র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ

কঠোর পদক্ষেপ জরুরি

প্রকাশ | ০৭ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
গুম, অপহরণ, খুনসহ যখন একের পর এক অপরাধমূলক ঘটনা ঘটেই চলেছে, তখন তা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে সামনে আনে। আরও ভয়ানক বিষয় হলো, যদি র‌্যাবের পরিচয়ে কোনো ব্যক্তি বা চক্র অপরাধ করে তবে তা কতটা ভয়ানক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা মনে করি এই ধরনের ঘটনা ঘটলে তা এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার, পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা। এটা ভুলে যাওয়া সমীচীন নয় যে, এই ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা রোধ না হলে পরিস্থিতি ক্রমাগত ভয়াবহতার দিকে যাবে, জননিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে এবং জীবনযাপনের স্বাভাবিকতাও প্রশ্নবিদ্ধ হবে এমন আশঙ্কা থেকে যায়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণসহ নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে রোববার রাজধানীর কাউলা থেকে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। রোববার রাত ১০টার দিকে ঢাকার কাউলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোমবার কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেছেন যে, ‘ওই প্রতারকচক্রের সদস্যরা দীঘির্দন ধরে নানা অপরাধ চালিয়ে আসছিল। নিজেদের র‌্যাব পরিচয় দিয়ে তারা ভিকটিমদের গাড়িতে তুলে মারধর করে টাকা-পয়সা নিয়ে নিজর্ন স্থানে ফেলে দিত। এ অভিযানে র‌্যাবের জ্যাকেট, হাতকড়া, ওয়াকিটকি ও একটি মাইক্রোবাসও জব্দ করা হয়েছে। আমরা বলতে চাই, বিবেচনা করা দরকার যে, যদি অপরাধীরা র‌্যাব পরিচয় দিয়ে অপরাধ করার সাহস দেখায়, তবে সাধারণ মানুষের জন্য তা অত্যন্ত ভয়ানক বিষয়। এ ক্ষেত্রে আমরা এটাও বলতে চাই যে, এ ধরনের ঘটনা এই প্রথম নয়, এর আগেও বিভিন্ন সময়েই এ ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা ঘটেছে যা অত্যন্ত উৎকণ্ঠার। এবারে যে চক্রটি গ্রেপ্তার হয়েছে তারা মহাসড়কে ডাকাতি, ছিনতাই ও চঁাদাবাজিসহ নানা অপরাধে জড়িত ছিল বলেও জানা যায়। এ ছাড়া গত দুই মাসে অপহরণসহ ১৩টি অপরাধের কথা তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। আমরা বলতে চাই, এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চালানো জরুরি এবং যখন এমন বিষয় জানা যাচ্ছে যে, গ্রেপ্তার সাতজনের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেÑ তখন আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টিান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হোক। ভুলে যাওয়া যাবে না, অপরাধীরা পার পেলে আরও বেশি অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠতে পারে। আমরা বলতে চাই, যখন কেউ র‌্যাব পরিচয় এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে তখন নিঃসন্দেহে তা অপরাধ জগতের এক ভয়ানক চিত্র। এটা মনে রাখা দরকার, একদিকে অপরাধী শনাক্তকরণের কৌশল ও প্রযুক্তির উন্নতি যেমন ঘটছে, তেমনিভাবে অপরাধীরাও নতুন নতুন কৌশলে নিজেদের অপরাধমূলক ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেÑ এমন বিষয় পত্রপত্রিকায় বিভিন্ন সময়েই প্রকাশিত হয়েছে। প্রসঙ্গত বলা দরকার, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে যেখানে অপরাধী শনাক্ত করা হয়, সেখানে অপহরণকারীরা অপহরণের সময় খোদ ফুটেজগুলো সঙ্গে করে নিয়ে গেছেÑ এমন ঘটনাও ঘটেছে! ফলে আমরা মনে করি, কেউই যেন র‌্যাব, পুলিশ, ডিবি পরিচয়ে বা যে কোনো উপায়ে প্রতারণার ফঁাদে ফেলে মানুষকে জিম্মি করতে না পারে, সেই বিষয়টি আমলে নিয়ে সতকর্তামূলক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, বিগত কয়েক বছর ধরেই দেশের বিভিন্ন স্থানে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে নানাভাবেই। এমনকি নিরপরাধ শিশুরাও অপহরণের হাত থেকে রেহাই পায়নি। এবার যখন র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণসহ নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হলো, তখন তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে প্রাপ্ত তথ্য আমলে নিতে হবে। যারাই এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। মানুষকে জিম্মি করে নিজেদের ঘৃণ্য স্বাথর্ চরিতাথর্ করতে কেউ যেন কোনো অপরাধ করার সাহস না পায় সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত হবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।