উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি

কঠোর হতে হবে

প্রকাশ | ০৬ মে ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বেই বিপর্যস্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দেশেও থেমে নেই করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা কতটা দরকারি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রসঙ্গত এটা বলা দরকার যে, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে শর্তসাপেক্ষে প্রায় সবকিছু চালু রাখার অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু মানুষ স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে উদাসীন থাকায় করোনাভাইরাস আরও বিস্তার লাভ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এই বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে যখন স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার- তখন তা ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক উদ্যোগ জারি রাখা। তথ্য মতে, ক্রেতা-বিক্রেতা মাস্ক না পরলে মার্কেট বন্ধ করে দেওয়ার সরকারি ঘোষণার একদিন পর মঙ্গলবার পল্টনের চায়না টাউন মার্কেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে মার্কেটসহ বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, এই ধারা বজায় রাখতে হবে। কেননা, এটা ভুলে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই যে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি মানা অপরিহার্য। উলেস্নখ্য, দেশে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বিভিন্ন নির্দেশনার পাশাপাশি কঠোর বিধিনিশেষ আরোপ করে সরকার। তবে জীবন-জীবিকার তাগিদে একে একে শিল্পকারখানা, শপিংমল, মার্কেট ও জেলার ভেতরে গণপরিবহণসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয় সামনে আসে। কিন্তু বেশ কয়েক দিন ধরে ঈদের বেচাকেনায় শপিংমলে স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেছে, যা উদ্বেগজনক। এমনকি ব্যবসায়ীরাও স্বাস্থ্যবিধি মানেননি বলেও জানা গেছে। ফলে এই পরিস্থিতি কতটা ভয়ানক তা অনুধাবন করে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা জরুরি। বলা দরকার, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে উদাসীনতা পরিলক্ষিত হয়েছে। মাস্ক ব্যবহারে ভ্রম্নক্ষেপ না করার বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে। ফলে প্রয়োজনে কঠোর হতে হলেও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতেই হবে। এটাও আমলে নেওয়া জরুরি যে, মহামারি করোনাভাইরাসের থাবা থেকে বাঁচতে মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা নিয়ে কড়া নির্দেশনাও দিয়েছিল বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাও। এমনকি কোভিড-১৯ সংক্রমণের বিস্তার ঘটে চলা এলাকাগুলোর স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের প্রত্যেকেরই মাস্ক পরা এবং ভালো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা নেই এমন ঘরেও অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে বলেও নিদের্শনা এসেছিল। ফলে মাস্ক পরার ক্ষেত্রে যেমন সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি, তেমনি সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। মঙ্গলবার স্বাস্থ্যবিধি না মানার অভিযোগে পল্টনের চায়না টাউন মার্কেট বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির নেতারা। কারণ হিসেবে জানা গেছে, এই মার্কেটে আসা অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক ছিল না। এমনকি দোকানদারদের মুখেও মাস্ক ছিল না। মার্কেটের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ছিল না। আমরা মনে করি, এই বিষয়টিকে সামনে রেখে সারা দেশের কেনাকাটায় ক্রেতা-বিক্রেতারা যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। করোনার এই ভয়াবহকালে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদাসীন হবে এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। উলেস্নখ্য যে, করোনার বিস্তার ঠেকাতে গত ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে আটদিনের কঠোর লকডাউন দেওয়া হয়েছিল। লকডাউনের মধ্যে দোকান-শপিংমল বন্ধ রাখাসহ ১৩টি নির্দেশনা দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। যা পর্যায়ক্রমে চলতি মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে দোকান মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১১ দিন বন্ধ থাকার পর গত ২৪ এপ্রিল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিংমল খুল দিয়েছে সরকার। এখন এসব জাগায় যেমন স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে, তেমনি জনসাধারণ যেন সচেতন হয় সেই বিষয়কেও সামনে রেখে পদক্ষেপ নিতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলার ভেতরে বাস চলাচল করবে। ফলে এ ক্ষেত্রে যেন স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত না হয় তাও কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এটা অত্যন্ত ভীতিপ্রদ বাস্তবতা হবে- যদি মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সচেতন না হয়। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি অনুধাবন করে দ্রম্নত এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করাসহ করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।