অনলাইনে যৌন হয়রানি

শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক

প্রকাশ | ৩১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যতই দিন যাচ্ছে অনলাইনে শিশু যৌন হয়রানির মাত্রা বেড়েই চলেছে। সুনিদির্ষ্ট আইন না থাকায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিশুরা যৌন হয়রানির ঘটনার যথাযথ বিচার হচ্ছে না বলে মত এসেছে এক আলোচনা সভায়। সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘অনলাইনে শিশু যৌন হয়রানি প্রতিরোধ: আইনি পযাের্লাচনা’ শীষর্ক ওই আলোচনা সভায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষ আইন করার দাবি তুলেছেন বক্তারা। ২০১১ সাল থেকে ২০১৮ সালের আগস্ট পযর্ন্ত ৬৮ জন শিশু অনলাইনে নিযার্তনের শিকার হয়েছে বলে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়। সাইবার অপরাধের শিকার ১৩৩ জন নারী ও পুরুষের ওপর পরিচালিত এক গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয় দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হলে অনলাইনে যৌন হয়রানির সংখ্যা অনেকটা কমে যাবে বলে নিযার্তনের শিকার ৪৪ শতাংশ মনে করেন। ৫৪ শতাংশ ভিকটিম যৌন হয়রানি বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভ‚মিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। শিশু যৌন হয়রানির বিষয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, তথ্য ও প্রযুক্তি আইন এবং পনোর্গ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের পযাের্লাচনা করে বক্তারা বলেন শিশুদের অপরাধ বা অপরাধের শিকার শিশুদের বিচার নিয়ে বাংলাদেশে কোনো আইনে স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই। শিশুরা এভাবে যৌন হয়রানির শিকার হবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে এ ব্যাপারে কাযর্কর পদক্ষেপ নিতে হবে। কেবল অনলাইনে শিশু যৌন হয়রানির শিকারই হচ্ছে না শিশু অপহরণ ও হত্যার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গিয়েছে। সমাজের একশ্রেণির ববর্র পাষÐ মানুষের হাতে শিশুর জীবনই বিপন্ন হয়ে পড়ছে, অবলীলায় জীবন চলে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আসামিরা ধরা পড়লেও তারা তাৎক্ষণিক কোনো শাস্তির সম্মুখীন হয় না। আইনি দীঘর্সূত্রতার কবলে পড়ে এসব মামলার ভবিষ্যৎ অন্ধকারে তলিয়ে যায়। দেশে শিশু ও নারী নিযার্তন রোধে একাধিক আইন রয়েছে। কিন্তু সে সব আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই। ফলে বেশিরভাগ সময়েই অপরাধীরা পার পেয়ে যায় এবং আবার অপরাধ সংঘটিত করে। তবে আশার কথা বিগত কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি শিশু হত্যার বিচার হয়েছে। এটা ইতিবাচক দিক। কিন্তু শিশু অপহরণ ও হত্যা তো থামছে না, থামছে না অনলাইনে শিশু যৌন হয়রানির ঘটনাও। এর প্রতিকার কী। আমাদের প্রশ্ন আর কত শিশু যৌন হয়রানির শিকার হবে, শিকার হবে অপহরণ ও হত্যার। যদি শিশুর যৌন হয়রানি, নিযার্তন ও হত্যা রোধ করা না যায় তা হলে সমাজ ও রাষ্ট্রে এটা এক ভয়ঙ্কর বিপদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। আমরা কোনোভাবেই প্রত্যাশা করি না, আর কোনো শিশু এভাবে যৌন হয়রানি কিংবা নিষ্ঠুর হত্যার শিকার হোক। এটা রোধ করা না গেলে একদিকে যেমন সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে অন্যদিকে আমাদের শিশুরাও থাকবে নিরাপত্তাহীন। তাই যে কোনো মূল্যে এটাকে রোধ করে সামাজিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকারকে দায় এড়িয়ে গেলে চলবে না। শিশু অধিকার সংরক্ষণ করা এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। শিশুর সঠিকভাবে বেড়ে ওঠা, তার বিকাশের ক্ষেত্রেও সমাজ ও রাষ্ট্রীয় উদাসীনতা একেবারে কম নয়। শিশু বিকাশে কোনো শতর্ তো মানা হচ্ছেই না। মনে রাখতে হবে আজকের শিশুরাই আগামী দিনে দেশের কণর্ধার, ভবিষ্যৎ কাÐারী। তাদের নিরাপত্তা যদি নিশ্চিত করা না যায় এবং রাষ্ট্র যদি তাদের মেধা বিকাশে ও নিরাপত্তা দানে কাযর্কর পদক্ষেপ না নেয় তবে তা কেবল দুভার্গ্যজনকই নয়, দেশের ভবিষ্যতের জন্যও হুমকিস্বরূপ।