যথাযথ উদ্যোগ নিন

থমকে আছে বিদেশি বিনিয়োগ

প্রকাশ | ১৪ জুন ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাকালে প্রত্যেকটি খাতই বিপর্যস্ত হয়েছে। ফলে সৃষ্ট বাস্তবতা যেমন অস্বীকারের উপায় নেই, তেমনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণও জরুরি। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জনের প্রশ্নে বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। ফলে বিদেশি বিনিয়োগ যদি থমকে যায়, তবে এর পরিপ্রেক্ষিতে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে, বিদায়ী অর্থবছরে সম্ভাবনা সত্ত্বেও পাওয়া যায়নি প্রত্যাশিত বিদেশি বিনিয়োগ। আর যারা বিনিয়োগ করেছেন তারাও খুব একটা ভালো অবস্থায় নেই। করোনাকাল দীর্ঘ হওয়ায় নতুন বিনিয়োগ তো দূরের কথা, অগ্রগতি নেই প্রতিশ্রম্নত বিনিয়োগেরও- এমনটিও জানা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, প্রস্তাবিত বাজেটকে বিনিয়োগবান্ধব বললেও বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে তা বাস্তবায়ন বেশ চ্যালেঞ্জিং মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সঙ্গত কারণেই বিষয়টি আমলে নেওয়া আবশ্যক বলেই প্রতীয়মান হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার কারণে অনেকটাই অনিশ্চিত বিদেশি বিনিয়োগ। আর বিনিয়োগ না থাকলে কর্মসংস্থান তৈরির সুযোগ কমে যা বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। তাদের মত, এক্ষেত্রে দেশীয় উদ্যোক্তাদের স্পট লাইটে রাখতে হবে এবং বাজেটে তাদের জন্য প্রস্তাবিত প্রণোদনার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া প্রয়োজনে এসএমই খাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নিয়ম ও মনিটরিং চালু করতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক- এমন অভিমতও আলোচনায় আসছে। আমরা বলতে চাই, এমন বিষয় বারবার সামনে আসছে, বর্তমান মহামারির মধ্যে কর্মসংস্থান তৈরি হবে বড় চ্যালেঞ্জ। কেননা বিনিয়োগের সঙ্গে কর্মসংস্থান সরাসরি সম্পর্কিত। আর যখন জানা যাচ্ছে করোনার প্রভাবে বিদায়ী অর্থবছরে শেষভাগে বিদেশি বিনিয়োগ একেবারেই নেই। এ ছাড়া থমকে আছে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও জাপানের প্রতিশ্রম্নত বিনিয়োগগুলো- তখন এই বিষয়টিকে সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। মনে রাখা দরকার, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়লে তা সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে। এছাড়া কর্মসংস্থানের প্রশ্নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। কিন্তু যখন বিদেশি বিনিয়োগ থমকে আছে তখন তার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্যোগ নেওয়া অপরিহার্য। এ ক্ষেত্রে যখন এমনটি আলোচনায় আসছে, মহামারির বাস্তবতায় নজর বাড়াতে হবে দেশীয় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে- তখন তা এড়ানো যাবে না। এছাড়া দেশীয় উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি ও বিনিয়োগে সহায়তা প্রদানসহ এ খাতে প্রণোদনার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এসএমই বান্ধব হওয়া, প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এ খাতে ঋণ বিতরণনীতি আরও সহজ করাসহ বিভিন্ন ধরনের বিষয় আলোচনায় আসছে যা আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। কেননা দেশের প্রায় ৮০ লাখ এসএমই উদ্যোক্তা রয়েছে এবং এই খাতের বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মহামারির মধ্যেও অর্থনীতি সচল ও জিডিপিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে সক্ষম বলেও জানা যাচ্ছে। এছাড়া এ বিষয়ে এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি বলেছেন, দেশের অর্থনীতি দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল রাখতে দেশীয় শিল্প বিকাশের কোনো বিকল্প নেই। আর তাই বরাবরের মতোই দেশীয় উদ্যোক্তাদের ব্যবসার পরিবেশ আরও সহজ করতে হবে। বিশেষ করে প্রস্তাবিত বাজেটে দেশীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য ঘোষিত প্রণোদনার শতভাগ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে- এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের ওপর ভর করেই দেশের করোনার মতো মহামারির মধ্যেও দেশের অর্থনীতি চাঙা রয়েছে। কিন্তু ছোট ও মাঝারি মানের শিল্পে প্রণোদনার ঋণের সঠিক বণ্টন করা হয়নি- এমনটিও খবরে উঠে এসেছে। ফলে সার্বিক বিষয় আমলে নিয়েও সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আগামী অর্থবছরে প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক প্রণোদনার অর্থ বিতরণে নজরদারি বাড়ানোসহ বিশেষ নিয়ম-কানুন চালু করা যেতে পারে বলেও মত উঠে এসেছে যা আমলে নিতে হবে। বিদায়ী অর্থবছরে সম্ভাবনা সত্ত্বেও পাওয়া যায়নি প্রত্যাশিত বিদেশি বিনিয়োগ- এই বিষয়টি আমলে নিয়ে দেশীয় উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকারের যে তাগিদ আলোচনায় আসছে তা আমলে নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।