ব্যাংক খাতে যোগ্য নেতৃত্বের সংকট

কাযর্কর পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রকাশ | ২৪ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বতর্মান বিশ্বে ব্যাংক খাতের গুরুত্ব কতটা তাৎপযর্পূণর্ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একটি দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি অজের্নর প্রশ্নে ব্যাংক খাতকে এগিয়ে নেয়া, সাবির্কভাবে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করাসহ যে কোনো ধরনের সংকট সৃষ্টি হলে তা সমাধানের কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। সঙ্গত কারণেই যদি ব্যাংক খাতের নেতৃত্বে সংকট আছে এমন বিষয় সামনে আসে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা মনে করি, পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে যত দ্রæত সম্ভব সংকট নিরসনে উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহাযর্। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, ব্যাংকিং খাতের ব্যবস্থাপনায় জড়িতদের নেতৃত্ব প্রদানের ক্ষমতা সন্তোষজনক নয়। অথচ সাম্প্রতিক কালে অথৈর্নতিক যে অগ্রগতি হচ্ছে তা ধরে রাখতে দরকার দক্ষ এবং যোগ্য নেতৃত্বের। এ ছাড়া বতর্মান ও আগামী দিনের ব্যাংকিং খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যোগ্য নেতৃত্ব তৈরির বিকল্প নেই এমন বিষয়ও সামনে এসেছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) করা এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব কথা উঠে এসেছে। সোমবার বিআইবিএমের অডিটোরিয়ামে ‘লিডারশিপ অ্যাপ্রোসেস, অ্যান্ড ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স : দ্যা কেস অব দ্যা ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রি অব বাংলাদেশ’ শীষর্ক জাতীয় সেমিনারে গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। আমরা উল্লেখ করতে চাই, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকে কমর্রতদের একটি বড় অংশের মতে কিছু ক্ষেত্রে ব্যাংকের ব্যবস্থাপকদের নেতৃত্ব খুব ভালো এবং আরও ভালো করার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া যোগ্য নেতৃত্ব ও সুশাসনের উন্নয়নে ব্যাংকিং খাতে বিশেষ প্রশিক্ষণ জরুরি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা মনে করি, গবেষণা প্রতিবেদনে যেসব বিষয় উঠে এসেছে সেগুলো আমলে নিতে হবে এবং পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে সংকট নিরসন করতে হবে। এটা ভুলে যাওয়া যাবে নাÑ যোগ্য নেতৃত্ব ছাড়া কোনোকিছুই সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আর যেহেতু একটি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে নানা ধরনের বিষয়ের সঙ্গে ব্যাংকব্যবস্থা জড়িত, ফলে এই খাতে যোগ্য নেতৃত্বের সংকট থাকলে তা এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেই আমরা মনে করি। আমলে নেয়া দরকার, সেমিনারে উপস্থিত বিআইবিএমের নিবার্হী কমিটির সভাপতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভনর্রও বলেছেন, ‘ব্যাংকের দক্ষ এবং কাযর্কর নেতৃত্বের সংকটের কারণে খেলাপি ঋণ, তারল্য সংকট এবং অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। এসব বন্ধ করতে যোগ্য নেতৃত্ব প্রয়োজন। একজন দক্ষ ব্যবস্থাপক অলাভজনক ব্যাংককে অল্প সময়ের মধ্যে লাভজনক করতে পারেন।’ বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশের ব্যাংকব্যবস্থা খেলাপি ঋণ, তারল্যসংকটসহ নানা ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হয়েছে। ফলে যোগ্য নেতৃত্ব নিশ্চিত করাসহ কাযর্কর পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে সৃষ্ট যে কোনো সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্টদেরই এগিয়ে আসতে হবে। আর এর জন্য ব্যাংকের যারা নেতৃত্ব দেবে তাদের যেমন ব্যাংকিং ধারণা স্পষ্ট থাকতে হবে, তেমনিভাবে দক্ষতা ও মেধা দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ ছাড়া পরিচালনা পষর্দ এবং শীষর্ ব্যবস্থাপনার মধ্যে ভালো সম্পকের্র বিষয়সহ যখন এমনটিও আলোচনায় এসেছে, যোগ্য নেতৃত্বই একমাত্র ব্যাংকিং খাতের বিপযর্য় রোধ করতে পারেÑ তখন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করাও অপরিহাযর্ বলেই আমরা মনে করি। সংশ্লিষ্টদের মনে রাখা দরকার, বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাতের উচ্চপযাের্য় নেতৃত্বেও সংকট প্রকট এমনটি উঠে এসেছে। ফলে এটা স্বাভাবিকভাবেই বলা যায়, সব কাজে দক্ষতা থাকলেও নেতৃত্বের গুণাবলি না থাকলে কাজে লাগবে না। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশ নানাভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে অগ্রগতির ধারায়। এ ক্ষেত্রে যোগ্য নেতৃত্ব নিশ্চিত করাসহ ব্যাংকব্যবস্থায় যে কোনো সংকট থাকলে তা নিরসনের মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে বতর্মানে ব্যাংকিং খাতের কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। কিছু বড় ব্যাংকিং খাতের অনিয়মের জন্য ব্যাংকাররা আংশিকভাবে দায়ীÑ এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ করা এবং যোগ্য নেতৃত্বের বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে পুরো ব্যাংকিং খাতের যে কোনো সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্টরা সবার্ত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখবেন এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।