালে করোনাকালীন সংকটে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশ ও বেসামরিক সহিংসতা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে- ফলে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা কতটা ভয়াবহ ও উদ্বেগের সেটি অনুধাবন করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সাংবাদিকরা দেশের সব ধরনের দুর্যোগ-সংকটে সামনের সারিতে থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু দায়িত্ব পালনকালে মারাত্মক হামলাসহ নানা ধরনের পরিস্থিতির শিকার হন- তবে তা অত্যন্ত ভীতিপ্রদ। এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২২ বছরে বাংলাদেশে অন্তত ৩৫ জন সাংবাদিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। ফলে সার্বিকভাবে আমরা বলতে চাই, বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যসূচকে বাংলাদেশ গত বছরের তুলনায় আরও এক ধাপ পিছিয়েছে- এই বিষয়টি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টরা কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে