রাজধানীর ঝুঁকিপূণর্ ভবন

প্রকাশ | ২১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

আলী আহমেদ বকশীবাজার, ঢাকা
বড় ধরনের ভ‚মিকম্পের আশঙ্কার কারণে রাজধানীর ঝুঁকিপূণর্ ভবনের বিষয়টি আবার আলোচনায় উঠে এসেছে। এর আগে ২০০৪ সালে পুরনো ঢাকার শঁাখারীবাজারে জরাজীণর্ ভবন ধসে ১৯ জন মানুষ মারা যায়, আর বেগুনবাড়িতে ভবনধস এবং নিমতলীতে আগুনে পুড়ে বেশ কিছু মানুষের মমাির্ন্তক মৃত্যু হওয়ার পর ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) এবং রাজধানী উন্নয়ন কতৃর্পক্ষ (রাজউক) ঝুঁকিপূণর্ ভবনের তালিকা তৈরি করে। একাধিকবার ঝুঁকিপূণর্ ভবনের তালিকা তৈরি করা সত্তে¡ও অজানা কারণে কাযর্কর উদ্যোগ নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। পুরান ঢাকার শঁাখারীবাজারে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূণর্ ভবন রয়েছে। এসব ভবনের বয়স দুশ থেকে আড়াইশ বছর। বিস্ময়কর তথ্য হচ্ছেÑ ভ‚মিকম্প পরবতীর্ উদ্ধারকাজ চালানোর দায়িত্ব যে ফায়ার সাভির্স কমীের্দর, খোদ রাজধানীতে তাদের ভবনগুলোই বেশি ঝুঁকিপূণর্। ওই সময় শঁাখারীবাজার দুঘর্টনার পর ৬৮৭টি ঝুঁকিপূণর্ ভবনের তালিকা করার পরও গত সাত বছরে কোনো কাযর্কর উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। অথচ মানুষ মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে সেখানে বসবাস করছে। যেখানে নতুন ভবনই ঝুঁকিপূণর্ সেখানে পুরনো ভবনের কথা বলাই বাহুল্য। নতুন-পুরনোর দ্ব›দ্ব নয়, রাজধানী ঢাকার যেসব ভবন ঝুঁকিপূণর্ তা দ্রæত চিহ্নিত করুন। প্রয়োজনে নতুনভাবে তালিকা করে জনসমক্ষে প্রকাশের ব্যবস্থা নিন। রাজধানীর আড়াই লাখ ভবনের মধ্যে দেড় লাখ ভবনই কোনো না কোনোভাবে ঝুঁকিপূণর্। পুরনো ভবন ছাড়াও যেসব নতুন ভবন তৈরি করা হয়েছে তা ইমারত নিমার্ণ আইন মেনে করা হয়নি। নকশার অনুমোদনও সঠিক নয়। রাজউকের একশ্রেণির দুনীির্তবাজ কমর্কতার্র যোগসাজশে বাড়ির মালিকরা তাদের ইচ্ছামতো ভবন তৈরি করেছে। নকশায় ৫ তলার অনুমোদন থাকলেও গড়ে তোলা হয়েছে সাত-আটতলা। আইন না মানার প্রবণতা এবং লোভী মানসিকতার কারণেই ঢাকার ঝুঁকিপূণর্ ভবনের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজধানী ঢাকার নগরায়ন পরিস্থিতি খুব নাজুক ও ঝুঁকিপূণর্। ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্বের দ্বিতীয় অবসবাসযোগ্য নগরীতে পরিণত হয়েছে। ঢাকায় রয়েছে সীমাহীন সমস্যা। সমস্যার পাহাড় ঠেলে মানুষ বসবাস করছে। এরপর যদি ভবন ধসে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে তবে এটাকে কেবল মানবিক বিপযর্য়ই বলা যাবে নাÑ কিছু মানুষের লোভ, দুনীির্ত ও নিষ্ঠুরতার ফল হিসেবেও ইতিহাসে চিহ্নিত হবে।