বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মাদকের আগ্রাসন

কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
নতুনধারা
  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

মাদক সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে- বিভিন্ন সময়েই পত্রপত্রিকায় এমন খবর প্রকাশিত হয়। এছাড়া মাদকদ্রব্যের ব্যবহার বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে- এই বিষয়টিও বহুল আলোচিত। এ প্রসঙ্গে বলার অপেক্ষা রাখে না, মাদকদ্রব্যের ব্যবহার বাড়লে তা অত্যন্ত ভয়ানক। এটা লক্ষণীয়, শুধু শহর নয়- গ্রাম পর্যায়েও ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিল, প্যাথেডিনসহ নানা নেশাজাতীয় দ্রব্য ছড়িয়ে পড়েছে- এমন বিষয়ও বিভিন্ন সময়ে সামনে এসেছে, যা সামগ্রিক অর্থেই উদ্বেগজনক। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদকসহ ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১ হাজার ৬৭৯ পিস ইয়াবা, ১৫৮ গ্রাম ৫৫ পুরিয়া হেরোইন, ৪ কেজি ৩১০ গ্রাম ৭৫ পুরিয়া গাঁজা ও ১২ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। বুধবার সকালে ডিএমপির জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার ফারুক হোসেন জানিয়েছেন, '২১ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। আর তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৪৩টি মামলাও হয়েছে।

আমরা বলতে চাই, যখন মাদকসহ গ্রেপ্তারের ঘটনাটি সামনে আসছে, তখন এই ভয়ানক পরিস্থিতি আমলে নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। কেননা, এটা মনে রাখতে হবে, মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে এবং এর নেতিবাচক দিকগুলো এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। মাদকের জন্য সমাজ ও পরিবারে বিপর্যয় নেমে আসা, খুন, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধের ঘটনা ঘটছে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক এই পরিস্থিতি কতটা আশঙ্কাজনক তা বলাই বাহুল্য। সঙ্গত কারণেই আমরা মনে করি, এবারে গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং যারাই বিভিন্ন ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। একের পর এক ঘটনায় যখন মাদকের ভয়াবহতা সামনে আসছে, তখন বিষয়টি আমলে নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

প্রসঙ্গত, এর আগে এমন বিষয়ও সামনে এসেছে, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অবলীলায় জড়িয়ে পড়ছে মাদকের সঙ্গে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে যেমন যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি, তেমনি ধনী-দরিদ্র উভয় পরিবারের কিশোর-কিশোরী, বিশেষ করে তরুণসমাজ বিপথগামী হচ্ছে- এই বিষয়গুলো খবরে উঠে এসেছে বিভিন্ন সময়ে- যা সহজ করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। মনে রাখতে হবে, মাদক নিয়ন্ত্রণে আশানুরূপ পারিবারিক ও সামাজিক উদ্যোগের অভাব পরিলক্ষিত হলে এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সবাই, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ছাড়া 'মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা কর্তৃপক্ষ যত কঠোর অবস্থানেই থাকুক না কেন, জনগণ নিজে থেকে মাদক নিরাময়ে পদক্ষেপ না নিলে এ সমস্যা পুরোপুরি কখনোই সমাধান করা সম্ভব নয়।' এমন বিষয়ও এর আগে আলোচনায় এসেছে। ফলে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধিতেও ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে যেমন আইনের আওতায় আনতে হবে, তেমনিভাবে মাদকের বিস্তার রোধে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। এটা লক্ষ্য করা জরুরি, যখন বিভিন্ন সময়েই মাদকাসক্ত এবং মাদক ব্যবসায়ীরা গ্রেপ্তার হয়, তখন এটাও প্রতীয়মান হয়, মাদককারবারীরা সক্রিয়। এ ক্ষেত্রে সর্বাত্মক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে মাদকের আগ্রাসন রুখতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, সব ধরনের মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে যথাযথ উদ্যোগ জারি রাখা। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে যেমন আইনের আওতায় আনতে হবে, তেমনিভাবে মাদকের বিস্তার রোধে করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। মাদকের কারণে বিপর্যস্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, নষ্ট হয়ে যায় ভবিষ্যৎ, খুন থেকে শুরু করে নানারকম অপরাধপ্রবণতা তৈরি হয়- এই বিষয়গুলো এড়ানো যাবে না। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে, মাদকের আগ্রাসন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে