করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন বিশ্বকে কোথায় নিয়ে যাবে

ইতোমধ্যে বাংলাদেশে এ নতুন ধরন ওমিক্রন যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তাতে আমরা যে, অত্যন্ত আতঙ্ক ও ভয়ের মধ্যে আছি এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে।

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

মোহাম্মদ নজাবত আলী
ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সারা বিশ্ব আজ করোনা মহামারির কাছে নতজানু। সম্প্রতি করোনা মহামারির নতুন ধরন ওমিক্রন বিশ্বজুড়ে মহাতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। এ নতুন ধরন বিশ্বকে কোথায় নিয়ে যাবে? সারা বিশ্বে হু-হু করে বাড়ছে করোনার এই নতুন ধরন। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। এ যেন এক মহামারি পাগলা ঘোড়ার মোত ছুটে চলেছে। করোনা এমন এক ভাইরাস- যা স্থান, কাল, শত্রম্ন-মিত্র, ধর্ম-বর্ণ কিছুই মানছে না। সবচেয়ে বড় কথা হলো করোনা শনাক্ত ও মৃতু্যর হার ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলেছে। গত বছর আগস্ট পর্যন্ত আমরা করোনা নিয়ে ভয়ভীতির মধ্যে ছিলাম। পরবর্তী চার মাস কিছুটা হলেও শনাক্ত ও মৃতু্য কমে গেলেও আমাদের মাঝে যে স্বস্তি দেখা দিয়েছিল তা আর নেই। বর্তমান করোনার এ নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে সারাবিশ্ব মহাসংকটে পড়েছে। ওমিক্রন করোনা শনাক্তকরণের প্রতিষ্ঠান আরো বাড়াতে হবে। মরণ ঘাতক করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে সমাজে দেখা দিয়েছে ভয়, ভীতি, উদ্বেগ দ্রম্নত এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে। আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বাড়ছে তেমনি মৃতু্যও। তাই সঙ্গত কারণে করোনা নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন থেকে বাঁচার জন্য বিশ্বের অনেক দেশ ইতোমধ্যেই লকডাউন ঘোষণা করেছে। তবে বাংলাদেশে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ লকডাউন না দেয়ার। কারণ এর আগে পরপর দু'বার লকডাউন ঘোষণায় দেশের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে ধাক্কা সামলে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক সেভাবে দাঁড়াতে পারেনি। কেউ কেউ এ সংক্রামণ মরণব্যাধিকে আসমানি বালা বলছেন। আবার কেউ বলতে চাচ্ছেন বাদুড় থেকে এ ভাইরাস ছড়িয়েছে। তবে জানি না সাধারণ মানুষের কোন ধারণাটি সঠিক। তবে এটা সত্য যে বর্তমান প্রযুক্তির যুগে আমাদের মধ্যে পাপাচার বেড়েছে। আলস্নাহভীতি কমেছে। ইমান দুর্বল হয়েছে। সুদ, ঘুষ,ব্যাভিচারসহ নানা কর্মকান্ড বেড়েছে। সত্য মিথ্যা, হারাম-হালাল কিছু আমারা মানতে চাচ্ছি না। মোটা দাগে বলতে গেলে আমাদের অধিকাংশের মধ্যে নীতি নৈতিকতা, ইসলামী মূল্যবোধ মানবিকতা হারিয়ে গেছে। তাই আমাদের সংশোধন হওয়া দরকার। করোনাভাইরাস নিয়ে গোটা পৃথিবী সংকটে পড়েছে। গোটা বিশ্ব করোনা থেকে মুক্ত হোক। সাধারণ মানুষ এটাকে যাই-ই বলুক না কেন সৃষ্টিকর্তা আমাদের অবুঝ শিশু থেকে বয়োবৃদ্ধ নারী-পুরুষ সবাইকে আলস্নাহ হেফাজত করুক। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে এ নতুন ধরন ওমিক্রন যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তাতে আমরা যে, অত্যন্ত আতঙ্ক ও ভয়ের মধ্যে আছি এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে। \হদেশে করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকায় ১১ দফা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। এ বিধিনিষেধে বাস, ট্রেন আবার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলবে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রয়োজনে জরিমানার কথাও বলা হয়েছে। খোলা জায়গায় কোনো সামাজিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও সভা সমাবেশ বন্ধ থাকবে। ওমিক্রন আতঙ্কে সরকার যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে তা যথাযথভাবে মানা হচ্ছে কিনা তা তদারকি করা দরকার। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ বিধিনিষেধ বলবৎ থাকবে। তবে এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৬ হাজারের অধিক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। একদিকে অধিক আক্রান্ত অন্যদিকে মৃতু্যর সংখ্যাও বাড়ছে। বিধিনিষেধে সবধরনের যানবাহনে চালক ও সহকারীদের টিকার সনদ সঙ্গে রাখার কথা বলা হলেও অধিকাংশ চালক ও সহকারীরা কোনো টিকাগ্রহণ করেননি। উপরোন্ত দেখা যাচ্ছে, মুখে মাস্ক নেই, স্বাস্থ্যবিধি মানারও কোনো বালাই নেই। তাছাড়াও অর্ধেক যাত্রী বাসে তোলার কথা বলা হলেও বাসগুলোতে যাত্রী তোলা হচ্ছে আগের মতোই। এই চিত্র প্রায় সর্বত্রই পরিলক্ষিত হচ্ছে। গণপরিবহণে যাত্রী পরিহণ সরকার নির্ধারিত হারে যাত্রী তোলার কথা বলা হলেও কার্যত তা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। মনে রাখতে হবে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ইসু্যতে দেশের মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এমতাবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মানা ও মুখে মাস্ক পরা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অনেকের মুখে মাস্ক নেই। কেউ পকেটে গুঁজে রেখেছেন আবার কেউ থুতনির নিচে মাস্ক নিয়ে অবাধে ঘোরাফেরা করছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে এবং জরিমানাও করেছে। অনেকেই মনে করছেন, দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরও কেন মাস্ক পরতে হবে। কিন্তু প্রকৃত বাস্তবতা হচ্ছে- আমরা যতই টিকা নেই না কেন মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মানলে এই মহামারির হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি। এ ভাইরাসের প্রার্দুভাব বেশি, মাস্ক পরলেই চলবে না ঘন ঘন মাস্ক পরিবর্তন করতে হবে। বহু লোকের সমাগম এড়িয়ে চলা, গা ঘেঁষাঘেষি, করমর্দন ও কোলাকুলি না করা। জীবাণু দূর করে এমন সাবান বা হ্যান্ডওয়াস দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলা। হাঁচি-কাশিতে রুমাল বা টিসু দিয়ে মুখ ডাকা। সর্বোপরি সবসময় পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন থাকা। এই নিয়মগুলো মেনে চললে এ ভাইরাসের আক্রমণ থেকে অনেকটা রক্ষা পাওয়া যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন। তবে যারা প্রকৃত পক্ষে আক্রান্ত হয়েছেন তাদেরও অবশ্যই মুখে মাস্ক পরতে হবে। এতে তাদের মুখ বা নাখ থেকে ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি অনেক অংশে কম। বিশ্বের যেসব দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে সে দেশগুলোর মধ্যে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, ভারত, ইতালি ও চীন এখন শীর্ষে। তবে আতঙ্কের বিষয় হলো কয়েকজনের মৃতু্য ও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়াই। করোনাভাইরাস শনাক্ত করা এক জটিল প্রক্রিয়া। দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভাইরাসটির শনাক্তের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত জনশক্তি ও প্রযুক্তি গত সক্ষমতা নেয়। তাই কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা সন্দেহ হলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আই ই ডি সি আর) এর শরণাপন্ন হতে হবে। অথচ করোনা বা কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধ করার প্রধান কাজ হচ্ছে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সবার কাছ থেকে আলাদা করে রাখা। এ কারণেই আক্রান্ত ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টানে রেখে নিবিড় পর্যবেক্ষণ। তবে উপসর্গ দেখা দিলেই ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। যেসব দেশে করোনা দেখা দিয়েছে সেসব দেশ থেকে ফেরত আসা মানুষ যদি ১৪ দিন ঠান্ডাজ্বরে ভোগে তাহলে দ্রম্নত সরকারি স্বাস্থ্য দপ্তরে জানানো উচিত। সরকারের এ স্বাস্থ্য দপ্তর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। যেহেতু এ ভাইরাসটি বাংলাদেশেই শুধু নয়, সারা পৃথিবীতে ভয়ভীতি, আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে তাই করোনার হাত থেকে বাঁচতে অবশ্যই আমাদের সর্তকতা ও সাবধানতা অবলম্বনের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। তাই সঙ্গত কারণেই অবশ্যই আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে কোনো কার্পণ্য রাখা উচিত নয়। করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন বিশ্বে দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়ায় এ সংক্রামক ব্যাধি নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মহাশঙ্কায় রয়েছে। এ প্রার্দুভাব বিস্তারের বিপজ্জনক মাত্রা ও তীব্রতা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব রোধে বাংলাদেশ সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। করোনা নিয়ে মানুষের মধ্যে যে ধারণাই থাক না কেন ছোঁয়াছে এ ভাইরাস থেকে বাঁচতে আমাদের যথেষ্ঠ সচেতনতার অভাব রয়েছে। আমরা যদি একটু সচেতন হই তাহলে এ ভাইরাস থেকে অনেকটা নিরাপদে থাকা যাবে। নিজেদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা বিবেচনাই নিয়ে অতীতে সরকার বিগত ২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। বিগত সময়ে করোনা ঠেকাতে জেলা এবং বিভাগীয় শহরে সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসনকে সহায়তাদানে সেনাবাহিনী কাজ করছে। এমন কি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর মূল আয়োজন স্থগিত, সংক্ষিপ্ত আকারে উদযাপন, ২৬ মার্চ কুচকাওয়াজসহ সব ধরনের অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়। তাছাড়া গত ১৮ মার্চ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই ছুটি মানেই হোম কোয়ারেন্টাইনে অর্থাৎ বাড়িতে আবদ্ধ থাকা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হওয়া, যত্র তত্র ঘোরাফেরা না করা, পণ্যবাহী পরিবহণ ছাড়া জল, স্থল ও আকাশ পথ বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। কারণ সবার আগে মানুষ। করোনা শুধু মানুষের প্রাণই কেড়ে নিচ্ছে না এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অর্থনীতিতেও। আমদানি-রপ্তানিতে মন্দাভাব দেখা দেয়। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বর্হিবিশ্বে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় আমাদের দেশের অর্থনীতিতে তা বড় ধরনের ধাক্কা। এ ধাক্কা সামলাতে সরকার এক্ষনেই লকডাউনের চিন্তাভাবনা করছে না। দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবং পরবর্তী সময়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হয়। শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়। সে ধারাবাহিকতা রক্ষায় ইতোমধ্যে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রম চালু করে- যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সব শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনা। তবে করোনা মহামারির নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সেক্ষেত্রে সরকার নতুন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। সবার ওপর মানুষ, সবার ওপর মানবতা। সর্বদিক থেকে বিশ্ব মানবতাকে রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। বর্তমান করোনাভাইরাস বিশ্ব মানবতাকে, বিশ্ব মানবকে খেয়ে ফেলছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এবং মারাও যাচ্ছে। উপরন্ুত্ম নিত্যনতুন রোগ ওমিক্রনে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। দেশে যখন করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে এবং ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে তখন সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। করোনার কারণে মানুষের মাঝে যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। যে কোনো মহামারিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এটা একটি বৈশ্বিক সমস্যা। সবাই মিলে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এ দুর্যোগ নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের দিকনির্দেশনা আমাদের আতঙ্ক মুক্ত করতে পারে। তাই স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মানা ও মাস্ক ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। \হ মোহাম্মদ নজাবত আলী : শিক্ষক ও কলামিস্ট