শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
পাঠক মত

সন্তানদের দিকে নজর দিন

নতুনধারা
  ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর দেশ। যে কোনো প্রয়োজনে গুগল করলেই হাজারো তথ্যের সমারোহ। দিনদিন সমাজ নির্ভরশীল হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির দিকে। নিঃসন্দেহে এর যেমন আশীর্বাদ আছে ঠিক তেমনি ক্ষতির ঝুড়িটাও ছোট নয়। আজকাল কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ কেউই থাকতে পারছে না এসবের বাইরে। এটা এমনই এক প্রযুক্তি যেখানে কোনো কিছু চাহিবা মাত্রই পাওয়া যায়। প্রয়োজন শুধুই ইন্টারনেট কানেকশন। আর এমনভাবেই সেন্সর করা এ সব যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা যখন যেটা খুঁজতে থাকে তখন সেটাই সবচেয়ে বেশি আসে এবং ধারাবাহিকভাবে আসতেই থাকে। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এখানে কাটিয়ে দিতেও ক্লান্তি অনুভব হয় না একজন ইউজারকে। আমাদের দেশে তরুণ প্রজন্মের বৃহৎ একটা অংশ আজকাল মোবাইল ইউস করে। মোটামুটি কোনো দ্বিধা দ্বন্দ্ব ছাড়াই বলা যায় বেশিরভাগ ইউজার অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করেন। তবে যে বিষয়টা করোনাকালে আমাদের দেখিয়েছে সেটা হলো পেস্ন থেকে সব স্টুডেন্ট অনলাইন ক্লাস করার কারণে ফোন ব্যবহার করছে। তবে যে বিষয়টা আশঙ্কাজনক শিক্ষার্থীরা সবসময় মোবাইল ফোন হাতে রাখে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় নিয়ে ব্যবহার করে। যার ফলে গেমস থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাধ্যমের ওপর তাদের একটা আধিপত্য থাকে। এ বয়সের অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সব অ্যাকাউন্টসহ লাইকি, টিকটক ব্যবহার করে। একটা পর্যায়ে তাদের এগুলোর মোহে নেশা জেগে যায়। ধারাবাহিকভাবে সম্পূর্ণ পড়াশোনা বিমুখ হয়ে যায়। পরবর্তী আর এগুলো ছেড়ে থাকতে পারে না। অনবরত পড়ার টেবিলে পড়ে আর মোবাইল স্কল করে। দিন শেষে এগুলো চরম বিপদের সম্মুখীন সৃষ্টি করে শিক্ষার্থীদের। বর্তমান পরিস্থিতিতে নিঃসন্দেহে ফোনের বিকল্প নেই তবে পরিবারের পক্ষ থেকে সবসময় তদারকি রাখা উচিত। নির্দিষ্ট সময়ে ফোন দেওয়া উচিত সবসময় ফোন হাতে না দিয়ে। অনেক অবিভাবক বাচ্চাকে ফোন দেয় নানান সংকট থেকে মুক্তি পেতে। সে ক্ষেত্রে বাটন ফোন দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। কেননা একজন শিক্ষার্থী ইচ্ছে করলে ২৪ ঘণ্টা কাটিয়ে দিতে পারে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে যেটা বাটন ফোনে সম্ভব নয়। অ্যান্ড্রয়েড ফোনের বিপাকে আজ লাখ লাখ শিক্ষার্থী। তারা এই জগতে নিয়মিত হয়ে পরিধি বাড়িয়ে দিনদিন বিভিন্ন সংকটে পড়ছে। বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে রাতারাতি যুক্ত হচ্ছে এবং এর মাধ্যমেই তৈরি হচ্ছে বড় বড় কিশোর গ্যাংসহ বিভিন্ন সংগঠন। সুতরাং অভিভাবকদের উচিত তাদের সন্তানদের দিকে নজর দেওয়া। তাদের বাটন ফোনের সঙ্গে পরিচিতি করা। অতি প্রয়োজন না হলে শিক্ষার্থীদের থেকে মোবাইল ফোন দূরে রাখা। বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে পরিবেশ এবং সমাজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে নিঃসন্দেহে। তবে এ চলাচলের যেন একটা লাগাম থাকে। লাগামহীন হলেই নেমে আসবে আগামীর শিক্ষার্থীদের জীবনে অমানিশা অন্ধকার। শিক্ষার্থীরা একটা সুন্দর পরিবেশে বেড়ে উঠুক এবং তাদের দেখাশোনার দায়িত্ব পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেবে এটাই কামনা করছি। প্রযুক্তির বদৌলতে তাদের সঠিক পরিবর্তনটা হোক। অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো কার্যকলাপে যেন জড়িয়ে না যায় সেদিকে সবসময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

মো. সায়েদ আফ্রিদী

শিক্ষার্থী

ঢাকা কলেজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে