চলন্ত বাসে খুন

দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক

প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
খুন, ধষর্ণ, ছিনতাই থেকে শুরু করে ঘটছে একের পর এক ভয়ানক সব ঘটনা। সঙ্গত কারণেই এই ধরনের ঘটনাগুলোকে আমলে নিয়ে তার পরিপ্রেক্ষিতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহাযর্ বলেই আমরা মনে করি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, আশুলিয়ার মরাগাঙ এলাকায় শাশুড়ি জরিনা খাতুনের লাশ খুঁজে বের করেন জামাতা নূর ইসলাম, আর এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে মামলাও করেন। কিন্তু পুলিশ বলছে, নূর ইসলাম নিজেই জরিনা হত্যার সঙ্গে জড়িত! উল্লেখ্য যে, গত ৯ নভেম্বর রাতে বৃদ্ধ বাবাকে বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে মেয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছিল। শনিবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাÐের রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপমহাপরিদশকর্ ডিআইজি) বনজ কুমার মজুমদার। পিবিআই এ ঘটনায় নূর ইসলামসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আমলে নেয়া দরকার যে, পারিবারিক বিরোধের জেরে হত্যার ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপমহাপরিদশকর্ বলেছেন, নিহত জরিনা বেগমের মেয়ে রোজিনার সঙ্গে বিয়ের পর থেকে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে নূর ইসলামের কলহ শুরু হয়। এক সপ্তাহ আগে এই বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। একপযাের্য় রোজিনাকে প্রচÐ মারধর করেন তার স্বামী নূর ইসলাম। এই বিরোধের জন্য শাশুড়ি জরিনাকে দায়ী করেন তিনি। এরপরই জরিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন নূর ইসলাম। তার সঙ্গে পরিকল্পনায় ছিলেন মা আমেনা বেগম ও ঘটক স্বপন। তথ্য মতে, বিরোধ মেটাতে ৯ নভেম্বর সিরাজগঞ্জের চৌহালী থেকে মেয়ে রোজিনার বাড়ি আশুলিয়ার গাজীরচটের মুন্সীপাড়ায় বাবা আকবর আলীকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন জরিনা। দুপুরের খাবার খেয়ে ওই দিন বিকেলেই বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন জরিনা খাতুন ও তার বাবা আকবর আলী। এরপরই হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়। এ ছাড়া এই ঘটনায় আরো ভয়ঙ্কর তথ্য সামনে এসেছে যে, জরিনাকে হত্যার জন্য বাসচালকের সঙ্গে ১০ হাজার টাকায় চুক্তি হয়েছিল। আর পরিকল্পনা অনুযায়ী বাসটিতে চালক, কনট্রাকটর ও দুই সহযোগী ছাড়া আর কোনো যাত্রী ওঠানো হয়নি! আগে থেকে বাসটি শিমুলতলা বাসস্ট্যান্ডে দঁাড় করিয়ে রাখা হয়। জরিনা ও আকবর আলী উঠার পর বিভিন্ন জায়গায় বাসটি ঘোরানো হয়। সন্ধ্যার দিকে প্রথমে আকবর আলীকে মারধর করে নামিয়ে দেয়া হয়। এরপর জরিনাকে মারধর করে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ ফেলে দেয়া হয়! আমরা বলতে চাই যে, একটি স্বাধীন সাবের্ভৗম রাষ্ট্রে এই ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। মনে রাখা দরকার, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে হত্যা বা বাসে খুনের মতো ভয়ানক ঘটনা এই প্রথম নয়। এ ছাড়া চলন্ত বাসে ধষর্ণ থেকে শুরু করে নানা ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাও অজানা নয়। ফলে আমরা মনে করি, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধের কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। মনে রাখা দরকার, এরকম ঘটনা রোধ করা না গেলে জননিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে মানুষ তার জীবনযাপনের স্বাভাবিকতাই হারিয়ে ফেলবে এমন আশঙ্কাও অমূলক নয়। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই যে, এই হত্যাকাÐের সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করে দোষীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। প্রতিনিয়ত যে সব অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটছে তা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। এই ধরনের ঘটনার ভয়াবহতা আমলে নিয়ে পুনরাবৃত্তি রোধে সংশ্লিষ্টরা সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সবার্ত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।