বেড়েছে নারীর ক্ষমতায়ন

অগ্রগতির ধারা অব্যাহত থাকুক

প্রকাশ | ১০ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মানব সভ্যতার উন্নয়ন এবং সামগ্রিকভাবে মানুষের জীবনযাপনের অগ্রগতির প্রশ্নে নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করার কোনো বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে যখন নারীর ক্ষমতা বাড়ছে এবং নারী যোগ্যতাবলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছে বলে জানা যাচ্ছে তখন তা অত্যন্ত ইতিবাচক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে। বলার অপেক্ষা রাখে না, সারাবিশ্বের বিভিন্ন দেশে রেকডর্সংখ্যক নারী নিবার্চনে দঁাড়াচ্ছেন, যা বৈশ্বিক রাজনীতির চেহারাও পাল্টে দিচ্ছে। আর যখন বাংলাদেশে আথির্ক অন্তভুির্ক্ত কাযর্ক্রমে বেড়েছে নারীর ক্ষমতায়ন এমন বিষয় সামনে এলো, তখন তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক বলেই আমরা মনে করি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, দেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৮ কোটি ১৩ লাখ। চলতি বছরের জুন পযর্ন্ত ব্যাংক খাতে মোট অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৯ কোটি ২ লাখ। অথার্ৎ অ্যাকাউন্টের ৯০ দশমিক ১২ শতাংশই ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক মানুষের। ক্ষুদ্র অ্যাকাউন্টে জমা আছে আমানতের মাত্র ৬ শতাংশ এবং বৃহৎ অ্যাকাউন্টে জমা আছে আমানতের ৯৪ শতাংশ টাকা। এ ছাড়া জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের আথির্ক অন্তভুির্ক্তমূলক নানাবিধ কাযর্ক্রমের ফলে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের সংখ্যার সঙ্গে বেড়েছে গ্রামীণ এলাকায় ক্ষুদ্র সঞ্চয়। এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ক্ষুদ্র সঞ্চয় বৃদ্ধির প্রভাবে নিশ্চিত হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়ন ও দেশের আথির্ক খাতের স্থিতিশীলতা। ফলে একদিকে আথির্ক খাতের স্থিতিশীলতা সৃষ্টি অন্যদিকে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হওয়াÑ এগুলো অত্যন্ত ইতিবাচক। বলা দরকার, এসব তথ্য উঠে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপাটের্মন্টের এক গবেষণায়। আমরা মনে করি, নারীর ক্ষমতায়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে কাযর্কর পদক্ষেপ জারি রাখতে হবে। ভুলে যাওয়া যাবে না, দেশের সাবির্ক সমৃদ্ধি অজের্নর ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করার সবার্ত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা জরুরি। প্রসঙ্গত বলা দরকার, প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আথির্ক খাতে নারীর অংশগ্রহণ এবং অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করার ফলে আথির্ক সেবায় নারীর প্রবেশাধিকার বাড়ছে এবং একই সঙ্গে বাড়ছে অথৈর্নতিক সম্পদে নারীর অংশীদারিত্ব এবং যার মাধ্যমে ঘটছে নারীর ক্ষমতায়ন। এ ছাড়া আথির্ক সেবায় ডিজিটাল পদ্ধতির প্রবতের্নর ফলে বিশেষত মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে নারীরা অধিক হারে প্রাতিষ্ঠানিক আথির্ক সেবা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। এর ফলে গ্রামীণ অথর্নীতিতেও নারীর ক্ষমতায়ন ঘটছে লক্ষণীয়ভাবে। আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশ ব্যাংক নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য সহায়ক পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নিদেশর্না ও পরামশর্ দেয়া ছাড়াও কিছু প্রণোদনা প্যাকেজ এবং পুনঃঅথার্য়ন স্কিম চালু করেছে এগুলো অব্যাহত রাখা এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা আবশ্যক। কেননা সমাজের মূলধারায় নারীর অন্তভুির্ক্ত, সঞ্চয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি পাচ্ছে এই বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপযর্পূণর্। এটা মনে রাখতে হবে যে, ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সালের মাঝামাঝি পযর্ন্ত নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের ক্রমবধর্মান অথার্য়নের ধারা এ কাযর্ক্রমকে আরও বেগবান করেছে। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, আথির্ক অন্তভুির্ক্ততে নারীর কাযর্ক্রম বেড়েছে এই বিষয়টি আমলে নিয়ে দেশের সামগ্রিক অগ্রগতির যাত্রায় নারীর অংশগ্রহণ আরও বেশি বৃদ্ধি পাক এমনটি কাম্য। নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা বজায় রেখে কাজ করলে দেশ অনেক এগিয়ে যাবে যা বলার অপেক্ষা রাখে না। মনে রাখতে হবে, মানুষের জন্য নিরাপদ ও বাসযোগ্য একটি সুন্দর পৃথিবী গঠনে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার ভিত্তিতে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই।