গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ

সাবধানতার বিকল্প নেই

প্রকাশ | ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দুযোর্গ দুঘর্টনা যেন পিছু ছাড়ছে না বাংলাদেশের মানুষের। এক দুযোর্গ দুঘর্টনা আসে, আমরা মোকাবেলা করি; আবার অন্য দুযোর্গ দুঘর্টনা এসে হাজির হয়। আমরা এখন দুযোর্গ দুঘর্টনাপ্রবণ দেশে মহাতঙ্ক নিয়ে বাস করছি। মৃত্যু যেন বাঙালির দুয়ারে দুয়ারে কড়া নাড়ছে। কোনো অনিরাময়যোগ্য ঘাতকব্যাধি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়লে ওই অঞ্চলের মানুষের যে অবস্থা হয়, আমাদের অবস্থা অনেকটা সে রকম। এমনিতেই খরা, বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ¡াস, নদীভাঙন ও টনেের্ডার সঙ্গে যুদ্ধ এবং তা মোকাবেলা করে আমাদের বেঁচে থাকতে হয়; জীবন-জীবিকার সংগ্রামেও আমরা অনেকটা পযুর্দস্ত ও কাবু। তার ওপর যদি দুঘর্টনা আতঙ্ক আমাদের মধ্যে কাজ করে এবং মৃত্যুচিন্তা ভর করে মাথার ওপর, তাহলে দৈনন্দিন জীবন এমনিতেই থেমে যাবে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর এক বাসায় রান্নাঘরের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে, আগুনে দগ্ধ হয়েছেন আরও ছয়জন। দোতলা ওই বাড়ির নিচতলার একটি বাসায় সিলিন্ডার থেকে কোনোভাবে ঘরে গ্যাস জমে গিয়েছিল। সকালে কেউ চুলা ধরাতে গেলে পুরো ঘরে আগুন ধরে যায় এবং বিস্ফোরণে ঘরের এক পাশের দেয়াল ধসে পড়ে। উল্লেখ্য, ওই ঘরটি জানালাবিহীন ছিল। প্রতিদিনই আমরা কোনো না কোনোভাবে দুঘর্টনার খবর পাচ্ছি। হয় গ্যাসের চুলা লিগেজ হওয়ার কারণে না হয় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হওয়ার জন্য। এই সব দুঘর্টনায় হয় কেউ মৃত্যুবরণ করছে না হয় আহত দগ্ধ হচ্ছে। এর আগে মানিকগঞ্জের ঘিওরে একটি যাত্রীবাহী বাসের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অন্তত ২০ জন দগ্ধ হয়েছিল। বাসাবাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এমনকি বেলুনে গ্যাস ভরার সময়ও গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটেছে। গ্যাস বিস্ফোরণ ও দুঘর্টনা এখন অহরহই ঘটছে এবং এতে হতাহতের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এর দ্বারা এটাই বোঝা যায় যে, এই ধরনের দুঘর্টনা যে কোনো সময় ঘটতে পারে। এর আগে তিতাস গ্যাসের লাইনেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ জনসংখ্যাবহুল একটি দেশ। এখানে রয়েছে হাজারো সমস্যা ও সঙ্কট। এর সঙ্গে যদি প্রায়ই গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে কিংবা গ্যাসের চুলা থেকে আগুন লেগে মানুষ মারা যায়, আহত ও দগ্ধ হয় তা হলে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। এ কথা সত্য, রাজধানী ঢাকা ও বন্দর নগরীতে তীব্র গ্যাস সঙ্কট দেখা দিয়েছে। প্রয়োজনের অধের্ক গ্যাসও পাচ্ছে না অনেক প্রতিষ্ঠান। বাসাবাড়িতেও একই অবস্থা। গ্যাসের চাপ না থাকায় উৎপাদন কমে গেছে। দীঘির্দন ধরে চলা এই সমস্যা সম্প্রতি তীব্র আকার ধারণ করেছে। এই অবস্থায় অনেকেই গ্যাস সিলিন্ডারের ওপর নিভর্রশীল হয়ে পড়েছে। আমাদের কথা হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা যদি বাড়তে থাকে তবে একদিকে যেমন জনগণ আতঙ্কিত হয়ে পড়বে, অন্যদিকে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের ক্ষেত্রেও আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। পরিবেশ দূষণ রোধে দেশের বেশির ভাগ যানবাহনই সিএনজিতে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এটা একটা ভালো দিক। কিন্তু যত্রতত্র যদি বাসে সিএনজিতে অথবা বাসাবাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার দুঘর্টনা ঘটে তা নিতান্তই দুঃখজনক। এ ক্ষেত্রে সচেতনতা ও সাবধানতার বিকল্প নেই।