ডেঙ্গুর প্রকোপ

যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে

প্রকাশ | ২৪ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বিপর্যস্ত বিশ্ব। এর প্রভাব পড়েছে প্রায় প্রত্যেকটি খাতে। বিঘ্নিত হয়েছে মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিকতা। দেশেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃতু্য থেমে নেই। ফলে এমন পরিস্থিতির মধ্যে যদি মশাবাহিত আরেক আতঙ্ক 'ডেঙ্গু' হানা দেয়, তবে তা কতটা ভীতিপ্রদ বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে বলার অপেক্ষা রাখে না। সঙ্গত কারণেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখা জরুরি। এ প্রসঙ্গে উলেস্নখ্য, বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে, দেশে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা ২২ হাজার ছাড়িয়েছে। একই সঙ্গে চলতি বছরে এই রোগে মৃতু্য হয়েছে ৮৪ জনের। আর আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২১ হাজার ১৩১ জন। জানা যায়, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত হাসপাতালে সর্বমোট রোগী ভর্তির সংখ্যা ২২ হাজার ৭ জন। সুস্থ হয়েছেন ২১ হাজার ১৩১ জন ও মারা গেছেন ৮৪ জন। আমরা মনে করি, সামগ্রিকভাবে ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে সামনে রেখে যত দ্রম্নত সম্ভব প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। করোনাকালের এই ভয়াবহতার ভেতর এডিসসহ সব ধরনের মশা নিধন কার্যক্রম অব্যাহত রাখাও অপরিহার্য। কেননা, এটা মনে রাখা দরকার, একদিকে করোনার আতঙ্ক অন্যদিকে ডেঙ্গু- ফলে এর ভয়াবহতা অনুধাবন করে মশা নিধনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও সুষ্ঠু বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দুই দশকের বেশি সময় ধরে দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব চলছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃতু্যর বছরভিত্তিক তথ্যও রাখছে। তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তও মৃতের সংখ্যা এর আগের সব বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়, ওই বছর এক লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল। ফলে সামগ্রিকভাবে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে ডেঙ্গু রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। একইসঙ্গে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতেও সার্বিক উদ্যোগ অব্যাহত রাখা জরুরি। এ প্রসঙ্গে আমরা বলতে চাই, এর আগে এডিস মশা নির্মূল করে ডেঙ্গু সহনীয় পর্যায়ে আনতে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছিলেন স্থানীয় সরকার, পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী। এমনকি যাদের বাসাবাড়িতে বা ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে- এমনটিও জানা গিয়েছিল। ফলে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় রেখে এর পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। এটা ভুলে যাওয়া যাবে না, করোনার প্রকোপে বিপন্ন হয়েছে জনজীবন। ফলে যদি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে, তাহলে এর চেয়ে উদ্বেগের ঘটনা আর কী আছে! আমরা মনে করি, নগরবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। বালতি, বোতলে কিংবা কোনো পাত্রে পানি যেন জমতে না পারে এজন্য কর্তৃপক্ষ ও নাগরিকদের খেয়াল রাখতে হবে। এ ব্যাপারে নগরবাসীকে সচেতন করার জন্য প্রয়োজনে প্রচার-প্রচারণা আরও বাড়াতে হবে। সর্বোপরি বলতে চাই, দেশে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা ২২ হাজার ছাড়িয়েছে- এই বিষয়টি এড়ানোর সুযোগ নেই। ফলে করোনাভাইরাস মোকাবিলার পাশাপাশি বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ডেঙ্গু রোধেও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখা বাঞ্ছনীয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময় মশার উপদ্রব রোধ করা না গেলে পরিস্থিতি আরও বেশি ভয়ংকর হয়ে উঠবে এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।