শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাদকের বিপজ্জনক বিস্তার রোধ করতে হবে

নতুনধারা
  ৩০ জুলাই ২০২১, ০০:০০

মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই মাদকসহ কেউ না কেউ গ্রেপ্তার হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৮ হাজার ৯৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ এক যাত্রীকে আটক করেছে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ। সৌদিতে পাচারের উদ্দেশ্যে এসব ইয়াবা নিয়ে আসে সাদ্দাম নামের এক যাত্রী। অন্যদিকে, রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে ইয়াবা ও বিয়ারসহ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। ২৭ জুলাই মঙ্গলবার মধ্যরাতে গুলশানের শাহাজাদপুর বাঁশতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এটা সত্য. মাদকের ভয়াবহ বিস্তার দেশের সবাইকেই উদ্বিগ্ন করেছে। এর বিষাক্ত ছোবল অকালে কেড়ে নিচ্ছে অনেক প্রাণ। অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণী হচ্ছে বিপথগামী। এ থেকে পরিত্রাণের আশায় ১৯৯০ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণীত হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনকল্পে ওই আইন ১৯৯০ সালের ১ ফেব্রম্নয়ারি প্রণয়ন করা হয়। এরপরেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। উন্নতি হয়নি দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়েও। উলেস্নখ্য, রাজধানীতে মাদকের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করা হয়। এর আগে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা করে সরকারের একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা। ওই তালিকা অনুযায়ী অভিযান শুরু করা হয়। এতে অনেকেই গা ঢাকা দেন। বাংলাদেশে মাদক উৎপাদন হয় না জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, 'পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে পাচার হয়ে মাদক আমাদের দেশে ঢুকছে। কিছু কুচক্রী মহল দেশে মাদকের বাজার তৈরি ও বিস্তারের পাঁয়তারা করে আসছে। এই মাদকের পাচাররোধে পার্র্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে।' তিনি আরু বলেন, আমরা ডোপ টেস্ট কার্যক্রম শুরু করেছি। ইতিমধ্যে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে এটি চলমান রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এটি সব পর্যায়ে চলবে। তবে আপাতত এটি বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের হাতে দিচ্ছি না। সর্বস্তরে ডোপ টেস্ট জরুরি। শিক্ষা জীবন থেকে শুরু করে চাকরি জীবনে প্রবেশের শুরুতে সর্বক্ষেত্রে যদি ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়, তবে মাদকের আগ্রাসন কমে যাবে। তার কথার সঙ্গে আমরা সহমত পোষণ করছি।

বাংলাদেশে ইয়াবা আর ফেনসিডিলের বাজার তৈরি হওয়ায় মিয়ানমার এবং ভারত সীমান্তে অসংখ্য ইয়াবা আর ফেনসিডিলের কারখানা গড়ে উঠছে। এসব কারখানায় বাংলাদেশের যুবসমাজকে ধ্বংস করার জন্য মিয়ানমার মরণ নেশা ইয়াবা এবং ভারত থেকে ফেনসিডিল উৎপাদন করে তা নির্বিঘ্নে সরবরাহ করা হচ্ছে। বলতে দ্বিধা নেই যে, এসব দেশে মাদক তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশের যুবসমাজের জন্যই। এখন প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে এ দেশ থেকে মাদক পাঠানো হচ্ছে। এই সংবাদ অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশঘেঁষা সীমান্তে মিয়ানমারে অসংখ্য ইয়াবা কারখানা গড়ে উঠেছে। সেসব কারখানায় কোটি কোটি পিস ইয়াবা তৈরি হচ্ছে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে দেশের অনেক রাঘব-বোয়াল জড়িত। আমরা মনে করি, এর সংখ্যা অনেক। এদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিতে পারলে আমাদের যুবসমাজকে রক্ষা করা যাবে না। সরকারের পরিকল্পিত ও সফল উদ্যোগই কেবল পারে যুবসমাজকে মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে রক্ষা করতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে