শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চিনি-দুধ ও পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে

নতুনধারা
  ০৯ মে ২০২১, ০০:০০

বিভিন্ন ধরনের অজুহাত সামনে রেখে বাজার অস্থির হওয়ার বিষয়টি যেমন নতুন নয়; তেমনি কারসাজিসহ নানা কারণেই নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয় বারবারই আলোচনায় আসে। অথচ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে নিম্নআয়ের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে- যা বলার অপেক্ষা রাখে না। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, রাজধানীতে সপ্তাহ ব্যবধানে চিনি, দুধ এবং পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। তথ্য মতে, কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা, চিনির প্যাকেট কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে কেজিপ্রতি ৭৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বলা দরকার, কিছুদিন আগেও আধা লিটার তরল দুধ ছিল ৩৫ টাকা, গত বৃহস্পতিবার সেই দুধ বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকায়। এক লিটার দুধ ছিল ৭০ টাকা, সেই দুধ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি।

আমরা বলতে চাই, বিভিন্নভাবেই যখন প্রয়োজনীয় দ্রব্যর দাম বৃদ্ধি পায়, তখন তা জনসাধারণের ওপর কতটা প্রভাব ফেলে সেটি আমলে নেওয়া সমীচীন। পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়ে এক ব্যবসায়ী বলেছেন, লকডাউনের কারণে যারা গ্রামের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন, তাদের অনেকে আবার ঢাকায় ফিরেছেন। এতে পেঁয়াজের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে এবং এর ফলে দামও বেড়েছে। আমরা বলতে চাই, চাহিদাকে পুঁজি করে যদি দাম বৃদ্ধির ঘটনা ঘটে তবে তা পরিতাপের।

আমলে নেওয়া দরকার, ই-ক্যাবের সভাপতি বলেছেন, কোম্পানিগুলো তাদের খেয়াল-খুশিমতো ব্যবসা পরিচালনা করছে। এতে ভোক্তাদের সমস্যা হচ্ছে। পণ্যের দাম কমা-বাড়া নিয়ে কোনো নির্দিষ্ট ও কঠোর আইন না থাকার কারণে এরকম সুযোগ নিচ্ছে কোম্পানিগুলো। আমরা মনে করি, যখন সবজির দাম কমলেও দুধ, চিনি, পেঁয়াজের দাম বাড়ছে তখন এই বিষয়টি আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।

প্রসঙ্গত, মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপে এমনিতেই জনসাধারণের জীবনে নানা ধরনের সংকট বিদ্যমান। ফলে এমন পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এর আগে এমন অভিযোগ উঠেছিল, সরকার কিছু পণ্যের দাম বেঁধে দিলেও সেই দামে কোথাও পণ্য পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। মনে রাখতে হবে নির্ধারিত আয়ের মানুষ চরম বিপদে রয়েছেন। এখন সবজির দাম কমলেও, এর আগে এমনটিও খবরে উঠে এসেছিল, করোনাকালে এক সপ্তাহের লকডাউনের মধ্যে সবজি, মাছ-মাংসের বাজার, মুদি দোকান- সবখানেই বেড়েছিল ক্রেতার আনাগোনা। কিন্তু ক্রেতার এই চাপের সুযোগ নিয়ে সরবরাহ সংকট দেখিয়ে কিছু পণ্যের দাম বাড়িয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। আমরা বলতে চাই, নানা ধরনের অজুহাতকে সামনে রেখে দাম বাড়িয়ে দেওয়া যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে যা রোধ করতে হবে।

সার্বিক চিত্র আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় তৎপরতাও বজায় রাখতে হবে। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে যেন অসাধু ব্যবসায়ীরা মানুষকে জিম্মি করতে না পারে। বিশেষ করে কৃত্রিম সংকটসহ যে কোনো কারণেই কেউ যেন ইচ্ছেমতো দাম বাড়াতে না পারে, সেই লক্ষ্যে মনিটরিং জরুরি। এক পক্ষ আরেক পক্ষের উপর দায় চাপানো কিংবা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ কিংবা চাহিদা বেশি বলে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে এমনটিও কাম্য নয়।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, যদি নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তবে দিশেহারা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে এমনটি স্বাভাবিক। এর আগে এমন বিষয়ও উঠে এসেছিল, নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে একটি পণ্য কিনলে আরেকটি কেনার বাজেট থাকছে না অনেকের। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, বাজার মনিটরিংয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া; একইসঙ্গে নিত্যপ্যণ্যের বাজার সহনীয় রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখা।

\হ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে