টিকা উৎপাদনে প্রস্তুত দেশ

যথাযথ বাস্তবায়ন হোক

প্রকাশ | ২৫ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে পুরো পৃথিবী যেমন বিপর্যস্ত হয়েছে, তেমনি দেশেও নানা ধরনের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এখনো থেমে নেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও সংক্রমণে মৃতু্য। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, করোনা মোকাবিলায় যেমন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ সতর্ক থাকা জরুরি, তেমনি টিকার বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গত কারণেই যখন এমনটি জানা যাচ্ছে যে- টিকা উৎপাদনে যেতে বাংলাদেশ প্রস্তুত; তখন বিষয়টি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক বলেই প্রতীয়মান হয়। তথ্য মতে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, টিকা কার্যক্রমে বিশ্বে আমরা এগিয়ে রয়েছি। বাংলাদেশ টিকা উৎপাদনে যেতে প্রস্তুত। এছাড়া এমনটিও খবরের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, টিকার জন্য কোনো টাকা-পয়সা নেওয়া হচ্ছে না এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে টিকা কার্যক্রম সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের বড় অর্জন। হাতে গোনা কয়েকটি দেশ বিনামূল্যে টিকা দিচ্ছে বলেও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। স্মর্তব্য যে, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক করোনার টিকা পাবে- এর আগে এমনটি উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, বাংলাদেশের কোনো মানুষই টিকাবঞ্চিত হবে না। সবাই যাতে টিকা পায়, সেই ব্যবস্থা করা হবে। ফলে যখন জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশ টিকা উৎপাদনের যেতে প্রস্তুত- তখন বিষয়টি যেমন ইতিবাচক তেমনিভাবে আশাপ্রদ। কেননা, টিকা উৎপাদনের মধ্য দিয়ে দেশ করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরো এগিয়ে যাবে বলে আশা করা অমূলক নয়। আমরা বলতে চাই, এর আগে গণটিকা কার্যক্রমে সাধারণ মানুষের মধ্যে টিকা গ্রহণের ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। ফলে টিকা গ্রহণে মানুষের আগ্রহ অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক- আর যখন টিকা উৎপাদনের বিষয়টি সামনে আসছে তখন এটা সুখকর। সঙ্গত কারণেই টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যে সামগ্রিক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই, এটাও মনে রাখতে হবে, এর আগে এমন বিষয় আলোচনায় এসেছিল যে, সংক্রমণ দূর করতে দেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় অন্তত ১২ থেকে ১৩ কোটি মানুষকে দুই ডোজ করে টিকা দেওয়া জরুরি। ফলে টিকা উৎপাদনের বিষয়টি করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলেই প্রতীয়মান হয়। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, টিকা সংক্রান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা এবং যেন অনিয়ম বা বিশৃঙ্খলা না হয় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া। এছাড়া টিকাদান কর্মসূচি সফল করার পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেও প্রচারণা চালাতে হবে। মানুষ যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনাগ্রহী হয়ে না ওঠে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। টিকা প্রয়োগের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে প্রচার-প্রচারণাসহ সামগ্রিক তৎপরতাও অব্যাহত রাখা জরুরি। মনে রাখা দরকার, করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা কমে এলেও করোনা নিমূর্ল হয়নি। ফলে কোনো অবস্থাতেই করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে গড়িমসি বা অসচেতনতা কাম্য নয়। সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, দেশের মানুষকে যেমন টিকার আওতায় নিয়ে আসা, তেমনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, সতর্ক থাকাসহ সর্বাত্মক উদ্যোগও অব্যাহত রাখতে হবে। এছাড়া বলা দরকার, বাংলাদেশে টিকা নিয়ে এর আগে উদ্বেগের বিষয়টি আলোচনায় এসেছিল। করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছিল, তা কেটে যাওয়ার খবরে সবার ভেতরেই স্বস্তি আসে। এখন টিকা উৎপাদনে যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক এবং মানুষের সচেতনতা বাড়ুক এমনটি কাম্য। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এটা ঠিক যে, করোনার টিকা কর্মসূচিতে প্রথম দিকে ছন্দপতন হয়েছিল, এরপর টিকা গ্রহণের মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে এবং আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর সম্প্রতি জানা যাচ্ছে টিকা উৎপাদনে দেশ প্রস্তুত- ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। একই সঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে, করোনা প্রতিরোধে টিকার বিষয়টি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা বা করোনা প্রতিরোধে সচেতনতার বিষয়টিও এড়ানোর সুযোগ নেই। বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন, এখনো সময় আছে, সবার সতর্ক হতে হবে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতেই হবে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। ফলে এই দিকগুলো আমলে নেওয়ার পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।