অথর্ পাচার

রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ১২ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
অথর্ পাচার একটি গুরুতর অপরাধ। বলার অপেক্ষা রাখে না, অথর্ পাচার রোধে শাস্তির বিধান রেখে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়েই অথর্ পাচারের ঘটনা এবং এর পরিপ্রেক্ষিতের উদ্বেগজনক পরিস্থিতিও আলোচনায় এসেছে। কিন্তু তারপরও যদি অথর্ পাচারের মতো ঘটনা বন্ধ না হয় তবে সেটি অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে, যা আমলে নেয়ার বিকল্প নেই বলেই আমরা মনে করি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, কারিগরি দক্ষতা ও উন্নত প্রযুক্তির অভাবকে অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অথর্ পাচারের প্রধান দুই কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণায়। বুধবার এক সেমিনারে নতুন পেমেন্ট সিস্টেমে (অনলাইন ও মোবাইল) অথর্পাচার-সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রবন্ধে বিআইবিএমের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) এ তথ্য জানান। বিআইবিএমের গবেষণায় দেখা গেছে, ৫৬ শতাংশ ব্যাংকই মনে করে, অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অথর্পাচারের পেছনে ভ‚মিকা রয়েছে ব্যাংকসহ বিভিন্ন আথির্ক প্রতিষ্ঠানে কারিগরি দক্ষতা না থাকা। আর ৪১ শতাংশ ব্যাংক উন্নত প্রযুক্তির অভাবকে দায়ী করেছে। এ ছাড়া ২১ ও ১৮ শতাংশ ব্যাংক নজরদারির অভাব ও দ্রæত লেনদেনকে অথর্পাচারে দায়ী করেছে। উল্লেখ্য, অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অথর্পাচার রোধে ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’ সৃষ্টির ওপর জোর দেন সেমিনারে অংশ নেয়া অতিথিরা। ক্যাশসেল সোসাইটির দিকে এগিয়ে যেতে হবে, কেননা যদি তা করা সম্ভব হয় নজরদারি আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে এবং অপরাধ কমে আসবে এমন বিষয় উঠে আসা ছাড়াও, অথর্পাচার প্রতিরোধে ব্যাংক ও আথির্ক প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটি ক্যাশসেল ইকোসিস্টেমের মধ্যে চলে আসা প্রয়োজন, প্রযুক্তিগত সমস্যা প্রতিরোধে প্রযুক্তিগত সমাধানেরই প্রয়োজন, এজেন্ট নিবার্চনের সময় ব্যাংকগুলোকে আরও সতকর্ হওয়ার পরামশর্সহ এজেন্ট নিয়োগ নিয়ে ব্যাংকগুলোর মধ্যে অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা বন্ধ করার বিষয়গুলোও আলোচনায় এসেছে। আমরা মনে করি, এগুলো পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের কাযর্কর পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহাযর্। বিদেশে টাকা পাচারে ব্যাংকিংব্যবস্থা ও আথির্ক প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে দৃষ্টি দেয়া এবং কাযর্কর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা জরুরি বলেই আমরা মনে করি। ভুলে যাওয়া যাবে না, অথর্ পাচারের মতো ঘটনা একটি দেশের জন্য অত্যন্ত উৎকণ্ঠাজনক যা রোধে সবার্ত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখা অপরিহাযর্। বিভিন্ন সময়েই পত্রপত্রিকায় উঠে এসেছে, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছরই কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। পাচারকারীর মধ্যে অসৎ ব্যবসায়ী, অসৎ রাজনীতিক, দুনীির্তবাজ আমলা এবং অপরাধজগতের কুশীলবরাও আছে। এমনকি ব্যাংক ঋণ নিয়ে লোপাট করতে তা পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে বিদেশে এমন অভিযোগও আলোচিত হয়েছে। আমদানি-রপ্তানির এলসি খুলে বাস্তবে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি বা রপ্তানি করার কথা তা না করে বরং বিল পরিশোধের মাধ্যমে অথর্ পাচারও ঘটছে বলেও জানা গেছে। আমরা মনে করি, অথর্ পাচার রোধে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি গবেষণায় কারিগরি দক্ষতা ও উন্নত প্রযুক্তির অভাবকে অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অথর্ পাচারের প্রধান দুই কারণ হিসেবে চিহ্নিত করার বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখা দরকার, অথর্ পাচারের মতো ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সঙ্গত কারণেই সাবির্ক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে অথর্ পাচারকারীরা যাতে পার না পায়, সেটি আমলে নেয়ার পাশাপাশি অথর্ পাচার রোধে দক্ষতা ও প্রযুক্তিগত অভাব সংক্রান্ত যে বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে, তা আমলে নিয়ে যত দ্রæত সম্ভব কাযর্কর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা জরুরি।