বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভরা মৌসুমে চালের দাম বৃদ্ধি

কার্যকর পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ১৮ মে ২০২২, ০০:০০

বোরো মৌসুমের চাল বাজারে আসা শুরু করতেই দেশের প্রধান এই খাদ্যশস্যের দাম বাড়ল। ঢাকা, কুষ্টিয়া ও নওগাঁর পাইকারি বাজারে চালের দাম ধরনভেদে কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। সেখানে দাম বেড়েছে কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা। যদিও খুচরা বাজারের চাল ব্যবসায়ীদের আগের কেনা। বাড়তি দামের চাল খুচরায় পৌঁছায়নি। সাধারণত বোরো মৌসুম শুরু হলে চালের দাম অনেকটাই কমে যায়। স্বস্তি পায় মানুষ। এ মৌসুমে দাম কমে যাওয়ার কারণ, বোরোতে দেশের মোট চালের প্রায় ৫৫ শতাংশ উৎপাদিত হয়। বিপুল সরবরাহ দাম কমিয়ে দেয়। এবার দেখা যাচ্ছে বিপরীত চিত্র।

কেবল কি চাল! হঠাৎ করেই রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দামও বেড়ে গেছে। গত ৫ মে ভারত থেকে আমদানি বন্ধের ছুতায় পেঁয়াজের দামে ফের পাগলা ঘোড়ামতো অবস্থা। এই দাম কোথায় গিয়ে থামবে, সেটার আগাম বার্তা না থাকায় পেঁয়াজ কিনতে বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন একশ্রেণির ক্রেতা। রাজধানীর বাজারে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। কারওয়ান বাজারে ক'দিন আগেও খুচরায় দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। সেই একই মানের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা চাইছেন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। তবে কারওয়ান বাজারের বাইরের এলাকায় এর দাম আরও বেশি। রাজধানীর অন্যান্য এলাকায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ ঈদের আগেও একই পেঁয়াজ কেনা যেত ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি। আর ভোজ্য তেলের কথা তো বলাই বাহুল্য।

মূলত ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়িয়ে বাজার অস্থির করে। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা কোনো ধরনের জবাবদিহির মধ্যে নেই। যে কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করছে। এ ছাড়া বাজার তদারকি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় থাকা জরুরি। হঠাৎ করে সব ধরনের পণ্যের দাম অধিকমাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছে দেশের সাধারণ মানুষ। যেমন বিপাকে পড়েছে ভোজ্যতেল নিয়ে।

আসলে পণ্যের সরবরাহ বা সংকটের সঙ্গে দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা হচ্ছে অসৎ ব্যবসায়ীদের হীনমানসিকতা। অতীতেও আমরা লক্ষ্য করেছি, তারা একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের পকেট কেটেছে এবং দু'বছর আগেও পেঁয়াজের কেজি হয়েছিল ২৫০ টাকা। একইভাবে তারা চিনির দামও বাড়িয়েছিল। আর চালের দাম তো নানা অজুহাতে কয়েক দফা বাড়ল। এটা তাদের ব্যবসায়িক অসুস্থ সংস্কৃতি। এটা হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেয় না। এরা বাজার সন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হবে এটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। ফলে তাদের কাছে দেশের অসহায় জনগণ জিম্মি হয়ে পড়ে। ক্ষেত্র বিশেষ সরকারও তাদের কাছে জিম্মি। বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন চালসহ নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে