অনলাইনে তৎপর জঙ্গিরা

নজরদারি বাড়াতে হবে

প্রকাশ | ০৪ আগস্ট ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বব্যাপী জঙ্গিরা এখন অনলাইনে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আমাদের দেশেও অনলাইনে জঙ্গি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দেশে বিভিন্ন সময় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টায় রয়েছে জঙ্গিরা। তারা এখন কৌশল বদলে অনলাইনে নিজেদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছে। তবের্ যাব ও পুলিশের নজরদারির কারণে জঙ্গিরা সক্রিয় হয়ে উঠতে পারছে না। এটা সত্য, সাম্প্রতিককালে দেশে জঙ্গিবাদী প্রত্যক্ষ কোনো অপতৎপরতা লক্ষ্য করা না গেলেও অনলাইনে তাদের তৎপরতা আগের তুলনায় বেড়েছে। অফলাইনে তাদের (জঙ্গিদের) তৎপরতা নেই, তবে তারা অনলাইনে সক্রিয়। কিছুদিন আগে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসার আল ইসলামের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা বেশ কিছু দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসার আল ইসলামের মতাদর্শের প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছিল। তারা উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উগ্রবাদ সম্পর্কিত বিভিন্ন লেখা প্রচার করত। গ্রেপ্তার দুজনের থেকে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয় এমন বই, জঙ্গিবাদে প্রচারণার কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, সিম, মেমরি কার্ড, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তারা পোস্ট করা উগ্রবাদী লিফলেট ও জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগের স্ক্রিনশট উদ্ধার করা হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে জঘন্যতম অধ্যায় হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা। ওই ঘটনার পর দেশব্যাপী কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট পরিচালিত ২৩টি 'হাইরিস্ক' অপারেশনে ২৩ জন জঙ্গি নিহত হয়েছেন। উলেস্নখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের পাঁচ নম্বর পস্নটের হোলি আর্টিজান বেকারি ও রেস্টুরেন্টে নারকীয় হামলা চালায় জঙ্গিরা। জঙ্গিদের হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২২ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ৯ জন ইতালির নাগরিক, ৭ জন জাপানি, একজন ভারতীয় নাগরিক, একজন বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক। বাকি দুজন হলেন- বাংলাদেশি নাগরিক। জঙ্গিরা নারকীয় হত্যাযজ্ঞের পর রাতভর ওই বেকারিতে বেশ কয়েকজন অতিথি ও বেকারির কর্মচারীদের জিম্মি করে রাখে। পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডোর নেতৃত্বে পুলিশ ওর্ যাবের যৌথ অভিযানে 'অপারেশন থান্ডারবোল্ট' পরিচালিত হয়। জিম্মি থাকা অন্তত ৩৫ জনকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কারণে ধারাবাহিক অভিযানে এখন জঙ্গিবাদ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। জঙ্গিবাদী নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে দেওয়ায় জঙ্গিদের বর্তমানে কোনো ধরনের নাশকতা কর্মকান্ড পরিচালনার সক্ষমতা নেই বললেই চলে। পাশাপাশি বিভিন্ন অভিযানে জঙ্গি আস্তানা থেকে উদ্ধার করা আলামত এবং তথ্যের ভিত্তিতে দেশীয় জঙ্গিদের সঙ্গে আইএসের কোনো কানেকটিভিটি পাওয়া যায়নি। আইনশৃঙ্খল বাহিনীর জঙ্গিবিরোধী কঠোর ভূমিকার কারণে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তারপরেও আশ্বস্ত হওয়ার সুযোগ নেই। মনে রাখতে হবে, অনলাইনে তৎপর জঙ্গিরা। যে কোনো সময় সহিংসতা ও নাশকতা ঘটাতে পারে। সুতরাং সর্বোচ্চ সতর্ক থাকাই সমীচীন।