ডেঙ্গুর প্রকোপ

কার্যকর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে থমকে গেছে বিশ্ব। দেশে যেমন রোধ হচ্ছে না করোনাভাইরাসের সংক্রমণ, তেমনি মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। আর এমন পরিস্থিতির মধ্যে যদি মশাবাহিত আরেক আতঙ্ক 'ডেঙ্গু' হানা দেয় তবে তা কতটা ভীতিপ্রদ বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে বলার অপেক্ষা রাখে না। সঙ্গত কারণেই ডেঙ্গু পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এডিস মশা নির্মূল করে ডেঙ্গু সহনীয় পর্যায়ে আনতে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী। গত রোববার বিকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটোরিয়ামে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদারকরণ' তিনি এ নির্দেশনা দেন। এক্ষেত্রে বলা দরকার, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে ঢাকায় চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে উলেস্নখ মন্ত্রী বলেছেন, দুই-একজনের জন্য কোটি মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হতে পারে না। গুটি কয়েকের জন্য জনদুর্ভোগ ও কষ্ট কোনো ক্রমেই মেনে নেওয়া হবে না। এ কারণে যাদের বাসাবাড়িতে বা ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেককে জেল ও জরিমানা করা হয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। আমরা মনে করি, করোনাকালের এই ভয়াবহতার ভেতর এডিসসহ সব ধরনের মশা নিধন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। কেননা এটা মনে রাখা দরকার, এর আগে ডেঙ্গু পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগের হয়ে দেখা দিয়েছিল। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে যত দ্রম্নত সম্ভব প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। একদিকে করোনার আতঙ্ক অন্যদিকে ডেঙ্গু- এমন পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করে মশা নিধনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও সুষ্ঠু বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। বলা দরকার, দেশের হাসপাতালে ডেঙ্গুর আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলেও পত্রপত্রিকায় উঠে এসেছে। ফলে ডেঙ্গুর প্রকোপ আমলে নিয়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। গত বছর থেকে করোনার প্রকোপে বিপন্ন হয়েছে জনজীবন। ফলে যদি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে, তা হলে এর চেয়ে উদ্বেগের ঘটনা আর কী আছে! করোনা রোগীরাও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে, এমন সংবাদও পত্রিকার পাতায় উঠে আসছে। ফলে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এডিস মশা নির্মূল করে ডেঙ্গু সহনীয় পর্যায়ে আনতে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে যে নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী, সেটি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করা। এটাও বলা দরকার, এর আগে এমন বিষয় আলোচনায় এসেছে, কয়েক দিনের বৃষ্টি এডিস মশার বংশবিস্তারে প্রভাব ফেলছে। বৃষ্টিতে জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে মশা বংশবিস্তারের সুযোগ পায় এবং লার্ভার ঘনত্ব বেড়ে যায়। লার্ভার ঘনত্বের কারণে কিছু কিছু এলাকা ডেঙ্গু ঝুঁকিতে রয়েছে। ফলে নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। মনে রাখা দরকার, নির্মাণাধীন ভবন, খালি কনটেইনারে লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে। এসব থেকে নগরবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। বালতি, বোতলে কিংবা কোনো পাত্রে পানি যেন জমতে না পারে এজন্য কর্তৃপক্ষ ও নাগরিকদের খেয়াল রাখতে হবে। এ ব্যাপারে নগরবাসীকে সচেতন করার জন্য প্রয়োজনে প্রচার প্রচারণা আরও বাড়াতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশসহ সারা বিশ্বই যখন সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তখন ডেঙ্গু রোধেও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখা বাঞ্ছনীয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময় মশার উপদ্রব রোধ করা না গেলে পরিস্থিতি আরও বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। সঙ্গত কারণেই সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য। এটা ভুলে যাওয়া যাবে না, পরিকল্পিত ও কার্যকর উদ্যোগই কেবল পারে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে। তবে এ ক্ষেত্রে নাগরিক সচেতনতা ও সতর্কতার বিকল্প নেই।