সরকারের উন্নয়ন

প্রকাশ | ২১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

আশরাফ ঢাকা
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ আখ্যা দিয়েছিল। অথচ স্বাধীনতার ৪৭ বছরে বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূণর্। এখন তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, সম্পদে ভরপুর এবং সম্পদে উপচেপড়া ঝুড়িতে পরিণত হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে স্বাধীনতা অজর্ন এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ, সাহসী, সৎ, যোগ্য নেতৃত্বের ফলে। সরকারের যেসব উন্নয়ন দৃশ্যমানÑ ১-পদ্মা সেতু নিমার্ণ, ২-সমুদ্রসীমানা বিজয়, ৩-শ্রæমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, ৪-ফ্লাইওভার নিমার্ণ, ৫-জেলেদের খাদ্য সহায়তা প্রদান, ৬-দরিদ্রতার হার নিম্ন পযাের্য়, ৭-যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের বিচার, ৮-বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, ৯-বিনামূল্যে প্রত্যেকেটি শিক্ষাথীর্র হাতে বই বিতরণ, ১০-বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, ১১-কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান, ১২-বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, ১৩-দেশের রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, ১৪-মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, ১৫- গরিব শিক্ষাথীের্দর উপবৃত্তি, ১৬- অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন ব্যবস্থা, ১৭- রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, ১৮- মুক্তিযুদ্ধাদের সম্মানী ভাতা প্রদান, ১৯- প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল তথ্য সেবা কেন্দ্র, ২০- বিভিন্ন জেলায় বিনোদন কেন্দ্র নিমার্ণ, ২১- বিভিন্ন জেলায় শিল্প পাকর্ নিমার্ণ, ২২- দেশের বিভিন্ন স্থানে ইকোনমিক জোন নিমার্ণ, ২৩- প্রামীণ রাস্তা-ঘাট ও কালভাটর্ নিমার্ণ, ২৪- মোবাইল ও ইন্টারনেট গ্রাহক বৃদ্ধি, ২৫- একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, ২৬- কমর্সংস্থান বৃদ্ধি, ২৭- কৃষিতে সফলতা, ২৮- জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে সফলতা, ২৯- এশিয়া হাইওয়ে রোড প্রকল্প, ৩০- বৈদেশিক মুদ্রার রিজাভর্ বৃদ্ধি, ৩১- প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান, ৩২- নারীর ক্ষমতায়ন, ৩৩- বিধবা ভাতা প্রদান, ৩৪- মাতৃত্বকালীন ছুটি বৃদ্ধি, ৩৫- বয়স্ক ভাতা প্রদান, ৩৬- মাতৃকালীন ভাতা প্রদান ৩৭-ডিজিটাল বাংলাদেশ কাযর্কর, ৩৮-মেট্রোরেল, ৩৯- হাতির ঝিল প্রকল্প, ৪০- এলিভেটেড একপ্রেস প্রকল্পের কাজ চলছে, ৪১-সেটালাইট ৪২-৪ জি-৫ জি, ৪৩- মাদক নিধন, ৪৪-ভিক্ষুক মুক্ত করন, ৪৫-হরতাল মুক্ত করন, ৪৬- ২০০টি উপরে মসজিদ স্থাপন, ৪৭- রূপপুরে পারমাণবিক স্থাপন, ৪৮-প্রাইমার স্কুল সরকারি করণ। আশির দশকে বাংলাদেশের গামের্ন্টস্ শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে বৈদেশিক অথর্ উপাজের্নর সূচনা হয়। কালক্রমে এই শিল্প এখন বিশ্বে অন্যতম প্রধান রপ্তানিকারক শিল্পে পরিণত হয়েছে। প্রবাসী আয় আজ বাষির্ক ৩২ বিলিয়ন ডলারের বেশি। আজ আমরা শত্রæর মুখে চুনকালি দিয়ে বিশ্ব অগ্রগতির মহাসড়কে। ক্ষুদ্র আয়তনের একটি উন্নয়নশীল দেশ হয়েও বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সারা বিশ্বের নিকট প্রাকৃতিক দুযোের্গর নিবিড় সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবহার এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার ভ‚মিকা, জনবহুল দেশে নিবার্চন পরিচালনায় স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুতা আনয়ন, বৃক্ষরোপণ, সামাজিক ও অথৈর্নতিক সূচকের ইতিবাচক পরিবতর্ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে দঁাড়িয়েছে। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে জন্ম নেয়া এই বাংলাদেশকে আজকের অবস্থানে আসতে অতিক্রম করতে হয়েছে হাজারো প্রতিবন্ধকতা। যুদ্ধ বিধ্বস্ত, প্রায় সবের্ক্ষত্রে অবকাঠামোবিহীন সেদিনের সেই সদ্যজাত জাতির ৪৩ বছরের অজের্নর পরিসংখ্যানও নিতান্ত অপ্রতুল নয়। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৮টি লক্ষ্যের মধ্যে শিক্ষা, শিশুমৃত্যুহার কমানো এবং দারিদ্র্য হ্রাসকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি প্রদশর্ন করতে সক্ষম হয়েছে। নোবেল বিজয়ী ভারতীয় অথর্নীতিবিদ অমতর্্য সেনের করা মন্তব্য এক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য। তার মতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশ্বকে চমকে দেবার মতো সাফল্য আছে বাংলাদেশের। বিশেষত শিক্ষা সুবিধা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার ও জন্মহার কমানো, গরিব মানুষের জন্য শৌচাগার ও স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান এবং শিশুদের টিকাদান কাযর্ক্রম অন্যতম। কৃষিখাতে অভ‚তপূবর্ কিছু সাফল্যের জন্য বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ বারবার আলোচিত হয়েছে। প্রায় ১৬ কোটি জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশ বতর্মানে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূণর্। বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশে ধানের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৫০ লক্ষ মেট্রিক টন। প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের বিজ্ঞানী ড. মাকসুদুল আলম আবিষ্কার করেছেন পাটের জিনোম সিকুয়েন্সিং। সারা বিশ্বে আজ পযর্ন্ত মাত্র ১৭টি উদ্ভিদের জিনোম সিকুয়েন্সিং হয়েছে, তার মধ্যে ড. মাকসুদ করেছেন ৩টা। তার এই অনন্য অজর্ন বাংলাদেশের মানুষকে করেছে গবির্ত। প্রবাসী শ্রমিকদের উন্নয়নে অজর্ন বতর্মানে বিশ্বের ১৫৭টি দেশে বাংলাদেশের ৮৬ লক্ষেরও অধিক শ্রমিক কমর্রত আছে। বিদেশে শ্রমিক প্রেরণ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ স্থাপন করেছে অনন্য দৃষ্টান্ত। স্বল্প সুদে অভিবাসন ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক স্থাপন করে দেশের ৭টি বিভাগীয় শহরে এর শাখা স্থাপন করা হয়েছে। এই ব্যাংকের মাধ্যমে এপ্রিল ২০১৪ পযর্ন্ত ২০ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা অভিবাসন ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সারাদেশে তৃণমূল পযার্য় থেকে বিদেশ গমনেচ্ছু জনগণকে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে ফলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণকেও এ সেবা প্রহণের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে হয়রানি ছাড়াই স্বল্প ব্যয়ে মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশগুলোতে শ্রমিকগণ যেতে পেরেছে। হতদরিদ্রদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বিস্তৃত করতে বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্ত ও দুস্থ মহিলা ভাতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃকালীন ভাতাসহ ভাতার হার ও আওতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে।