বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে

সম্মিলিত উদ্যোগ জরুরি

প্রকাশ | ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশ বিভিন্ন দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, এই অগ্রগতি ধরে রাখতে সম্মিলিত প্রচেষ্টাও অপরিহার্য। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা গেল, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের 'সোনার বাংলা' গড়ার লক্ষ্যে সরকার ২০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আর এই বিষয়টি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'বাংলাদেশ আর পিছিয়ে যাবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ ইনশালস্নাহ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা গড়ে তুলব।' এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের শেখ হাসিনা কমপেস্নক্সে আয়োজিত 'ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স-২০২১' এবং 'আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স-২০২১'-এর গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এছাড়া শোষিত, বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সংগ্রাম এবং আধুনিক সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে তার নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। আমরা বলতে চাই, শিক্ষার বিস্তার, অর্থনীতিসহ আজ বাংলাদেশ নানা দিক থেকেই এগিয়ে যাচ্ছে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে বিশ্বের সামনে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। আর এমন পরিপ্রেক্ষিতে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশ আর পিছিয়ে যাবে না- তখন বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্র্ণ বলেই প্রতীয়মান হয়। আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রীর দেশকে এগিয়ে নেওয়ার যে দৃঢ় প্রত্যয়- তা সামনে রেখে সবার কাজ করতে হবে নিজ নিজ জায়গা থেকে। দেশকে এগিয়ে নিতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। প্রসঙ্গত, স্বাধীনতাপরবর্তী দেশ গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মকান্ড তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'মাত্র সাড়ে তিন বছরে এই বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উপযোগী ও প্রয়োজনীয় সশস্ত্র বাহিনীও গড়ে তোলেন তিনি (বঙ্গবন্ধু)। তিনি চেয়েছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশে আমাদের বাঙালিদের জন্য একটা পেশাদার, প্রশিক্ষিত ও শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলবেন।' এছাড়া সশস্ত্র বাহিনীর জন্য বঙ্গবন্ধুর নেওয়া বিভিন্ন কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী এমনটিও বলেছেন, 'তিনি সবসময় গণমানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করতেন। বিশেষ করে দেশের দরিদ্র, ক্ষুধার্ত- যাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না, রোগের চিকিৎসা পেত না, শিক্ষা পেত না; সেই মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের কথাই তিনি চিন্তা করেছেন। শুধু বাংলাদেশে না, সারা বিশ্বের দরিদ্র, নিপীড়িত মানুষের কথা আন্তর্জাতিক যে কোনো জায়গায় তিনি বলেছেন। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়- এই পররাষ্ট্রনীতিতে তিনি বিশ্বাস করতেন।' লক্ষণীয়, প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়য়েও আলোকপাত করেছেন যে, একটা সময় দেশের মানুষের পরনের কাপড়াটাও পুরনো- যা বিদেশ থেকে আমদানি করে পরানো হতো। ঘর নেই, বাড়ি নেই, পেটে খাবার নেই, চিকিৎসা নেই, শিক্ষা নেই। তেমনি একটি অবস্থায় দেশের মানুষ ধুঁকে ধুঁকে মারা যেত। হয়তো মুষ্টিমেয় লোক আর্থিক সুবিধা পেয়েছে। তবে অধিকাংশ মানুষ তিমিরেই ছিল। কিন্তু সেই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এমনটি জানিয়ে তিনি বলেছেন, 'জাতিসংঘ বাংলাদেশকে ইতোমধ্যে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তাদের সাধারণ অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে এটা পাস হয়েছে। জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছরে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছিলেন। আর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেলাম। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব। এখানে যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশ সদা প্রস্তুত।' সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, দেশকে এগিয়ে নেওয়ার যে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা- তার তাৎপর্য অনুধাবন করতে হবে এবং সামগ্রিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, যে জাতি বঙ্গবন্ধুর ডাকে অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছে, সেই জাতি অন্ধকারে পড়ে থাকবে, কোনো উন্নতি হবে না, তাদের জীবন ধারণের উন্নতি হবে না; এটা তো হতে পারে না। এছাড়া তিনি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির চিত্রও তুলে ধরেছেন 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' গড়ে তোলার প্রতিশ্রম্নতির বিষয়টিও সামনে এনেছেন। সার্বিক পরিস্থিতি সামনে রেখে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।