পাঠক মত

দুভোের্গর নগরী ঢাকা আমাদের জন্য গবের্র নয়, লজ্জার

প্রকাশ | ১২ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। চার দশকেরও পুরনো এ মহানগরীর শুরু হয়েছিল মোগল আমলে সুবে বাংলার রাজধানী হিসেবে। কালের বিবতের্ন বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদের তীরবতীর্ ঢাকা এখন দুনিয়ার শীষর্ জনসংখ্যা অধ্যুষিত নগরগুলোর একটি। দেড় কোটিরও বেশি অধিবাসীর বসবাস এ মেগা সিটিতে। মেগা সিটি হিসেবে ঢাকার উত্থান বাংলাদেশের মানুষের জন্য যেমন গবের্র তেমন যানজট, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব এবং নাগরিক সুযোগ-সুবিধার সীমাবদ্ধতা এই গবের্ক প্রতিনিয়ত আহত করছে। ঢাকা যে বিশ্বের অন্যতম দুভোের্গর শহর তা এ মহানগরীর যানজটেই স্পষ্ট। নগরীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যেতে যানজটের কারণে যে সময় লাগে বিমানে সে সময়ে অন্য দেশ থেকে ঘুরে আসা যায়। ট্রাফিক ব্যবস্থা বলে এ মহানগরীতে কোনো কিছুর অস্তিত্ব আছে কিনা সে সংশয়ের অবকাশও রয়েছে। দুনিয়ার আর কোনো শহরে ফুটপাথ ও রাজপথ দখল করে দোকানপাট সাজানো, গাড়ি পাকির্ং কিংবা জনসভা করা হয় কিনা তা আমাদের খুব বেশি জানা নেই। বাংলাদেশকে সবুজের দেশ বলা হলেও রাজধানী ঢাকা থেকে সবুজ গাছগাছালি দিন দিন উধাও হচ্ছে। নাগরিকদের সেবাদানের নামে বছরজুড়ে রাস্তা খেঁাড়াখুঁড়ি চলে এ মহানগরীতে। পরিবহন ব্যবস্থার হতশ্রী অবস্থাও প্রতিনিয়ত পীড়া দেয় নগরবাসীকে, যা ঢাকাকে সাক্ষাৎ দুভোের্গর নগরীতে পরিণত করেছে। এ অভিধা গবের্র নয়, লজ্জার। এ লজ্জা থেকে রক্ষা পেতে সরকার ও দুই সিটি করপোরেশনকে যেমন যতœবান হতে হবে, তেমন নাগরিকদের সচেতনতাও গড়ে তুলতে হবে। রাজধানী ঢাকা আর নাগরিক সমস্যা সমথর্ক শব্দে পরিণত হয়েছে বহু আগে। ঢাকাকে ভাবা হয় দুনিয়ার সবচেয়ে অপরিচ্ছন্ন মেগাসিটি হিসেবে। যানজটের নগরী যেন ঢাকার পরিচিতির অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে। দুনিয়ার আর কোনো মেগাসিটিতে এত ভাঙাচোরা রাস্তা খুঁজে পাওয়া দায়। জলাবদ্ধতা রাজধানীর একাংশের ঘাড়ে এমনই চেপে বসেছে যে কোনটি রাস্তা আর কোনটি নদর্মা তা উপলব্ধি করাও কঠিন হয়ে দঁাড়িয়েছে। মশার উৎপাতে রাজধানীর কোনো কোনো এলাকায় দিনের বেলায়ও স্বস্তিতে থাকা দায়। বাস্তবে ঢাকা শহর বসবাসের জন্য কতটা অনুপযোগী তা এই শহরের বাসিন্দাদের চেয়ে বেশি ভালো কেউ জানে না। আমরা প্রতিনিয়ত এই স্থবির শহরটিতে মরার মতো বেঁচে আছি। দুবির্ষহ যানজট, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানিসংকট, পয়ঃনিষ্কাশনের জটিলতা, দুগর্ন্ধময় ও বিষাক্ত বাতাস, দূষিত পরিবেশ, অসম্ভব ঘনবসতি, ভেজাল খাবার, আকাশছেঁায়া দ্রব্যমূল্য ইত্যাদি নানা সমস্যায় আমরা একেবারে দিশাহারা হয়ে পড়েছি। শহরটিতে এই অবস্থা বিরাজ করছে অনেক বছর ধরে। আর দিনে দিনে এ অবস্থা কঠিনতর আকার ধারণ করছে। এই পরিস্থিতিতে ঢাকার ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকেই। এই পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনে যেসব কারণ বিদ্যমান, গবেষকরা সেগুলোকে অনেক আগেই বিজ্ঞানসম্মতভাবে চিহ্নিত করেছেন এবং সেগুলোর সম্ভাব্য সমাধানও দিয়েছেন। তাই এই সমস্যা সমাধানে আন্তরিকভাবে কাযর্কর পদক্ষেপ জরুরি। ইফতেখার আহমেদ টিপু ঢাকা