পাঠক মত

নদীপথে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস করুন

প্রকাশ | ২৯ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশের রাজধানী তথা প্রাণকেন্দ্র ঢাকা। ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সব কাজেই ঢাকামুখী হতে হয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে। তার ব্যতিক্রম নয় শিক্ষার্থীরা। নিয়মিত পড়াশোনার খাতিরে যেমন হাজার হাজার শিক্ষার্থীর আনাগোনা ঢাকা আবার ঠিক তেমনি চাকরির পরীক্ষার সুবাদেও হাজার হাজার শিক্ষার্থীর ঢাকামুখী হতে হয় সপ্তাহে সপ্তাহে। নদীমাতৃক বাংলাদেশ। চারপাশেই পানির সমারোহ। তারই মধ্যে দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের ঢাকা আসা-যাওয়ায় সবচেয়ে সহজলভ্য রুট নৌপথ। যার মাধ্যমে দৈনিক হাজার হাজার শিক্ষার্থী ঢাকা আসা-যাওয়া করে। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের একটা চাওয়া ছিল নৌপথে তাদের ভাড়া অর্ধেক নেওয়া হোক। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের এ দাবি কেউ কানে নেয়নি। একজন শিক্ষার্থীর জন্য প্রতিবার ঢাকা আসা-যাওয়ায় যদি ভাড়াবাবদ ১০০০ টাকার বেশি চলে যায় তাহলে বাকি কাজগুলো তার জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। তার উপর বর্তমান পরিস্থিতিতে ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাড়ার পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। যা শিক্ষার্থীদের জন্য রীতিমতো একটা গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবাদস্বরূপ হাফ পাস নেওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত আন্দোলন-সংগ্রাম হচ্ছে। তাদের এ চাওয়া শুধু সড়কপথকে কেন্দ্র করেই না। তারা চায় নদীপথেও তাদের হাফ ভাড়া করা হোক। বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে হাফ পাস অথবা ফ্রি চলাচলের ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে আমাদের দেশে স্বাধীনতার পূর্ব থেকে এমন দাবি থাকা সত্ত্বেও কোনো সুফল আসেনি। বারবার শিক্ষার্থীদের তাদের অধিকারের জন্য রাস্তায় নামতে হয়। বাসের হেল্পার, চালকসহ বিভিন্ন জনের কাছে হেনস্তার স্বীকার হতে হয়। সরকারপক্ষ বিভিন্ন আশ্বাস দিলেও কোনোটারই সঠিক কোনো নির্দেশনা আসেনি। যেটা খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে কথা বলার এখনই উপযুক্ত সময়। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করা অতিদ্রম্নত সরকারের দায়িত্বশীলদের নদীপথ এবং সড়কপথে শিক্ষার্থীদের হাফ পাস ভাড়া কার্যকর করার প্রজ্ঞাপন আকারে দেওয়া হোক। যাতে সড়কপথ এবং নদীপথে শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে। মো. সায়েদ আফ্রিদী শিক্ষার্থী ঢাকা কলেজ সড়কে আর কত স্বপ্ন বিসর্জন এত আন্দোলন, সচেতন মহলের উদ্বেগ, বিশেষজ্ঞের মতামত আর সংশ্লিষ্ট মহলের আশ্বাসের পরও সড়কে কেন স্বপ্নগুলো বিসর্জন দিতে হচ্ছে। প্রতিদিনই কারও না কারও রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে রাজপথ। প্রতিটি শিক্ষার্থী ছিল দেশের ভবিষ্যৎ স্বপ্ন। কিন্তু আজকে তাদের পশুর মতো চাপা দিয়ে স্বপ্নের পৃথিবীকে বিদায় জানাতে হচ্ছে। দেশের সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে জানা যায় ২০২০ সালে সড়কে প্রাণ গেল ৭০৬ জন শিক্ষার্থীর। কেন এতগুলো স্বপ্ন আজকে বিসর্জন দিতে হচ্ছে! কেন আজকে স্বপ্নগুলো রাস্তায় রক্তে ভাসছে! এর পিছনে বড় কারণগুলো হলো, বাসচালকদের অশুভ প্রতিযোগিতা, রাস্তার মাঝখানে দাঁড় করিয়ে যাত্রী তোলা, যত্রতত্র থামানো, চলন্ত অবস্থায় চালকের মোবাইল ফোন ব্যবহার- সবই চলছে। ফিটনেসবিহীন লক্কড়ঝক্কড় বাসের চলাচল, উল্টোপথে বা ট্রাফিক সিগন্যাল না মেনে গাড়ি চালান, ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার কিংবা জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার না করেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হওয়ার ঘটনাও থেমে নেই। গবেষণায় দেখা গেছে, সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়াদের ৫৪ শতাংশের বয়স ১৬ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। আর দুর্ঘটনায় নিহতদের সাড়ে ১৮ শতাংশ ১৫ বছরের নিচে। বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট (এআরআই) বলছে, দেশে ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে। আর চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে ৩৭ শতাংশ। অর্থাৎ অনেক সম্ভাবনাময় প্রাণ ঝরে যাচ্ছে প্রতিদিন- এর যেন কোনো শেষ নেই, বিচার নেই। এভাবে প্রতিদিন কোনো না কোনো স্বপ্ন ধূলিসাৎ হচ্ছে সড়কে গাড়ির চাপায়। সড়ক দুর্ঘটনায় যথাযথ আইনের প্রয়োগ না হওয়ায় আজকে আমাদের স্বপ্নগুলো রাস্তায় বিসর্জন দিতে হচ্ছে। আর চাই না এমন বিসর্জন! তাই কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে এই দুর্ঘটনা বন্ধ করা প্রয়োজন। মাজহারুল ইসলাম শামীম শিক্ষার্থী ফেনী সরকারি কলেজ দেশে মাদকের অনুপ্রবেশ বন্ধ করা হোক মাদকাসক্তির আগ্রাসন ধীরে ধীরে গ্রাস করছে বর্তমান তরুণ সমাজকে। মাদকাসক্তি এমন একটি দুর্বার নেশা, এ নেশায় একবার অভ্যস্ত হয়ে পড়লে তা পরিত্যাগ করা অত্যন্ত কঠিন। মাদকাসক্ত ব্যক্তি কীভাবে ধ্বংসের পথে এগিয়ে চলে তা সে নিজেও বুঝতে পারে না। মাদকে অভ্যস্ত ব্যক্তি শুধু নিজের ধ্বংসই টেনে আনে না, জাতীয় জীবনকে এক ভয়াবহ পরিণামের দিকে ঠেলে দেয়। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা যায় মাদক ব্যবহারকারীদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই তরুণ বয়সি। মাদকের সহজলভ্যতা মাদকাসক্তির অন্যতম কারণ হলেও এর প্রধান কারণ তরুণদের ব্যক্তিগত হতাশা, ব্যর্থতা এবং অপ্রাপ্তি। এ ছাড়া চিকিৎসকের মতে ৭০ লাখ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হিসাবে ৭৩ লাখ এবং ইউএনডিপির হিসাবে ১ কোটি মাদকাসক্ত ব্যক্তি রয়েছেন। কিন্তু এ জরিপ কতটুকু সঠিক তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে জাতীয় পরিসংখ্যানে না থাকলেও এতটুকু বলা যায় এ হার কোনো অংশে কম নয়। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়টি বিভিন্ন কারণে ঘটনাবহুল, সমস্যা-সংকোচ, ব্যক্তিগত সম্পর্ক, আত্মোন্নয়ন এবং আধুনিক নগরজীবনের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে অনেকে এ বয়সে হতাশ, বিপথগামী এবং লক্ষ্যচু্যত হয়ে পড়ে। অনেকে এ সময় আত্মপরিচয় সংকটে ভুগে নিজেদের গুটিয়ে রাখে সমাজ থেকে। এতে তাদের ভিতর মানসিক চাপ, উদ্বেগ, বিষণ্নতা, মানসিক সমস্যা বৃদ্ধি পায় যা মাদকাসক্তির ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া ডিএনসির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী মাদকে আসক্তি ৫৮% বন্ধুর প্ররোচনায়, ৪০% কৌতূহলে, ৫৭.৩৭% বেকারত্ম্যে এবং ২৫.৩৮% অশিক্ষিত লোক মাদকে আসক্তি রয়েছেন। যার ফলে তরুণ সমাজে মাদকাসক্তির প্রভাব ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এ বৃদ্ধি পাওয়ায় শুধু তরুণ সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না- সমগ্র জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে হলে মাদকদ্রব্যের প্রাপ্তি সহজলভ্য যাতে না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। যে কোনো মূল্যে ঠেকাতে হবে মাদকের অনুপ্রবেশ। দেশে যাতে মাদকদ্রব্য উৎপাদন না হতে পারে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আহমেদ ইকবাল খাঁন ঢাকা