বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ

করোনাকালে এ উদ্যোগ ইতিবাচক
নতুনধারা
  ২৪ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে চলমান লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র, দুস্থ, ভাসমান এবং অসচ্ছল মানুষের সহায়তায় ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় তালিকার ভিত্তিতে একেবারে প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত জনগণ এই সুবিধা পাবেন। এর পাশাপাশি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগামী (২০২১-২২) অর্থবছরের বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য জীবন-জীবিকার জায়গা করে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে আগামী বাজেট দেশের দরিদ্র মানুষের জন্য নিবেদিত থাকবে। বুধবার দুপুরে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অর্থনৈতিক বিষয়কসংক্রান্ত ও সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, গরিব মানুষের জন্য আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে তাদের সে অবস্থা থেকে বের করে নিয়ে আসা। যারা অতিরিক্ত গরিব আছে তারা গরিব হবে এবং যারা গরিব আছে তাদের আমরা মূলস্রোতধারায় নিয়ে আসব। দুটো উদ্যোগই আমাদের আশাবাদী করে। করোনাভাইরাসের মতো দুর্যোগে সারাদেশের সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবে ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এ জন্য তাকে ধন্যবাদ। বৈশ্বিক মহামারির এই সংকটে সরকারের পাশাপাশি অসহায় ও কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়াতে দলমত নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। পবিত্র রমজানের ত্যাগ ও সংযমের মাসে দরিদ্রদের প্রতি মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। মানুষ মানুষের জন্য এই সত্য প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

এর আগে টানা ৬৬ দিন দেশ লকডাউনে থাকার কারণে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছিল। দৈনিক রোজগার করতে না পেরে থমকে গিয়েছিল তাদের জীবনযাত্রা। এমন পরিস্থিতিতে সরকার ওই সময়ে তাদের পাশে দাঁড়ায়। তবে দরিদ্রদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের তালিকা প্রণয়নে দলীয়করণের অভিযোগ তোলা হয়েছিল বিএনপির পক্ষ থেকে। এবারও ওই ধরনের অভিযোগ ওঠা অমূলক নয়। ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি। কারণ গরিবের ত্রাণ মেরে খাওয়া বড় অপরাধ। এর আগে আমরা দেখেছি ত্রাণের চাল আত্মসাতের কারণে শতাধিক জনপ্রতিনিধি সাময়িকভাবে বরখাস্ত হয়েছিলেন। এবার স্থানীয় প্রশাসনকে এ ব্যাপারে নজরদারি বাড়াতে হবে। করোনাকালে ত্রাণ বিতরণে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা থাকতে হবে। গরিবের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা গর্হিত অপরাধ।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাণঘাতী থাবায় আতঙ্কিত মানুষ। আমাদের দেশে অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছে। আর এ সংকটের সময়ে ত্রাণের সুষ্ঠু এবং সমন্বিত বণ্টন প্রয়োজন। জীবন আগে এটা যেমন সত্য, আবার জীবিকা হারিয়ে মানুষ যদি অনাহারে মারা যায়, সেটাও অত্যন্ত দুঃখজনক। সুতরাং সরকারকে বাস্তবতার নিরিখে পরিকল্পিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর্থিক সহযোগিতা বা প্রণোদনার আওতা কীভাবে বাড়ানো যায় সেটাও সরকারকে ভাবতে হবে। আমরা চাই না করোনাকালে কেউ ক্ষুধায় কষ্ট পাক কিংবা কেউ না খেয়ে মারা যাক। তা হলে সরকারের সব ইতিবাচক অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সরকারের কার্যকর উদ্যোগই কেবল পারে দেশের গরিব মানুষকে বাঁচাতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে