শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
পাঠক মত

দেশে মাদকের অনুপ্রবেশ রোধ করা হোক

নতুনধারা
  ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

মাদকাসক্তির আগ্রাসন ধীরে ধীরে গ্রাস করছে বর্তমান তরুণ সমাজকে। অথচ এটা বলাই বাহুল্য, তরুণরাই প্রধান চালিকা শক্তি। তরুণদের হাত ধরে এগিয়ে যাবে দেশ। ফলে তরুণ সমাজকে যদি মাদক গ্রাস করে নেয়, যদি মাদকের ছোবলে দিশাহারা হয়ে যায় তরুণ সমাহ, তবে তার ভয়াবহতা অনুমান করা কঠিন নয়। মাদকাসক্তি এমন একটি দুর্বার নেশা, এ নেশায় একবার অভ্যস্থ হয়ে পড়লে তা পরিত্যাগ করা অত্যন্ত কঠিন। আরো ভয়ানক বিষয় হলো, মাদকাসক্ত ব্যক্তি কীভাবে ধ্বংসের পথে এগিয়ে চলে তা সে নিজেও বুঝতে পারে না। আর তাই মাদকে অভ্যস্থ ব্যক্তি শুধু নিজের ধ্বংসই টেনে আনে না, জাতীয় জীবনকে এক ভয়াবহ পরিণামের দিকে ঠেলে দেয়। মাদক গ্রহণের ফলে পারিবারিক অশান্তি থেকে শুরু করে নানা ধরনের অপরাধপ্রবণতাও বাড়তে থাকে। যার প্রভাব পড়ে সমাজে। এমনকি মাদকের টাকা জোগাড় করতে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটে। ফলশ্রম্নতিতে দেখা দেয় সামিগ্রকভাবেই এক উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা যায় মাদক ব্যবহারকারীদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই তরুণ বয়সী। মাদকের সহজলভ্যতা মাদকাসক্তির অন্যতম কারণ হলেও এর প্রধান কারণ তরুণদের ব্যক্তিগত হতাশা, ব্যর্থতা এবং অপ্রাপ্তি। এছাড়াও চিকিৎসকের মতে ৭০ লাখ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের হিসাবে ৭৩ লাখ এবং ইউএনডিপি'র হিসাবে ১ কোটি মাদকাসক্ত ব্যক্তি রয়েছেন। কিন্তু এ জরিপ কতটুকু সঠিক তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে জাতীয় পরিসংখ্যানে না থাকলে ও এতটুকু বলা যায় এ হার কোনো অংশে কম নয়। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়টি বিভিন্ন কারণে ঘটনাবহুল, সমস্যা-সংকোচ, ব্যক্তিগত সম্পর্ক, আত্মোন্নয়ন এবং আধুনিক নগর জীবনের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে অনেকে এ বয়সে হতাশ, বিপথগামী এবং লক্ষচু্যত হয়ে পড়ে। অনেকে এ সময় আত্মপরিচয় সংকটে ভুগে নিজেদের গুটিয়ে রাখে সমাজ থেকে। এতে তাদের ভিতর মানসিক চাপ, উদ্বেগ, বিষণ্নতা, মানসিক সমস্যা বৃদ্ধি পায় যা মাদকাসক্তির ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও ডিএনসির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী মাদকে আসক্তি ৫৮% বন্ধুর পরোচনায়, ৪০% কৌতূহলে, ৫৭.৩৭% বেকারত্ম্যে এবং ২৫.৩৮% অশিক্ষিত লোক মাদকে আসক্তি রয়েছেন। যার ফলে তরুণ সমাজে মাদকাসক্তির প্রভাব ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এ বৃদ্ধি পাওয়াতে শুধু তরুণ সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না সমগ্র জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে হলে যেমন সচেতনতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। একইভাবে মাদকদ্রব্যের প্রাপ্তি সহজলভ্য যাতে না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। নজরদারি বাড়াতে হবে। কেননা মাদক সহজলভ্য না হলে মাদকের আগ্রাসন কমে আসবে বলেই প্রতীয়মান হয়। অর্থাৎ যেকোনো মূল্যে ঠেকাতে হবে মাদকের অনুপ্রবেশ। দেশে যাতে মাদকদ্রব্য উৎপাদন না হতে পারে সে ব্যাপারেও পদক্ষেপ নিতে হবে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

আহমেদ ইকবাল খান

ঢাকা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে