গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও পারিবারিক দৃষ্টিভঙ্গি

কোনোক্রমেই গৃহকর্মীর প্রতি কোনো প্রকার অশালীন আচরণ অথবা দৈহিক আঘাত অথবা মানসিক নির্যাতন করা যাবে না। নিয়োগকারী, তার পরিবারের সদস্য বা আগত অতিথিদের দ্বারা কোনো গৃহকর্মী কোনো প্রকার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন যেমন- অশ্লীল আচরণ, যৌন হয়রানি বা যৌন নির্যাতন কিংবা শারীরিক আঘাত অথবা ভীতি প্রদর্শনের শিকার হলে দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

আরাফাত রহমান
বাংলাদেশের গ্রামীণ বর্ধিষ্ণু পরিবার থেকে শুরু করে ক্রমপ্রসারমান নগরজীবনের পারিবারিক আবাসস্থল, মেস এবং ক্ষেত্রবিশেষে ডরমিটরি প্রভৃতি গৃহকর্মীদের কর্মসংস্থানের প্রধান ক্ষেত্র। তবে রাজধানী ঢাকাসহ প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে এবং শিল্প ও বাণিজ্যের দ্রম্নত বিকাশের অনুষঙ্গ হিসেবে গড়ে ওঠা শহরে বসবাসরত নাগরিকদের চাহিদা ও অধিকতর আর্থিক সুবিধা বিবেচনায় প্রান্তিক জনপদের দরিদ্র পরিবারের প্রধানত নারী গৃহকর্মী যাদের একটা উলেস্নখযোগ্য অংশ কিশোরী বা শিশু গ্রাম থেকে এসে এ সব শহরের বাসা, মেস বা ডরমিটরিতে গৃহকর্মে নিয়োজিত হওয়ার প্রবণতা চলমান রয়েছে। শিক্ষা উপ-বৃত্তি এবং অবৈতনিক নারীশিক্ষার সরকারি কর্মসূচির কারণে শিশুদের গৃহকর্মী হিসেবে কাজে নিয়োজিত হওয়ার প্রবণতা সামগ্রিকভাবে হ্রাস পেলেও দারিদ্র্য-পীড়িত বিশেষ বিশেষ এলাকা থেকে শিশুদের গৃহকর্মে নিয়োজিত হওয়ার লক্ষ্যে শহরে আসার প্রবণতা অব্যাহত আছে। অন্যদিকে, সাধারণত নগরবাসী মানুষের গৃহের সার্বিক নিরাপত্তা এবং গৃহকর্তা ও গৃহের সদস্যদের প্রতি ইপ্সিত আনুগত্যের বিবেচনায় নারী গৃহকর্মীদের অধিকতর সুবিধাজনক বিবেচনা করার ফলে সার্বক্ষণিক গৃহকর্মী হিসেবে নারী গৃহকর্মী বিশেষত কিশোরী বা শিশু গৃহকর্মী নিয়োগের প্রতি অগ্রাধিকার প্রদানের প্রবণতাও লক্ষণীয়। আনুগত্য প্রাপ্তির এ মানসিকতার মধ্যে বিকৃতিও লক্ষ্য করা যায় যা গৃহকর্মীদের উপর নির্যাতনের মধ্যদিয়ে প্রকাশিত হয়ে থাকে। নির্যাতনের ফলে মৃতু্য বা হত্যা কিংবা আত্মহত্যার মতো কোনো কোনো ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে সংবেদনশীল মানবসমাজকে চরমভাবে বেদনাবিদ্ধ করে। দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষিত বিবেচনায় সরকার গৃহকর্মীদের জন্য পর্যায়ক্রমে আইনি কাঠামো তৈরিতে প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ। এ প্রেক্ষাপটে গৃহকর্মে নিযুক্ত বিপুল জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা ও কল্যাণার্থে পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়নের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণনীতি একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশের সংবিধানের ২০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কর্মক্ষম প্রতিটি নাগরিকের জন্য কর্মের অধিকার হচ্ছে তার অধিকার, কর্তব্য এবং মর্যাদার বিষয় এবং শ্রমিকের প্রাপ্য পরিশোধের মূলনীতি হলো- 'শ্রমিকের সামর্থ্য অনুযায়ী কর্মসম্পাদন এবং সম্পাদিত কাজ অনুযায়ী শ্রমের মূল্য পরিশোধ'। অনুচ্ছেদ ২৭ অনুযায়ী সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের আশ্রয় লাভে সমান অধিকারী। অনুচ্ছেদ ৩৪-এ সব ধরনের জবরদস্তি শ্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার অনুচ্ছেদ ১ অনুযায়ী প্রতিটি নাগরিক জন্মগতভাবে স্বাধীন এবং মর্যাদা ও অধিকারের ক্ষেত্রে ধর্ম, গোত্র, গাত্রবর্ণ, জেন্ডার, ভাষা, রাজনৈতিক বা ভিন্নমত, জাতীয় অথবা সামাজিক উৎস, সম্পদ, জন্ম বা অন্যান্য স্ট্যাটাস-নিরক্ষেপভাবে সমান। অনুচ্ছেদ ১২ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির পরিবার, গৃহ ও পত্র যোগাযোগে সব ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারিতামূলক হস্তক্ষেপ বা বিঘ্ন সৃষ্টি করা এবং তার সম্মান ও মর্যাদায় আঘাত করা যাবে না। অনুচ্ছেদ ২৩, ২৪ ও ২৫-এ সব শ্রমিকের সমান কাজের জন্য সমান মজুরিনীতির ভিত্তিতে ন্যায়-সঙ্গত মজুরির বিনিময়ে স্বাধীনভাবে কর্ম নির্বাচন, নির্ধারিত কর্মঘণ্টা, সাময়িক ছুটিসহ বিশ্রাম ও বিনোদন, স্বাস্থ্যসম্মতভাবে বসবাস, পরিবারসহ মানবিক মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপন এবং সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। দেশের চলমান আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণে পরিবার বা গৃহের আবশ্যকীয় কার্যাদি সম্পন্ন করে গৃহকর্তার অপেক্ষাকৃত উন্নততর পেশাগত দায়িত্ব নির্বিঘ্নে সম্পাদনের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে গৃহকর্মীরা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এ জন্যই সরকার গৃহকর্মে নিযুক্ত বিপুল জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় ও কল্যাণার্থে একটি নীতি প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা কর্তৃক গৃহীত গৃহকর্ম সম্পর্কিত কনভেনশন-১৮৯ অনুসমর্থনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করে। আলোচ্য প্রেক্ষাপটে এরূপ নীতিমালা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। এ নীতি গৃহকর্মে নিয়োজিত কর্মীদের কাজের শর্ত ও নিরাপত্তা, শোভন কর্মপরিবেশ, পরিবারসহ মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপনের উপযোগী মজুরি ও কল্যাণ, নিয়োগকারী ও গৃহকর্মীদের মধ্যে সুসম্পর্ক এবং কোনো অসন্তোষ সৃষ্টি হলে তা নিরসন প্রভৃতি বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করে। একই সঙ্গে এ নীতি সংবিধানে ঘোষিত সমান অধিকার এবং সব নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিতকরণের মূলনীতি হিসেবে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়ক। নীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য গৃহকর্মে নিয়োজিত সব ব্যক্তির সুরক্ষা ও কল্যাণের নিমিত্ত গৃহকর্মকে শ্রম হিসেবে স্বীকৃতি ও মর্যাদা প্রদান, গৃহকর্মীদের জন্য শোভন কাজ ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণ এবং বিশ্রাম-বিনোদন-ছুটিসহ নাগরিকের সংবিধান স্বীকৃতি মৌলিক অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠার্থে তাদের স্থায়ী ঠিকানা ও কর্মস্থলের তথ্য হালনাগাদকরণ ও সংরক্ষণের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা। গৃহকর্মী বলতে এমন কোনো ব্যক্তিকে বোঝাবে যিনি নিয়োগকারীর গৃহে মৌখিক বা লিখিতভাবে খন্ডকালীন অথবা পূর্ণকালীন নিয়োগের ভিত্তিতে গৃহকর্ম সম্পাদন করেন। এ ক্ষেত্রে মেস বা ডরমিটরিও 'গৃহ' হিসেবে বিবেচিত হবে। গৃহকর্ম বলতে বোঝায় রান্না ও রান্না সংশ্লিষ্ট আনুষঙ্গিক কাজে সহায়তা, বাজার করা, গৃহ বা গৃহের আঙ্গিনা বা চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং গৃহের অন্যান্য কাজ যা সাধারণত গৃহস্থালি কাজ হিসেবে স্বীকৃত। এ ছাড়া পোশাক-পরিচ্ছদ ধোয়া, গৃহে বসবাসরত শিশু, অসুস্থ, প্রবীণ কিংবা প্রতিবন্ধী ব্যক্তির যত্ন ইত্যাদি কাজও গৃহকর্ম হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে নিয়োগকারীর ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্কিত বা মুনাফা সৃষ্টি করে এমন কাজের অন্তর্ভুক্ত হবে না। বাংলাদেশের ব্যক্তিমালিকানাধীন গৃহ, মেস, ডরমিটরি প্রভৃতি কর্মস্থলে গৃহকর্মীরা পূর্ণকালীন বা খন্ডকালীন গৃহকর্মে নিয়োজিত থাকেন। এ নীতি বিশেষভাবে গৃহকর্মী, নিয়োগকারী ও তার পরিবারের সদস্য, সংশ্লিষ্ট সব ব্যক্তি, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। দেশের শহর ও গ্রামাঞ্চল-সর্বত্র গৃহকর্মীদের কর্মক্ষেত্রের বিস্তৃতি। এ ব্যাপক পরিসরে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বিভিন্ন শ্রেণিভুক্ত নিয়োগকারীর গৃহে কর্মরত গৃহকর্মীর জন্য শোভন কাজ এবং মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি প্রতিপালন করতে হবে: ক) মজুরি নির্ধারণ : উভয়পক্ষের আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে মজুরি নির্ধারিত হবে। পূর্ণকালীন গৃহকর্মীর মজুরি যাতে গৃহকর্মীর পরিবারসহ সামাজিক মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপনের উপযোগী হয় নিয়োগকারী তা নিশ্চিত করবেন। গৃহকর্মীর ভরণ-পোষণ, পোশাক-পরিচ্ছদ প্রদান করা হলে তা মজুরির অতিরিক্ত বলে গণ্য হবে। (খ) খন্ডকালীন গৃহকর্মীর মজুরি : খন্ডকালীন গৃহকর্মীর মজুরি কাজ বা কাজের ধরন কিংবা কাজের সময় এর ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে। খন্ডকালীন গৃহকর্মীর ভরণ-পোষণ ও পোশাক-পরিচ্ছদ প্রদান করা হলে তা মজুরির অতিরিক্ত বলে গণ্য হবে। (গ) মজুরি পরিশোধ : নিয়োগকারী গৃহকর্মীকে প্রতি মাসের মজুরি পরবর্তী মাসের সাত তারিখের মধ্যে পরিশোধ করবেন। (ঘ) গৃহকর্মীর বয়স : গৃহকর্মী নিয়োগে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-এর বিধান অনুসরণ করতে হবে। ১৪ বছর পূর্ণ করেছে তবে ১৮ বছরের কম এরূপ বয়সে গৃহকর্মে নিয়োজিত কিশোর বা কিশোরী কিংবা হালকা কাজের ক্ষেত্রে ১২ বছর বয়ঃপ্রাপ্ত শিশু নিয়োগ করতে হলে আইনানুগ অভিভাবকের সঙ্গে এবং প্রাপ্তবয়স্ক হলে নিয়োগ লাভে ইচ্ছুক ব্যক্তির সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে নিয়োগ প্রদান যুক্তিযুক্ত। তবে মৌখিক চুক্তি বা সমঝোতা বা ঐকমত্য সম্পন্ন হলে তা গৃহকর্মী ও নিয়োগকারীর নিকট গ্রহণযোগ্য কোনো তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতিতে আলোচনা সম্পন্ন করা বাঞ্ছনীয়। বিস্তারিত আলোচনাকালে কিংবা চুক্তি বা সমঝোতা বা ঐকমত্যে নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে উলেস্নখ থাকবে : (ক) নিয়োগের ধরন, (খ) নিয়োগের তারিখ, (গ) মজুরি, (ঘ) বিশ্রামের সময় ও ছুটি, (ঙ) কাজের ধরন, (চ) গৃহকর্মীর থাকা-খাওয়া, (ছ) গৃহকর্মীর পোশাক-পরিচ্ছদ ও শারীরিক পরিচ্ছন্নতা এবং (জ) গৃহকর্মীর বাধ্যবাধকতা। নিয়োগপত্র কিংবা চুক্তি বা সমঝোতা বা ঐকমত্যে উলিস্নখিত শর্তগুলো উভয় পক্ষ মেনে চলতে বাধ্য থাকবে, তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যে উক্ত শর্তাবলি যাতে দেশের প্রচলিত আইন ও নীতির পরিপন্থি না হয়। বারো বছর বয়ঃপ্রাপ্ত কোনো শিশুকে হালকা কাজে নিয়োগের ক্ষেত্রে তার স্বাস্থ্য ও উন্নতির জন্য বিপজ্জনক নয় অথবা শিক্ষা গ্রহণকে বিঘ্নিত করবে না তা বিবেচনায় নিতে হবে। প্রত্যেক গৃহকর্মীর কর্মঘণ্টা এমনভাবে বিন্যস্ত করতে হবে যাতে তিনি পর্যাপ্ত ঘুম, বিশ্রাম, চিত্তবিনোদন ও প্রয়োজনীয় ছুটির সুযোগ পান। গৃহকর্মীর ঘুম ও বিশ্রামের জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্থান নিশ্চিত করতে হবে। গৃহকর্তা বা গৃহকর্ত্রীর অনুমতি নিয়ে গৃহকর্মী সবেতনে ছুটি ভোগ করতে পারবেন। সন্তান-সম্ভবা গৃহকর্মীকে তার প্রসূতিকালীন ছুটি হিসেবে মোট ১৬ সপ্তাহ সবেতনে মাতৃত্ব ছুটি প্রদান করতে হবে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত ভারী কাজ থেকে বিরত রাখা এবং মাতৃস্বাস্থ্যের পরিচর্যায় সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গৃহকর্তা সহায়তা করবেন। বিদেশে গৃহকর্মী প্রেরণের মাধ্যমে তুলনামূলক অধিক মজুরিতে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি দেশে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির বিবেচনায় গৃহকর্মী প্রশিক্ষণের জন্য বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং দেশে বা বিদেশে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি উদ্যোগে গৃহকর্মী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান চালুর উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে হবে। অসুস্থ গৃহকর্মীকে কাজ থেকে বিরত রাখতে হবে এবং নিয়োগকারী নিজ ব্যয়ে তার যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। গৃহকর্মীকে স্বীয় ধর্ম পালনের সুযোগ করে দিতে হবে। কর্মরত অবস্থায় কোনো গৃহকর্মী দুর্ঘটনার শিকার হলে যথাযথ চিকিৎসাসহ দুর্ঘটনা ও ক্ষতির ধরন অনুযায়ী নিয়োগকারী ক্ষতিপূরণ প্রদান করবেন। কোনোক্রমেই গৃহকর্মীর প্রতি কোনো প্রকার অশালীন আচরণ অথবা দৈহিক আঘাত অথবা মানসিক নির্যাতন করা যাবে না। নিয়োগকারী, তার পরিবারের সদস্য বা আগত অতিথিদের দ্বারা কোনো গৃহকর্মী কোনো প্রকার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন যেমন- অশ্লীল আচরণ, যৌন হয়রানি বা যৌন নির্যাতন কিংবা শারীরিক আঘাত অথবা ভীতি প্রদর্শনের শিকার হলে দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গৃহকর্মী তার কর্মরত পরিবারের সদস্য বিশেষ করে শিশু, অসুস্থ ও বৃদ্ধ বা অন্য কোনো সদস্যের প্রতি কোনোরূপ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বা পীড়াদায়ক আচরণ করতে পারবে না। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে নিয়োগকারী তার নিয়োগ বাতিল করতে পারবে এবং তার বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। আরাফাত রহমান : কলাম লেখক