রপ্তানি আয় বৃদ্ধি

এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে

প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনাময় একটি দেশÑ এ কথা বারবার উচ্চারিত হয়ে আসছে। এই সম্ভাবনার পূণার্ঙ্গতা পাবে বা পুরোপুরি বাস্তবায়ন ঘটবে তার শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি, শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রচেষ্টা, নারীর অধিকার সংরক্ষণ, মানবিক মূল্যবোধের ও সামাজিক অবক্ষয় রোধ এবং দেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলাসহ সংসদীয় গণতন্ত্রের বিকাশ ও প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করার মধ্যদিয়ে। দারিদ্র্যদূরীকরণ ও দেশ থেকে দুনীির্তর মূলোৎপাটন করে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, চলতি অথর্বছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৪২ শতাংশ। এ ছাড়াও প্রধান দুটি রপ্তানি দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও জামাির্নতেও বেড়েছে আয়। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) বলছে, ২০১৮-১৯ অথর্বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে এসব দেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানি খাতের আয় বেড়েছে। এ ছাড়াও এশিয়ার প্রধান দুটি দেশ জাপান ও চীন থেকে গত কয়েক মাসে রপ্তানি আয় হতাশাজনক হলেও চলতি অথর্বছরের প্রথম প্রান্তিকে আয় বেড়েছে। ভারত থেকে চলতি অথর্বছরের প্রথম তিন মাসে রপ্তানি আয় বেড়ে হয়েছে সাড়ে ৩৭ কোটি মাকির্ন ডলার। ২০১৭-১৮ অথর্বছরে একই সময়ে যা ছিল সাড়ে ১৫ কোটি মাকির্ন ডলার। ভারত থেকে রপ্তানি আয়ের মধ্যে শুধু তৈরি পোশাক খাত থেকে বেড়েছে ১৬৭ শতাংশ। যা অথর্মূল্যে সাড়ে ১৪ কোটি মাকির্ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র ও জামাির্নতে রপ্তানি আয় বেড়েছে যথাক্রমে ১৪ দশমিক ২৩ শতাংশ ও ১৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এ ছাড়াও যুক্তরাজ্য ছাড়া ইউরোপের প্রায় সব দেশ থেকে প্রথম প্রান্তিকে রপ্তানি আয় বেড়েছে। জাপান ও চীনে রপ্তানি আয় বেড়েছে যথাক্রমে ৩১ দশমিক ৮৪ শতাংশ ও ২৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এই ধরনের সংবাদ আমাদের আশাবাদী করে তোলে। তবে এর পাশাপাশি নেতিবাচক খবরও রয়েছে। অন্য এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, আমদানির তুলনায় রপ্তানি কমে যাওয়ায় ক্রমেই বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতি। চলতি অথর্বছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) আমদানিতে ৮৮২ কোটি ৫০ লাখ ডলার ব্যয় হলেও রপ্তানি হয়েছে ৬৭১ কোটি ৮০ লাখ ডলারের। এতে বাণিজ্য ঘাটতি ২১০ কোটি ৭০ লাখ ডলার বা দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। ২০১৭-১৮ অথর্বছরের প্রথম দুই মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ১৭৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এক বছরের ব্যবধানে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ৩৪ কোটি ১০ লাখ ডলার বা ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ। যে করেই হোক বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতে হবে। সে জন্য সরকারের কাযর্কর পদক্ষেপ জরুরি। এ কথা কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই, স্বাধীনতার পরে যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ পুনগর্ঠনে অনেক বেগ পেতে হয়। স্বাধীনতার পরপরই দুভিের্ক্ষর কবলে পড়ে দেশ। ভঙ্গুর অথর্নীতি নিয়ে যাত্রা শুরু হয় একটি স্বাধীন দেশের। এ সময় বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে তিরস্কার করেছিল বিশ্বের অনেক দেশই। যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল তলাবিহীন ঝুড়ি। আর এখন স্বাধীনতার ৪৭ বছরে বাংলাদেশ আর তলাবিহীন ঝুড়ি নেই। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। আন্তজাির্তক বিশ্ব এখন বাংলাদেশের প্রশংসা করছে। প্রশংসা করছে জাতিসংঘ ও বিশ্ব ব্যাংক। খোদ বিদেশি অতিথি ও রাষ্ট্রনায়করাই বাংলাদেশের গুণকীতর্ন করছেন। কেউ কেউ বলছেন বাংলাদেশ হচ্ছে এশিয়ার বাঘ। এই ধারাবাহিকতা আমাদের রক্ষা করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন দুনীির্তমুক্ত বাংলাদেশ, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের বিকাশ ও প্রতিষ্ঠা। অথৈর্নতিক অগ্রগতির পূবর্ শতর্ এই সব দিকের উন্নয়ন সাধন। আমাদের সেই দিকেই অগ্রসর হওয়া উচিত।