ওমিক্রনে দিশেহারা বিশ্ব

কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে

প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনার সংক্রমণ শুরুর পর পুরো পৃথিবীতে বিপর্যস্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। বিঘ্নিত হয়েছিল মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনের ধারা। প্রায় প্রত্যেকটি খাতে পড়েছিল নেতিবাচক প্রভাব। এরপর করোনার দাপট কমে এলেও সম্প্রতি আবারও ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃতু্য বাড়ছেই। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃতু্যতে আগের দিনের রেকর্ড ভাঙছে। আর এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, এই পরিস্থিতির ভেতরই সবচেয়ে সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট (ধরন) ওমিক্রনের দাপটে কাঁপন ধরেছে বিশ্বে। আমরা মনে করি, সামগ্রিকভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করে বিশ্ব নেতৃত্ব ও সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। আমলে নেওয়া জরুরি, পরিসংখ্যান বলছে, শুক্রবার বিশ্বজুড়ে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩৫ লাখ ৬৯ হাজার ৬১০ জন আর এ রোগে একই দিন মৃতু্য হয়েছে ৮ হাজার ৮৯১ জনের। আক্রান্ত-মৃতু্যর এই হার আগের দিন বৃহস্পতিবারের চেয়ে কিছু বেশি। ওই দিন বিশ্বে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৪ লাখ ৫৯ হাজার এবং মৃতের সংখ্যা ছিল আট হাজার ৮৫৭ জন। এছাড়া বলা দরকার, ২০২০ সালে মহামারি শুরুর পর থেকে করোনায় আক্রান্ত, মৃতু্য ও সুস্থতার হালনাগাদ তথ্য প্রকাশকারী ওয়েবসাইট 'ওয়ার্ল্ডোমিটার' জানিয়েছে, শুক্রবারের পর বিশ্বে করোনায় মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৪ কোটি ৭৪ লাখ ৯৫ হাজারের বেশি। মৃতের সংখ্যা ৫৬ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এই হিসাব শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা পর্যন্ত। এছাড়া উলেস্নখ্য, মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্ত ও মৃতের হিসাবে বিশ্বের দেশসমূহের মধ্যে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র। গত কয়েক মাস ধরে দৈনিক সংক্রমণ-মৃতু্যও সবচেয়ে বেশি ঘটছে ওই দেশটিতেই। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার দেশটিতে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন সাত লাখ ৭৭ হাজার ৫১২ জন এবং মারা গেছেন দুই হাজার ৭৭৪ জন। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বিশ্বের অন্যান্য যেসব দেশে এই দিন সংক্রমণ ও মৃতু্যর উচ্চহার দেখা গেছে, সে দেশগুলো হলো ফ্রান্স, ভারত, ইতালি, ব্রাজিল, স্পেন, জার্মানি আর্জেন্টিনা ও যুক্তরাজ্য। আমরা বলতে চাই, যখন এমন বিষয় আলোচনায় আসছে যে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে সংক্রমণ ও মৃতু্য বাড়ছেই। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃতু্যতে আগের দিনের রেকর্ড ভাঙছে। আর এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট (ধরন) ওমিক্রনের দাপটে কাঁপন ধরেছে বিশ্বে- তখন ওমিক্রন ও সার্বিকভাবে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোনো প্রকার উদাসীনতা কাম্য নয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বলা দরকার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিষয়টি আলোচনায় আসার পর থেকেই এক ধরনের আতঙ্কজনক পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। কেননা, হঠাৎই নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে যার ফলে দেখা দেয় ব্যাপক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। এখন যখন এই ভ্যারিয়েণ্ট পুরো পৃথিবীকে বিপর্যস্ত করে তুলছে, তখন উদ্যোগী হতে হবে। সর্বোচ্চ সতর্কতা নিশ্চিত করা, পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, সঠিক উপায়ে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরা, একই সঙ্গে টিকা কার্যক্রমকে আরও বেগবান করতে সহায়তা করাসহ যে বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে, তা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ এবং জনসচেতনতার বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া জরুরি। একইসঙ্গে টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত রাখার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। আর এই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে বিশ্ব নেতৃত্ব ও সংশ্লিষ্টদের সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উদ্বেগ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল- এই বিষয়টিও এড়ানোর সুযোগ নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, অকারণে ঘোরাফেরা না করা, মাস্ক পরাসহ প্রয়োজনীয় সচেতনতাও জরুরি। বলা দরকার শুধু পৃথিবী নয়, দেশেও করোনার পরিস্থিতি আবারও ভীতিপ্রদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে দেশের সংশ্লিষ্টদেরও সৃষ্ট পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করতে হবে এবং সেই মোতাবেক পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হকে। বিশ্বে আবার করোনার সংক্রমণ ও মৃতু্য বাড়ছে- এই প্রবণতা স্বাভাবিকভাবেই অশনিসংকেত। সঙ্গত কারণেই- এই বাস্তবতায় বিশ্ব নেতৃত্ব ও সংশ্লিষ্টদের সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।