শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে উদ্বেগ

কার্যকর পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ২৪ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত চলমান বিধিনিষেধ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা এড়ানোর সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কার্যকর ও স্থায়ী পন্থা হলো টিকাদান। দেশে ৭ ফেব্রম্নয়ারি গণটিকাদান শুরুর পর দ্বিতীয় ডোজের জন্য গত ৫ এপ্রিল থেকে প্রথম ডোজ গ্রহীতাদের মুঠোফোনে খুদেবার্তা পাঠানো শুরু হয়। এ ধারাবাহিকতায় ৮ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগও শুরু হয়েছে। কিন্তু আমলে নেওয়া দরকার, চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্তসংখ্যক মজুত না থাকায় টিকাপ্রাপ্তি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে বলে জানা যাচ্ছে। যা আমলে নিয়ে সর্বাত্মক উদ্যোগ নিশ্চিত করা জরুরি।

তথ্য মতে, বুধবার বাংলাদেশে টিকা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী জানিয়েছেন, আগামী চার থেকে পাঁচমাস পর সেরামের টিকা খুচরা বিক্রয় বা রপ্তানি করার জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টিকার জন্য ৭১ লাখ ৮২ হাজার ২০২ জন নিন্ধন করেছেন। আর ২৫ লাখ ৬৮ হাজার ৩৮৫ ডোজের মতো করোনা টিকা মজুত রয়েছে। এখন দৈনিক দেড় থেকে দুই লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হচ্ছে। টিকাদানের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টরা বলছে- এই হারে দিতে থাকলে শিগগিরই টিকার সংকট দেখা দেবে। ফলে দ্রম্নত চালান না এলে অনেকেই যথাসময় দ্বিতীয় ডোজ দিতে পারবেন না। এ ছাড়া যারা প্রথম ডোজ নিতে নিবন্ধন করবেন তাদের অপেক্ষার সময় দীর্ঘ হবে- আমরা মনে করি এই পরিস্থিতিকে সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। সামগ্রিক অবস্থা বিশ্লেষণ সাপেক্ষে যত দ্রম্নত সম্ভব কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে এবং টিকাপ্রাপ্তির বিষয়টিকে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

উলেস্নখ্য, জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, দেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় অন্তত ১২ থেকে ১৩ কোটি মানুষকে দুই ডোজ করে টিকা না দিলে সংক্রমণ দূর করা কঠিন হবে। অথচ এ পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন ৫৭ লাখ ৭৮ হাজারের কিছু বেশি এবং দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ১৯ লক্ষাধিক মানুষ। অন্যদিকে দিন যত যাচ্ছে টিকার মজুত তত কম আসছে। এমনকি অনেকে নির্ধারিত সময়ে দ্বিতীয় ডোজের এসএমএস পর্যন্ত পাচ্ছে না। ফলে করোনাভাইরাসের টিকাগ্রহণে ইচ্ছুক জনগোষ্ঠীর মধ্যে যথাসময় টিকা পাওয়া নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে বলেও জানা যাচ্ছে।

আমরা বলতে চাই, করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ মানুষের ভেতর যেন সচেতনতা বাড়ে সেই দিকটি আমলে নিতে হবে। তেমনি টিকা নিয়ে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে তা আমলে নিয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখতে হবে। কেননা সংক্রমণ দূর করতে দেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় অন্তত ১২ থেকে ১৩ কোটি মানুষকে দুই ডোজ করে টিকা দেওয়া জরুরি- এটা এড়ানো যাবে না। উলেস্নখ্য, বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা। এই টিকার দুটি ডোজ নিতে হয়। বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান (সেরাম ইনস্টিটিউট) যথাসময় টিকা দিচ্ছে না, অন্যদিকে মজুতও ফুরিয়ে আসায় পরিকল্পনা অনুযায়ী টিকা প্রয়োগ কর্মসূচি ব্যাহত হচ্ছে। এমনটিও আলোচনায় এসেছে, চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে দিলে এই ঘাটতি হতো না।

সর্বোপরি আমরা উলেস্নখ করতে চাই, বিশেষজ্ঞরা বলছেন- ভারতের টিকার পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে অন্য ধরনের টিকা পাওয়ার জোর কার্যক্রম চালানো উচিত ছিল। এ ছাড়া এমন বিষয়ও উঠে এসেছে, করোনা মোকাবিলায় কার্যকর পন্থা হচ্ছে গণটিকাদান কর্মসূচি। এখন টিকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে সেই আগ্রহে ভাটা পড়ছে। একাধিক উৎস থেকে টিকা পেতে আগেভাগে যোগাযোগ করার বিষয়টিও আলোচনায় আসছে- কারণ তা না হলে মানুষের মধ্যে হতাশা ও ভয় তৈরি হবে। টার্গেটকৃত জনবলকে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে না। মহামারি মোকাবিলায় চ্যালেঞ্জ বাড়বে- এমন আশঙ্কাও উঠে আসছে। সঙ্গত কারণেই সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টরা টিকা কর্মসূচি সফল করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখবে এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে