শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় সংক্রমণ ও মৃতু্য ব্যক্তিসচেতনতা জরুরি

নতুনধারা
  ০৯ মে ২০২১, ০০:০০

করোনাভাইরাস এক মহাতঙ্কের নাম। এ এক অদৃশ্য আততায়ী; এই ভাইরাসের কারণে বিশ্ব এখন টালমাটাল। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, বিশ্বজুড়ে গত দেড় বছরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ৬৯ লাখ মানুষ মারা গেছেন- যা দেশগুলোর সরকারি হিসাবের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড এভিলু্যয়েশন (আইএইচএমই)-এর বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে। আইএইচএমই'র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশির ভাগ দেশ শুধু হাসপাতালে মারা যাওয়া রোগীদের গণনা করায় মৃতের প্রকৃত সংখ্যা গোপন থেকে যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার তুলনামূলক হিসাব তুলে ধরা একটি স্বাধীন স্বাস্থ্য গবেষণা সংস্থা আইএইচএমই। অতীতে হোয়াইট হাউসও সংস্থাটির দেয়া তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়েছে। এর প্রতিবেদনগুলো জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। আইএইচএমই'র মতে, কোনো দেশে করোনায় মৃতু্যর হারের সঙ্গে সেখানে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যার খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। মহামারিপূর্ব সময়ে সব ধরনের মৃতু্যর প্রবণতার সঙ্গে মহামারির সময়ে সর্বমোট মৃতু্যর সংখ্যার তুলনামূলক হিসাব করে করোনায় মৃতু্যর সম্ভাব্য প্রকৃত সংখ্যা বের করেছে আইএইচএমই। মহামারির কারণে সৃষ্ট চিকিৎসা সংকটে যেসব মৃতু্য হয়েছে, তা গণনায় হিসাব ধরা হয়নি। কেবল করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রেও আমরা লক্ষ্য করেছি, সরকারি ও বেসরকারি হিসাবের মধ্যে পার্থক্য থাকে। প্রকৃত হিসাব যা-ই হোক, করোনায় বিশ্বব্যাপী মানুষ যে মারা যাচ্ছে, সেটাই বড় উদ্বেগের বিষয়। এই মৃতু্য কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে দেশে যে সরকারি উদ্যোগ তা পর্যাপ্ত নয় বলে প্রতীয়মান হয়। এর পাশাপাশি ব্যক্তিসচেতনতা থেকে শুরু করে রয়েছে চিকিৎসা সংকট। করোনার টিকা আবিষ্কার হওয়ার পরও বিশ্বের পর্যাপ্ত সংখ্যক মানুষকে এই টিকা প্রদান নিশ্চিত করা যায়নি। করোনা পরীক্ষার আওতায়ও আনা যায়নি বিশ্বের অধিকসংখ্যক মানুষকে। এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠা বেশির ভাগ রাষ্ট্রের পক্ষেই সম্ভব হচ্ছে না। উলেস্নখ্য, করোনাভাইরাসে প্রথম মৃতু্যর খবর পাওয়া যায় গত বছর ১০ জানুয়ারি চীনের উহানে, ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর উহানে প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। করোনাভাইরাস চীনের ল্যাবরেটরিতে তৈরি এমন অভিযোগ করেছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য তা বাতিল করে দিয়েছে। বিশ্বে এখন আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ কোটি ৬৩ লাখ এবং এ পর্যন্ত মারা গেছে ৩২ লাখ ৬০ হাজার মানুষ।

ইউরোপ আমেরিকার মতো দক্ষিণ এশিয়ায় আক্রান্তের হার দ্রম্নত বাড়ছে। বিশেষ করে ভারতের অবস্থা খুবই সঙ্গিন। সেখানে দিনে ৪ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, মারা যাচ্ছে দিনে চার হাজারের বেশি। ভারত পাকিস্তানের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। বাংলাদেশে সংক্রমণ ও মৃতু্য কমে এসেছে। তবে আশাবাদী হওয়ার কোনো কারণ নেই। দেশে এ পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭ লাখ ৭১ হাজার, মারা গেছে ১১ হাজার ৮৩০ জন। কম সংখ্যক পরীক্ষার কারণে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সরকারি পরিসংখ্যানের চেয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও ব্যক্তিসচেতনতা জরুরি এবং এর কোনো বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে