বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা

করোনা মোকাবিলায় উদ্যোগ নিন
নতুনধারা
  ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

করোনা পুরো পৃথিবীকে কতটা বিপর্যস্ত করেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সাম্প্রতিক সময়ে আবারও নতুন করে আতঙ্ক হিসেবে দেখা দিয়েছে করোনা পরিস্থিতি। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে উঠে আসছে, করোনায় রোগী শনাক্তের হার বেড়েছে দ্বিগুণ। এখনো বলা যাচ্ছে না বাংলাদেশে করোনার কোন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে। তবে দেশে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের উপস্থিতি আছে নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এক্ষেত্রে সবচেয়ে আশঙ্কাজনক বিষয় হলো, রোগী যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে ওমিক্রনের সামাজিক ট্রান্সমিশন হয়েছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আর এর পরিপ্রেক্ষিতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত রোগী হলে তাদের সামলানো কঠিন হয়ে যাবে। তখন ভেঙে পড়তে পারে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। এতে মৃতু্য বাড়তে পারে। আর তাই নিজেকে বাঁচাতে নিজেরই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এমন বিষয়ও উঠে এসেছে।

আমরা মনে করি, সামগ্রিক এ পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার যথাযথ পদক্ষেপ অব্যাহত রাখা। একই সঙ্গে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো জরুরি, যেন স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়। উলেস্নখ্য, দেশে করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকার কারণে কিছু বিধিনিষেধও আরোপ করেছে সরকার। মাস্ক পরাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে বিধিনিষেধের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে যথাযথ মনিটরিংও অব্যাহত রাখতে হবে।

তথ্যমতে জানা যায়, ডিসেম্বরের শেষ ১৩ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৪০৭ জন। আর মৃতু্য ছিল ২৩ জন। চলতি বছরের প্রথম ১৩ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ হাজার ১২৫ জন আর মৃতু্য ৫১ জন। এ অবস্থায় জিনোম সিকোয়েন্স করে ৩৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৩০ জন ঢাকার আর ৩ জন যশোরের। শনাক্তের সংখ্যা ৩১ ডিসেম্বর ছিল ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ আর ১৩ দিন পর ১২ দশমিক ০৩ শতাংশ। যদি হিসাব করে দেখা হয় তাহলে আক্রান্ত বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৭৬ শতাংশ। আর মৃতু্য বেড়েছে ৫৫ শতাংশ। এটা আমলে নেওয়া জরুরি, সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীও বলেছেন, এভাবে রোগী বাড়লে সামাল দেওয়া কঠিন হবে। অবস্থা বুঝে ইতোমধ্যে আরও ২০ হাজার বেড বৃদ্ধির কথাও বলা হয়েছে।

আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের পদক্ষেপ নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। কেননা এ কথা বলাই বাহুল্য, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে তা হবে অত্যন্ত ভীতিপ্রদ এমন আশঙ্কা থাকে। সঙ্গত কারণেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকে অধিকতর মনোযোগী হয়ে উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে এবং একই সঙ্গে জনসাধারণের মধ্য সচেতনতা বাড়াতে হবে যেন সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, মাস্ক পরে। এছাড়া টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে হবে। এমন বিষয় আলোচনা আসছে, কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়ে গেছে। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি ওমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছেন ও হয়েছে। ফলে এটিও আমলে নিতে হবে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে- তখনই মৃতু্য বাড়তে থাকবে। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। সচেতন না পরিস্থিতি কতটা ভয়ানক হতে পারে সেটিকে সামনে রেখে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে