বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাসের ধাক্কায় শিক্ষার্থীর মৃতু্য এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা রোধ করতে হবে

নতুনধারা
  ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

এবার বাসের ধাক্কায় এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। রাজধানীর রামপুরায় বাসের ধাক্কায় এক শিক্ষার্থীর মৃতু্যর পর অন্তত ১০টি বাস পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় ভাঙচুর করা হয়েছে আরও চারটি বাস। সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রামপুরা বাজারে সোনালী ব্যাংকের সামনের রাস্তায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় মানুষের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তারা বিভিন্ন বাসে আগুন দিতে শুরু করে। এই ঘটনা খুবই মর্মান্তিক। তবে বাসে আগুন দেয়াও কোনো যৌক্তিক সমাধান নয়।

যতই দিন যাচ্ছে নানা কারণে শিক্ষার্থীর মৃতু্য হার বাড়ছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু মৃতু্যর ঘটনাও ঘটেছে। নানা উদ্যোগ তৎপরতার পরও কোনোভাবেই দুর্ঘটনা রোধ করা যাচ্ছে না। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান সংক্রান্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভাগীয় ও জেলা শহরে প্রতি বছর নিয়মিতভাবে বিআরটিএ'র উদ্যোগে রোড-শো,র্ যালি, সভা-সমাবেশ ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়। তারপরেও সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

গত ১৫ বছরে সড়ক পথে ৫৫ হাজার মানুষের মৃতু্য হয়েছে। ৭০ হাজার মামলাও হয়েছে বিভিন্ন দুর্ঘটনায়। অন্যদিকে রাজধানীতে বছরে ১৩৫ জনের প্রাণহানি ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনায়। ৩ বছরে ৬ জন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন রাজধানীতে। মানুষের জীবন যে কত তুচ্ছ তা এসব ঘটনার দ্বারা আবারও প্রমাণিত হলো। যোগ্য ও দক্ষ লোকেরাই যেন গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পায় তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব বিআরটিএর। যদি যোগ্য লোককে লাইসেন্স দেয়া হয় তা হলেই সড়ক দুর্ঘটনা কমে আসবে। এ ছাড়া চালকের বিশ্রামের বিষয়টিও ইদানীং আলোচনায় উঠে এসেছে। ঘুমহীনভাবে গাড়ি চালাতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটবেই। এ ছাড়া শিক্ষিত ও সচেতন চালক নিয়োগ দেয়াও জরুরি। মনে রাখতে হবে, বড় বড় দুর্ঘটনা থেকে যদি আমরা শিক্ষা নিতে না পারি তবে ভবিষ্যতেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে। দুর্ঘটনায় মৃতু্যর হার কমাতে হলে দোষীদের তাৎক্ষণিক শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনগণকেও নৌ, রেল ও সড়ক পথে ভ্রমণ ও রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে আরও সচেতন হতে হবে। এর পাশাপশি যারা শিশু নিয়ে রাস্তায় চলাচল করেন, তাদের আরও সচেতন হতে হবে। কারণ এই ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। যাদের উদাসীনতায় এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে এবং শিক্ষার্থীদের অকালে প্রাণ চলে যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এর আগে ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই পালস্না দিয়ে বাস চালাতে গিয়ে বিমানবন্দর সড়কে নির্মমভাবে এই দুই শিক্ষার্থীর মৃতু্য হয়। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে, নিজেরাই ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। এবারও শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিজেরাই ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। তাতেও সড়ক নিরাপদ হয়নি। বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল এক শিক্ষার্থীর। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। পরিকল্পিত ও সফল উদ্যোগই কেবল পারে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা রোধ করতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে