মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ইতিহাস গড়লেন আইভী

আমাদের অভিনন্দন
নতুনধারা
  ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে ইতিহাস গড়ে টানা তিনবার মেয়র পদে জয় পেলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে ৬৯ হাজার ১০২ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন তিনি। আগের দুটো নির্বাচনের চেয়ে এবার ভোটের ব্যবধান কম। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, ১৯২ কেন্দ্রের মধ্যে সেলিনা হায়াৎ আইভী নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন এক লাখ ৬১ হাজার ২৭৩ ভোট। অন্যদিকে তৈমূর আলম খন্দকার হাতি প্রতীকে পেয়েছেন ৯২ হাজার ১৭১ ভোট। ভোট পড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অন্যবারের মতো এবারও জাতীয় রাজনীতিতে আলোচনার ঝড় তোলে। মেয়র পদ ছাড়াও কাউন্সিলর পদে একাধিক প্রার্থীর মধ্যে উত্তাপও ছড়ায়। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে বড় কোনো ঘটনা ছাড়াই ভোটগ্রহণ শেষ হয়। জয়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী নিজ বাসায় সাংবাদিকদের বলেন, 'এ জয় উৎসর্গিত নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য, এ জয় উৎসর্গিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। আমি দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে সবার জন্য কাজ করব, নারায়ণগঞ্জের জন্য কাজ করব। আমাকে বিজয়ী করায় নারায়ণগঞ্জবাসীকে ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষের ওপর আস্থা রাখার জন্য এবং আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য।' কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় এ সিটির নির্বাচন। সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণের কারণে ভোটিং প্রক্রিয়ায় কিছুটা দেরি হলেও কাউকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। সময় শেষ হওয়ার পরও ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

এটা সত্য বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে সারাদেশের মানুষের কৌতূহল ছিল। কে জিতবে এই নির্বাচনে? সেলিনা হায়াৎ আইভী, নাকি তৈমূর আলম খন্দকার। শেষ পর্যন্ত জয় পেলেন আইভী। তৈমূর আলম খন্দকার একূল-ওকূল দু'কূলই হারালেন।

উলেস্নখ্য, ২০১১ সালে সেলিনা হায়াৎ আইভী শামীম ওসমানকে লক্ষাধিক ভোটে পরাজিত করে জয়ী হয়েছিলেন, তখন দলীয় প্রতীকে ভোট হতো না। তিনি তখন স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। এরপর ২০১৬ সালে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াৎ হোসেনকে পরাজিত করে। দ্বিতীয়বার নৌকার প্রতীকে ভোট করায় দলের মধ্যে উল্টো হাওয়া মোকাবিলা করতে হয়নি তাকে। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থীর চেয়ে প্রায় ৮০ হাজার ভোট বেশি পেয়েছেন তিনি। এই দুই নির্বাচন ছিল অবাধ ও সুষ্ঠু। কোনোভাবেই এই দুই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি। এবারও নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি।

এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, প্রথম ধাপ থেকে পঞ্চম ধাপ পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। শতাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছেন শত শত মানুষ। যত্রতত্র অস্ত্রের মহড়া চলেছে, ঘটেছে রক্তপাতের ঘটনা। সঙ্গত কারণে নাসিক নির্বাচন নিয়ে জনমনে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা কাজ করছিল। তারা নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখতে পারছিলেন না। কোনো স্বার্থান্বেষী মহল ভোটের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ শেষ মুহূর্তে যাতে ব্যাহত করতে না পারে, সে বিষয়ে কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর ছিল। দেশবাসী নারায়ণগঞ্জে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনই দেখতে চেয়েছিলেন এবং তা হয়েছে। এ জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ। আমরা আশা করছি, ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করবেন। তাকে আমাদের অভিনন্দন।

\হ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে