শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিন

নতুনধারা
  ২০ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

আবারও বেড়েছে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা। রাজধানীসহ সারাদেশে বেপরোয়া অজ্ঞান পার্টি। সাধারণ মানুষ তো নয়-ই, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও অজ্ঞান পার্টির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়া পুলিশ কর্মকর্তা মীর আব্দুল হান্নান (৫৮) মারা গেছেন। স্যার সলিমুলস্নাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ জানুয়ারি রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মৃতু্য হয়। আব্দুল হান্নান আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সহকারী উপ-পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ ছাড়াও কিছুদিন আগে রাতে টঙ্গী থানায় ডিউটি শেষ করেন এএসআই পারভেজ মলিস্নক। তিনি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে যাওয়ার উদ্দেশে বলাকা বাসে ওঠেন। খিলক্ষেত এলাকা অতিক্রম করার সময় পাশের সিটে থাকা এক যাত্রী পানি পান করায়। এরপরই তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার চিকিৎসা হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রতি মাসে ১৫ থেকে ২০ জন মানুষ অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সেখানে চিকিৎসার জন্য যায়। জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসে দুশতাধিক মানুষ অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে। এদের অনেকেই দীর্ঘমেয়াদে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। যাত্রীবাহী বাস, ট্রেন, লঞ্চ, ফেরি-ফেরিঘাট, বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন কোথাও নিরাপদ নয় কেউ। হকার কিংবা সহযাত্রী- বন্ধু সেজে সাধারণ মানুষের সবকিছু কেড়ে নেয় অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এদের দৌরাত্ম্য থামাতে পুলিশের একটি বিশেষ দল মাঠে কাজ করছে। অনেককে ধরে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তবে তাদের কোনোভাবেই নির্মূল করা যাচ্ছে না। এজন্য পথচারী বা যাত্রী সবাইকে সতর্ক হতে হবে। অজ্ঞান পার্টির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে।

প্রায় প্রতিদিনই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে নগদ টাকা-পয়সাসহ মূল্যবান কাগজপত্র হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ। অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের খাওয়ানো নেশাজাতীয় দ্রব্যের বিষক্রিয়ায় আবার কেউ কেউ প্রাণও হারাচ্ছেন। এর নেপথ্যে রয়েছে তিন কারণ- অসচেতনতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঝিমিয়ে পড়া ও এই প্রতারণায় সহজ সাজা ও জামিন।

এটা সত্য, অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্যরা বেশির ভাগই গণপরিবহণ ও ভাসমান অবস্থায় অপরাধ করে। তাই এসব চক্র থেকে রক্ষায় জনসাধারণকেই বেশি সতর্ক হতে হবে। বিশেষ করে চলার পথে কোনো অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক ও খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া কোনো ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাতে হবে। এদের হাত থেকে বাঁচতে সচেতনতার বিকল্প নেই। তবে যারা অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে তারা ঝামেলা এড়াতে অনেকে মামলা করেন না। আবার মামলা বা গ্রেপ্তার হলেও স্বল্প সাজা ও জামিনে বের হয়ে যায় তারা। এসব প্রতারণায় আইন কঠোর হওয়া উচিত। তা হলে এ ধরনের অপরাধ অনেকটা কমে আসবে। আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঝিমিয়ে যাওয়ায় অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বেড়ে গেছে। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সজাগ ও সচেতন থাকা জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে