বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় শনাক্ত ও মৃতু্য বেড়েছে মোকাবিলায় সর্বাত্মক উদ্যোগ নিন

নতুনধারা
  ১৬ জুন ২০২১, ০০:০০

করোনা পরিস্থিতিতে দিশেহারা পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। দেশে আবারও করোনায় শনাক্ত ও মৃতু্য বেড়েছে। সঙ্গত কারণেই এই পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৫০ জনের। যা গত ৪৯ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃতু্য হয়েছে ৫৪ জনের। যা গত ৩৬ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। সোমবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এর চেয়ে বেশি সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল গত ২৬ এপ্রিল। সেদিন ৩ হাজার ৩০৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আর এর চেয়ে বেশি মৃতু্য হয়েছিল ৯ মে, সেদিন মৃতু্য হয় ৫৬ জনের। এখন পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ৮ লাখ ২৯ হাজার ৯৭২। মোট মৃতু্য হয়েছে ১৩ হাজার ১৭২ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ১৪ জনের মৃতু্য হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। ঢাকা ও রাজশাহী দুই বিভাগে মৃতু্য হয়েছে ১৩ জন করে। এ ছাড়া খুলনায় সাতজন, রংপুরে পাঁচজন, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগে একজন করে মারা গেছেন। সিলেট বিভাগে কোনো মৃতু্য হয়নি। এমন পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।

করোনা নিয়ন্ত্রণে কঠোর বিধিনিষেধের মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়িয়ে দীর্ঘায়িত করা হলেও এর কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অধরাই রয়ে গেছে। বিধিনিষেধ মানার ক্ষেত্রে সচেতন মানুষের মধ্যেও একপর্যায়ে ব্যাপক অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা মনে করি, করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। ফলে এটি যেন উপেক্ষিত না হয় তা আমলে নিতে হবে এবং সব ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে। এর আগে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে শপিংমলে ভিড়, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঘর ও কর্মস্থলে যাতায়াত, সংক্রমিত হলেও দ্রম্নত পরীক্ষা না করানো- মূলত এই তিন কারণে করোনা আক্রান্ত রোগী বাড়ার খবর সামনে এসেছিল।

আমরা মনে করি, করোনার ভয়াবহতা বিবেচনায় নিয়ে দ্রম্নত সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সেটা নিশ্চিত করতে হবে স্থানীয় প্রশাসনকে। এটা মনে রাখা দরকার, স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে যেমন উদাসীনতার বিষয়টি আলোচনায় আসছে, তেমনি এর মধ্যেই ভারতীয় ধরনও শনাক্ত হয়েছে। দেশের সীমান্তবর্তী জেলাসহ ৪৩টি জেলায় করোনা সংক্রমণ তীব্র। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত না করতে পারলে পরিস্থিতি ক্রমাগত ভয়ানক হয়ে উঠবে এমন আশঙ্কা অমূলক নয়।

সম্প্রতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় স্থানীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ডিসিদের দেওয়াসহ দেশে চলমান বিধিনিষেধ আরও ১০ দিন বাড়িয়েছে সরকার। এতে পাঁচটি নতুন শর্তও যুক্ত করা হয়েছে। আমরা মনে করি, পাঁচটি নতুন শর্ত ও আগের বিধিনিষেধগুলো যেন যথাযথভাবে মেনে চলা হয় সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। মনিটরিং বাড়াতে হবে। করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখার কোনো বিকল্প নেই। এটাও আমলে নিতে হবে, দফায় দফায় শুধু বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়িয়ে কোনো লাভ হবে না- এর সুফল পেতে হলে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে বাধ্য করতে হবে। কোনো এলাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়লে ঝুঁকি না নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে লকডাউন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে আবার করোনায় শনাক্ত ও মৃতু্য বাড়ছে এই বিষয়টিকে সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং সার্বিক দিক বিবেচনায় চিকিৎসা ব্যবস্থায় সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।

\হ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে