পাঠক মত

শুধু সাটিির্ফকেট অজের্নর জন্য শিক্ষা নয়

প্রকাশ | ২১ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আমরা ছোটবেলায় যখন স্কুলে যেতাম, তখন বইকে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে স্কুলে যেতাম। স্কুল ছুটি শেষে আবার বইকে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে বাড়ি ফিরেছি। পথে বৃষ্টি এলে গায়ের জামা খুলে বই পেঁচিয়ে যেন বৃষ্টির পানি বইয়ে না লাগে, হয় কোথাও আশ্রয় নিয়েছি, না হয় দৌড়ে বাড়ি ফিরেছি। আর আজকের সমাজে? আজকের সমাজে ছেলেমেয়েরা বইকে পায়ের সঙ্গে ধাক্কিয়ে ধাক্কিয়ে স্কুল বা কলেজে নিয়ে যাচ্ছে। পথে বৃষ্টি এলে বইকে ছাতা হিসেবে ব্যবহার করছে। ইদানীং রাস্তাঘাটে বা যানবাহনে উঠলে চোখে পড়ে, বইকে একটা ব্যাগে ঝুলিয়ে বাসা থেকে বের হয়। ব্যাগের ফিতা বা বেল্ট এতো লম্বা থাকে যে, ওই ব্যাগটা গিয়ে পায়ের সঙ্গে আঘাত করে। যখন একটা লোক গাড়ির পেছন থেকে নামার জন্য সামনে আসে তখন স্বাভাবিকভাবেই পা একটু উপরে ওঠাতে হয়। সেক্ষেত্রে দেখা যায় পা গিয়ে ওই ব্যাগের সঙ্গে বা বইয়ের সঙ্গে লাগছে। এক সময় আমরা দেখতাম আমাদের মুরব্বিদের কখনো অসতকর্তাবশত কোনো লেখাওয়ালা কাগজ বা বইয়ে পা লাগলে সঙ্গে সঙ্গে সালাম করতো। আমরাও তাই করেছি। এখন কিন্তু আর তা দেখা যায় না। কারণ, এখন প্রতিনিয়ত আমরা বইকে পায়ের সঙ্গে ধাক্কিয়ে স্কুল-কলেজে নিয়ে যাই। তাই আমাদের বইয়ের প্রতি কদর দিন দিন কমে যাচ্ছে। সাটিির্ফকেট সংগ্রহের নেশা বইয়ের প্রতি অনীহা ও জ্ঞানের প্রতি অনীহার কারণ। বইয়ের প্রতি যেহেতু কদর কমে যাচ্ছে, তাই বতর্মান ছেলেমেয়েরা প্রকৃত শিক্ষা থেকে অমনোযোগী হয়ে পড়েছে। বতর্মান সমাজের ছেলেমেয়েরা সাটিির্ফকেট অজের্নর শিক্ষার প্রতি যতোটুকু মনোযোগী, প্রকৃত শিক্ষার গ্রহণের প্রতি ততোটুকু মনোযোগী নয়। কারণ তারা জানে অজির্ত ডিগ্রি তাদের যতো তাড়াতাড়ি প্রতিষ্ঠিত করবে, প্রকৃত শিক্ষা তাদের ততো তাড়াতাড়ি প্রতিষ্ঠিত করবে না। কারণ একজন প্রকৃত শিক্ষিত ব্যক্তি কোনো অনৈতিক কাজ করতে গেলে বিবেকে বাধা দেবে, যা একজন সাটিির্ফকেট ডিগ্রিধারীর বিবেকে সে বাধাটি দিচ্ছে না। বতর্মান সমাজের দিকে তাকালে আমরা তাই-ই দেখতে পাই। যে যেই পেশায় আছেন সে সেই পেশায় ডিগ্রি অজর্ন করে টাকা উপাজের্নর পেছনে ছুটছে। ভুলে যাচ্ছে তাদের কতর্ব্য ও মনুষ্যত্ববোধ। ঘুষ, হিংসা, দুনীির্ত মানুষের মনের ভেতরে গেঁথে গেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে এ ধরনের অনৈতিক কমর্কাÐ হচ্ছে। এসব মনোভাবসম্পন্ন সাটিির্ফকেট অজর্নকারী ব্যক্তিদের থেকে জাতি কি আশা করতে পারে। তারা বতর্মানে সাটিির্ফকেট অজের্নর প্রতি বেশি মনোযোগী হয়ে পড়েছেন। আর এ কারণেই নকলের প্রবণতা বেড়ে গেছে। নকল করে সাটিির্ফকেট অজর্নকারী শিক্ষা, দেশ ও জাতির কোনো সুফল বয়ে আনবে বলে মনে হয় না। জসিম মজুমদার পুরানা পল্টন, ঢাকা