একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন ও জনভাবনা

জনগণের আশা দেশে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে দলগতভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অজর্ন করে সরকার গঠন করবে এবং এভাবে বাংলাদেশ আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দঁাড়াতে সক্ষম হবে।

প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ড. অরুণ কুমার গোস্বামী
একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। এখন দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সম্ভাব্য প্রাথীর্রা তাদের প্রাথির্তার জন্য ফরম সংগ্রহ এবং সমথর্ক সংগ্রহে ব্যস্ত। তাই একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনকে ঘিরেই বতর্মান বাংলাদেশের জনভাবনা প্রবাহিত হচ্ছে। নভেম্বর মাসের ৮ তারিখে প্রধান নিবার্চন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের তফসিল ঘোষণা করেছেন। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর মনোনয়নপত্র বিতরণ শেষ হয়েছে। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংগ্রহকারীদের সংখ্যা ছিল ১২০০টি এবং দশম জাতীয় সংসদ নিবার্চনের জন্য ২০১৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারীদের সংখ্যা ছিল ১৫৬৫টি। নভেম্বরের ১২ তারিখে মনোনয়নপত্র বিতরণ শেষ হয়েছে। নভেম্বরের ১৪ তারিখ মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হবে। প্রথমে নিবার্চনের তারিখ ধাযর্ করা হয়েছিল ডিসেম্বরের ২৩ তারিখ। তবে নিবার্চন কমিশন বলছে সব দল সম্মত হলে তারা নিবার্চনী তফসিল পুনবির্ন্যাস করতে পারে। তাই তারিখ নিধাির্রত হয়েছে ৩০ ডিসেম্বর। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এব্যাপারে তাদের আপত্তি না থাকার কথা বলেছিলো। সবের্শষ খবর অনুযায়ী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট (বিএনপিসহ) ১১ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে দেয়া এক ঘোষণায় নিবার্চনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে। জাতীয় পাটির্ তাদের কেন্দ্রীয় কাযার্লয় থেকে মনোনয়নপত্র বিতরণের কাজ শুরু করেছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোও মনোনয়নপত্র বিতরণের কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি এটিও লক্ষণীয় যে, এই মুহ‚তের্ বাংলাদেশের রাজনীতি, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে কেন্দ্র করে আবতির্ত হচ্ছে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত দশ বছরের (২০০৯-২০১৮) শাসনামলে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্যভাবে এগিয়ে চলার মাধ্যমে ‘উন্নয়নের রোল মডেল’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মযার্দা লাভ করেছে। আর এসবই অজির্ত হয়েছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদশের্র প্রতি বতর্মান সরকারের দৃঢ়ভাবে একনিষ্ঠ থাকার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য, অসাম্প্রদায়িক, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের কারণে। গত ১ নভেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর পযর্ন্ত প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ‘গণভবনে’ নিবার্চনমুখী সব রাজনৈতিক দল ও জোট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সংলাপে অংশগ্রহণ করেছেন। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, এতিমদের অথর্ আত্মসাতের মামলায় এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তার পুত্র ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় আর এক সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমান কতৃর্ক অপমানের মাধ্যমে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট, সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদ এবং তার পতœী দশম জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পাটির্, বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট, এবং সবের্শষ গতকাল জাতীয় হিন্দু মহাজোট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের দাবি-দাওয়া পেশ করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশের ৪৭ বছরের ইতিহাসে এমনটি আর কখনোই দেখা যায়নি। বাংলাদেশে গণতন্ত্র সংহতকরণ তথা গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের জন্য এধরনের সংলাপ এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে গণতন্ত্রের ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রায়নের পথে এই সংলাপকে জাতির পিতার কন্যা, গণতন্ত্রের মানসকন্যা দেশরতœ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গণতান্ত্রিক চেতনা, এ দেশের অদ্বিতীয় অনন্য নেতৃত্বের অবস্থান হিসেবে আখ্যায়িত করা সঙ্গত। জননেত্রী শেখ হাসিনার অসাধারণ ও মানবিক গুণসম্পন্ন নেতৃত্বের ছোট্ট একটি ঘটনা এখানে উল্লেখ করছি। যে দল বঙ্গবন্ধু কন্যাকে গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে হত্যা করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছিল সেই দলের সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম আলমগীর গণভবনে যখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন তখন তার স্বাস্থ্য খারাপের খবর নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে উপযুক্ত চিকিৎসার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রহণ করেছেন। এমনকি শত্রæভাবাপন্ন কোনো ব্যক্তির মঙ্গল আকাক্সক্ষা করতে পারতেন বঙ্গবন্ধু। আর এখন এমন অনন্য সাধারণ নজির সৃষ্টি করছেন জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা দেশরতœ শেখ হাসিনা। সাধারণভাবে এটি সুবিদিত যে, বাংলাদেশের রাজনীতি দুই ভাগে বিভক্ত, একদিকে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বিরোধী গোষ্ঠী। মজার ব্যাপার হচ্ছে, বতর্মানে এমনকি যারা আওয়ামী লীগ বিরোধী শিবিরে অবস্থান করছেন তাদেরও ভরসাস্থল হচ্ছেন জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী দেশরতœ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনকি আওয়ামী লীগ বিরোধী জোট যা ইতোপূবের্ বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন জোট হিসেবে পরিচিত ছিল এবং এখন ড. কামালের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক দল, তারা অতঃপর ধ্বংসাত্মক সব পথ অনুসরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করে অবশেষে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তাদের রাজনীতি পরিচালিত করতে বাধ্য হয়েছে। এসবই জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি এ দেশের মানুষের আস্থা, বিশ্বাস ও জনপ্রিয়তার প্রমাণ। গত ৫ নভেম্বর প্রকাশিত সবের্শষ জরিপের ফলাফল অনুযায়ী আওয়ামী লীগ ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় সাধারণ নিবার্চনে ১৭৩টি আসন এবং মহাজোটগতভাবে ২০২টি আসনে জয় লাভ করার পূবার্ভাস পাওয়া যাচ্ছে। ইতোপূবের্ গত ১ নভেম্বর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর ৭ নভেম্বর দ্বিতীয়বার সাক্ষাৎ করেছেন। দ্বিতীয়বার সাক্ষাৎকালে দ্বিতীয়বার সাক্ষাৎ শেষে ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাস ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা ‘আলোচনা ও আন্দোলন’ একই সঙ্গে চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। বৈঠক সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যমে জানা গিয়েছে দ্বিতীয়বার সংলাপের বৈঠকের সময় লিখিতভাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আদলে একজন প্রধান উপদেষ্টা ও ১০ জন সদস্যের উপদেষ্টাবিশিষ্ট নিবার্চনকালীন সরকারের প্রস্তাব দিলে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সরাসরি তা নাকচ করে দিয়েছেন। বস্তুত পক্ষে বতর্মান বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনীতির প্রকাশ্য অবস্থান হচ্ছে নিবার্চনকালীন তত্ত¡াবধায়ক সরকার ধরনের সরকারব্যবস্থা কায়েম করা। বলা বাহুল্য, ২০১১ সালের ১০ মে সুপ্রিম কোটর্ তার সংক্ষিপ্ত রায়ে তত্ত¡াবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে সংবিধানের মৌলিক চেতনার সঙ্গে সাংঘষির্ক হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। রায়ে বলা হয়েছিল, ঞযব ঈড়হংঃরঃঁঃরড়হ (ঞযরৎঃববহঃয অসবহফসবহঃ) অপঃ, ১৯৯৬ (অপঃ ড়ভ ১৯৯৬) রং ঢ়ৎড়ংঢ়বপঃরাবষু ফবপষধৎবফ াড়রফ ধহফ ঁষঃৎধ ারৎবং ঃড় ঃযব ঈড়হংঃরঃঁঃরড়হ. বাতিলকৃত ত্রয়োদশ সংবিধান সংশোধনী দ্বারা স্থাপিত সংবিধানের ৫৮ (গ), (ঘ), এবং (ঙ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল সংসদ বাতিল হওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ১১ সদস্য বিশিষ্ট নিদর্লীয় তত্ত¡াবধায়ক সরকার গঠিত হতো। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট একই আদলে প্রধান উপদেষ্টা এবং ১০ জন উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করার অসাংবিধানিত দাবি জানিয়েছে। বিএনপি-জামায়াত তথা বতর্মান জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সমথির্ত তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা তাদের গবেষণার মাধ্যমে এই দাবির প্রতি জনসমথর্ন অব্যাহত রাখার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ১৫তম সংবিধান সংশোধনীতে তত্ত¡াবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের কথা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী, স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বিলুপ্তি ঘটেছে বহুল আলোচিত ও গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেতবিশিষ্ট তত্ত¡াবধায়ক সরকারব্যবস্থা। এই সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ‘মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবার পূবর্বতীর্ নব্বই দিনের মধ্যে নিবার্চন অনুষ্ঠিত হইবে’। যার সরল অথর্ দঁাড়ায়, বতর্মান সরকারের মেয়াদের শেষ ৯০ দিনে একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন অনুষ্ঠিত হবে। সে ক্ষেত্রে বতর্মান প্রধানমন্ত্রী, তার মন্ত্রিসভা ও বতর্মান সংসদ সদস্য সবাই ওই ৯০ দিনেও স্বপদে বহাল থাকবেন। স্ব স্ব পদে বহাল থেকেই তারা নিবার্চনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করবেন। তবে দেশরতœ শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে তার মন্ত্রিসভা থেকে চারজন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীকে পদত্যাগ করিয়েছেন। যারা মূলত ছিলেন অনিবাির্চত। এটিও প্রধানমন্ত্রীর গণতান্ত্রিক মানসিকতার পরিচায়ক। মূলত ২০০১-এর নিবার্চনে জামায়াত-বিএনপি জোট সূ² কারচুপির মাধ্যমে অষ্টম জাতীয় সংসদ নিবার্চনে জয়লাভ করার পর থেকেই আওয়ামী লীগ তত্ত¡াবধায়ক সরকারের কারচুপির বিষয়টি সিরিয়াসলি গ্রহণ করে। ২০০১-এ তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে নিবার্চনকালে সূ² কারচুপি, এবং সংখ্যালঘু ও আওয়ামী লীগ নেতাকমীর্ ও সমথর্কদের ওপর নারকীয় হামলা চালানো হয়েছিল। ২০০১-এর নিবার্চনের পরে সিআরআই কতৃর্ক প্রকাশিত অ জরমমবফ ঊষবপঃরড়হ : অহ ওষষবমরঃরসধঃব এড়াবৎহসবহঃ : ইধহমষধফবংয ঊষবপঃরড়হ ২০০১ শীষর্ক গবেষণা কমের্ ২০০১-এর নিবার্চনের ভয়াবহ চিত্র পাওয়া যায়। এরপরে, ২০০৬ সালে ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিনের তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে নিবার্চনের আগে বতর্মান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সব রাজনীতিকদের ওপর নেমে আসে অত্যাচার। প্রধান প্রধান রাজনৈতিক শক্তিগুলোর পুরোধা ব্যক্তিত্বদের প্রতি এইরূপ অন্যায়, অত্যাচার ও জুলুমের পর থেকে ‘তত্ত¡াবধায়ক সরকার’ব্যবস্থার ওপর থেকে মানুষের আস্থা সম্পূণর্রূপে নিঃশেষিত হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল বিএনপি-জামায়াত জোট দীঘির্দন ধরে তাদের অনুসৃত ‘খুনের রাজনীতি’র মাধ্যমে ‘নিবার্চনকালীন তত্ত¡াবধায়ক সরকার’ব্যবস্থার অধীনে নিবার্চন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে আসছিল। আর এই দাবি আদায়ের জন্য তারা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নিবার্চনের আগে ও পরে সারা বাংলাদেশে আগুন বোমা হামলা করে মানুষ হত্যা, স্কুল পুড়িয়ে দেয়া, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ প্রভৃতি দেশবিরোধী কাজে সম্পৃক্ত ছিল। এত কিছুর পরেও তারা তত্ত¡াবধায়ক সরকারের দাবিতে অটল ছিল এবং এখনো আছে। স্বাধীনতাবিরোধী এই চক্র এতটাই শক্তিশালী যে তারা তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সমথের্ন এমনকি পিএইচডি ডিগ্রি করছে। এমনই একটি পিএইচডি থিসিস করেছে আনোয়ারা বেগম। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগ সূত্রে জানা যাচ্ছে এ সম্পকির্ত কিছু তথ্য। থিসিসটির শিরোনাম ‘তত্ত¡াবধায়ক সরকার ও বাংলাদেশের সাধারণ নিবার্চন : একটি মূল্যায়ন’। আনোয়ারা বেগম কতৃর্ক লিখিত এই থিসিসটিতে তত্ত¡াবধায়ক সরকারব্যবস্থার প্রতি অকুণ্ঠ সমথর্ন জ্ঞাপন করা হয়েছে। গবেষক বলছেন, ‘তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নিবার্চনগুলোতে জনগণের নিবার্চন সম্পকের্ আস্থা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। কেননা তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সময় যথাসম্ভব নিরপেক্ষভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হয়।’ স্পষ্টত বিএনপি-জামায়াত তথা বতর্মানের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে এটি একটি শক্তিশালী গবেষণা। তত্ত¡াবধায়ক সরকারের প্রতি প্রবল আস্থা এবং মুক্তিযুদ্ধের আদশের্র বিরুদ্ধে আন্তরিক মনোভাব থাকলেই কেবল এ ধরনের গবেষণা করা সম্ভব। পযের্বক্ষক মহলের ধারণা এই গবেষণা বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রের অংশ এবং তাদের দাবিকে শক্তিশালী করার জন্যই করা হয়েছে। তবে এত কিছুর পরেও মুক্তিযুদ্ধের আদশির্ক শক্তির প্রধানতম ধারক প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের বিশ্বাস, আস্থা ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সবের্শষ খবরেও জানা যাচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি দ্বিতীয়বার সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আদলে প্রস্তাব দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগ তথা ১৪ দলের পক্ষ থেকে তা অগ্রহণযোগ্য হিসেবে বাতিল করে দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা সবাইকে নিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক নিবার্চন চাই। দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে আওয়ামী লীগই। তাই আমরা চাই, নিবার্চনে সব দল অংশগ্রহণ করুক। এ জন্য আমরা অনেক ছাড় দিচ্ছি। কিন্তু সংলাপের আড়ালে কেউ যদি নিবার্চন বানচালের ষড়যন্ত্র করে সে ষড়যন্ত্র সফল হতে দেয়া হবে না। অন্তত আমি বেঁচে থাকতে এই ষড়যন্ত্র সফল হতে দেব না।’ প্রধানমন্ত্রী ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা যদি অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নিবার্চন চান, জনগণের অধিকারের নিবার্চন চান সেটি আলাদা কথা। কিন্তু আপনাদের যদি অন্য মতলব থাকে তাহলে সেই মতলব ঝেড়ে ফেলুন। আমি বেঁচে থাকতে সেই মতলব সফল হতে দেব না। এদিকে গধপযরহব খবধৎহরহম অৎঃরভরপরধষ ওহঃবষষরমবহপব ধহফ ঘবঃড়িৎশ অহধষুংরং ভড়ৎ এড়ড়ফ এড়াবৎহধহপব (গঅঘএঙ) সংক্ষেপে ম্যাঙ্গো কতৃর্ক পরিচালিত দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় খুলনা বিভাগে এক জরিপে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা সম্পকের্ জানা যাচ্ছে। এই জরিপে বলা হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় খুলনা বিভাগে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা এখন ৮১.৫০ শতাংশ। আর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি সমথর্ন ১৮.৫০ শতাংশ। জনগণের আশা দেশে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে দলগতভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অজর্ন করে সরকার গঠন করবে এবং এভাবে বাংলাদেশ আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দঁাড়াতে সক্ষম হবে। প্রফেসর ড. অরুণ কুমার গোস্বামী: পরিচালক, সাউথ এশিয়ান স্টাডি সাকের্ল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়